ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশ এখন নিজেদের রাজা মনে করছে ॥ ফখরুল

প্রকাশিত: ০৬:৪৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

পুলিশ এখন নিজেদের রাজা মনে করছে ॥ ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সরকারের প্রশ্রয়ে পুলিশ এখন বেশি বাড়াবাড়ি করছে এবং নিজেদের দেশের রাজা মনে করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, এক ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা ও বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তার ওপর পুলিশী নির্যাতনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এক পুলিশ কর্মকর্তা দম্ভোক্তি করে বলেছেন যে, ‘মাছের রাজা হচ্ছে ইলিশ আর দেশের রাজা হচ্ছে পুলিশ।’ তাদের এ ধরনের কথা থেকে বোঝা যায় দেশ আজ পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শনিবার দুপুরে রাজধানীর ফটোজার্নালিস্ট এ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে যুব জাগপা আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। ফখরুল বলেন, বিরোধী মত দমনে পুলিশকে ব্যবহার করা হচ্ছে। আজ এই রাষ্ট্রটা সম্পূর্ণভাবে একটা সিকিউরিটি স্টেটে পরিণত হয়েছে। এখানে রাজনীতিবিদ বলেন, সাধারণ মানুষ বলেন, বুদ্ধিজীবী বলেন, কৃষক-শ্রমিক মেহনতী মানুষ বলেন, কারও কোন অধিকার নেই। এখানে অধিকার একমাত্র যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের। এ অবস্থা উত্তরণে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। নইলে দেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়বে। তিনি বলেন, যেখানে মানুষের বাকস্বাধীনতা নেই, কথা বলবার স্বাধীনতা নেই এবং গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় সেখানে মিথ্যার ওপরে সব কিছু প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেখানে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয় সেই দেশকে আর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলা যেতে পারে না। ফখরুল বলেন, সরকার জঙ্গীবাদ বিরোধী পদক্ষেপ, উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। পঁচাত্তর সালে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে বাকশাল কায়েম করেছিল। এখন আবার তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করে গণতন্ত্রের আবহে একনায়কতন্ত্র কায়েমের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, দাম্ভিকতা, অহঙ্কার আর চিরদিন ক্ষমতায় থাকার আশা পরিহার করুন। এভাবে কখনও কোন শাসকের ক্ষমতা চিরস্থায়ী হয়নি। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করুন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন না দিলে দেশের চলমান সঙ্কট থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও রক্ষা পাবে না। এমন একটা নির্বাচন দিন, যার মধ্য দিয়ে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে। সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, একদিন যখন জনগণ জেগে উঠবে, সেই স্বতঃস্ফূর্ত জাগরণকে ঠেকাবার কোন রাস্তা থাকবে না। ফখরুল বলেন, ৫ জানুয়ারির ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে অপমান করা হয়েছে। কারণ ওই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। তাই হারানো গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং আন্দোলরে মধ্য দিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। বর্তমানে দেশের অর্থনীতি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এমন একটা খাত নেই যে খাতে লুণ্ঠন চলছে না। সরকারী লোকেরা লুণ্ঠনের মধ্য দিয়ে দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করছে। দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতিতে মানুষের জীবন আজ দুঃসহ। তিনি বলেন, আজকে একদিকে জঙ্গীবাদের কথা বলা হচ্ছে, আরেক দিকে মুক্তিযুদ্ধের কথা এবং অপরদিকে উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে। সব কিছুর মূলেই হচ্ছে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করা। আর তাদের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করা। তেলের দাম বাড়ছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও বাড়ছে। আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ফাইজুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জাগপার সহ-সভাপতি মঈদুনদ্দিন বাবলু, যুগ্ম সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল উদ্দিন প্রমুখ। ঢাকা মহানগর বিএনপির সভা অনুষ্ঠিত ॥ ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার বিকেলে নয়াপল্টন ভাসানী ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা মহানগর বিএনপির উপদেষ্টা কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সভায় আসছে ১৯ জানুয়ারি জিয়াউর রহমানের জন্মদিন পালনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
×