ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চাষীদের মুখে হাসি

কক্সবাজারে রেকর্ড দামে লবণ বিক্রি

প্রকাশিত: ০৬:৪৬, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

কক্সবাজারে রেকর্ড দামে লবণ বিক্রি

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ কক্সবাজার জেলার ছয় উপজেলা ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় পুরোদমে চলতি মৌসুমে উৎপাদিত লবণ রেকর্ড দামে বিক্রি হচ্ছে মাঠে। চাষীদের সুবিধার্থে বিদেশ থেকে লবণ আমদানি না করার সরকারের সিদ্ধান্তে স্থানীয় উৎপাদিত লবণের মূল্য বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন মাঠে চাষীরা ৪১০ টাকায় বিক্রি করেছে প্রতিমণ লবণ। বিভিন্ন মোকামে নতুন উৎপাদিত লবণ মজুদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। চলতি মৌসুমে ৬৫ হাজার একর জমিতে ১৯ লাখ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে লবণ চাষাবাদ শুরু করেন চাষীরা। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) ও স্থানীয় চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে কক্সবাজার সদর, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, টেকনাফ ও চট্টগ্রামের বাঁশখালী (আংশিক) উপজেলার ১৩টি কেন্দ্রের অধীনে প্রায় ৬৫ হাজার একর জমিতে চলতি বছরের নবেম্বর মাস থেকে লবণ চাষ শুরু হয়েছে। বিসিক এবার ১৯ লাখ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলেও প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকার কারণে লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে ২২ লাখ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় চাষী ও ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, অন্যবছরের তুলনায় এবার লবণ উৎপাদন প্রায় এক মাস আগে থেকে শুরু করতে পারায় লক্ষ্যমাত্রার অধিক লবণ উৎপাদন হবে। কুতুবদিয়া উপজেলার লেমশীখালী, কৈয়ারিবিল, উত্তর ধুরুং ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি লবণ উৎপাদন হয়ে থাকে। মূল্য বাড়ায় দ্বীপ উপজেলা কুতুবদিয়ায় রেকর্ড করেছে বলে মনে করছেন চাষীরা। লেমশীখালীর লবণ চাষী ছৈয়দ আলম বলেন, বর্তমানে মাঠে লবণের দাম ব্যবসায়ীরা মণপ্রতি ৪শ’ টাকায় হিসেব করলেও পরিবহন খরচ, পানি ইত্যাদিসহ ৩০ টাকা দালালি নিচ্ছে বলে জানান। ইউনিয়নের লবণ ব্যবসায়ী মুহাম্মদ হোছাইন বলেন, লবণের চাহিদার তুলনায় মাঠে লবণ কম উঠছে। যে কারণে দাম বেড়েছে। এছাড়া আগের তুলনায় এখন দালালি খরচ বেশি নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, পরিবহন শ্রমিকরা মজুরি বাড়িয়ে দেয়ায় খরচ ১০ টাকা বেড়েছে। তবে ঘনকুয়াশায় পুরোদমে মাঠে লবণ উৎপাদন একটু ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান তিনি। এদিকে চলতি মৌসুমে লবণ উৎপাদনের শুরুতে রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক একটি অসাধু ব্যবসায়ী চক্র বিদেশ থেকে এক লাখ মেট্রিক টন লবণ আমদানি করতে নানাভাবে তোড়জোড় শুরু করে। কিন্তু স্থানীয় প্রান্তিক চাষীদের সুবিধার্থে সরকার শেষতক বিদেশ থেকে লবণ আমদানি না করার সিদ্ধান্ত নেয়। লবণচাষী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও চকরিয়া উপজেলার বৃহত্তম লবণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান দরবেশকাটা এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, গত বছরের নানা প্রতিকূলতা ও আর্থিক ক্ষতিসাধন অতিক্রম করে চলতি মৌসুমে চাষীরা নবেম্বর মাস থেকে লবণ উৎপাদনে মাঠে নেমেছে।
×