ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্যাংকের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কমিশন গঠনের পরামর্শ

প্রকাশিত: ০৬:৪৫, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

ব্যাংকের কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য কমিশন গঠনের পরামর্শ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা রক্ষায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ বেসরকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম মনিটরিংয়ের জন্য শক্তিশালী কমিশন গঠনের মত দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। এ ছাড়া ব্যাংকিং খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখারও পরামর্শ তাদের। শনিবার সকালে রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টারে ‘ব্যাংকিং সেক্টর অব বাংলাদেশ : রিফর্ম এ্যান্ড গভর্নেন্স’ শীর্ষক এ সেমিনারের আয়োজন করে অলাভজনক পরামর্শক ও গবেষণা সংস্থা ঢাকা ফোরাম। বক্তারা বলেন, প্রতিযোগিতা সক্ষমতার ক্ষেত্রে বেসরকারী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পেশাদারিত্বের অভাব রয়েছে। এ জন্য ব্যাংকিং খাত শক্তিশালী করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক দৃঢ়তা। তবে নতুন কমিশন নয়, বরং বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান আইনের মাধ্যমেই শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থা সম্ভব। ফোরামের সভাপতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গবর্নর ডক্টর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক প্রভাব ও চাপ থেকে মুক্ত না হলে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সংস্কার কোন সুফল বয়ে আনবে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে সুশাসন ও জবাবদিহিতা আরও বাড়াতে হবে। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দৃঢ়তা দরকার। রাজনীতিবিদদের মনে রাখতে হবে, ব্যাংকের মতো একটি প্রযুক্তিনির্ভর খাতকে সব সময় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখা উচিত। দলীয় বিবেচনায় ব্যাংকে নিয়োগ দেয়া সমর্থন করে সালেহ উদ্দিন বলেন, কিন্তু তাকে বলে দিতে হবে, খবরদার তুমি তোমার রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে ব্যাংকিং সেক্টরে কথাবার্তা বলবে না। ব্যাংকিং খাতের পরিবর্তন যদি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত না হয়, তাহলে সেখান থেকে সুফল আসবে না। ২০০৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব দিয়ে আসা এই অর্থনীতিবিদ নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে বলেন, গবর্নরকে শুধু যে রাজনৈতিক চাপে থাকতে হয় তাই নয়, লবিস্টরাও অনেক চাপে রাখেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে একটি শক্ত অবস্থান নিতে হবে। চাপমুক্ত হয়ে কাজ না করতে পারলে বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতের সমস্যাগুলো সমাধান করা যাবে না। আলোচনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চলমান ‘আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কর্মসূচীর’ কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাবেক এই গবর্নর। বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যাংকিং কি আসলে হচ্ছে? এসএমই খাতে কি টাকা যাচ্ছে? আমার এক বন্ধু সেদিন আমাকে বলল, ১০ লাখ টাকার জন্য সে ছয় মাস ধরে ঘুরছে।’ এক গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, এসএমইর টাকা যাচ্ছে বড় বড় ব্যবসায়ীর কাছে, গরিবরা পাচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে দেশে উদ্যোক্তা তৈরিতে ব্যাংকগুলোর ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। সেমিনারে অন্যদের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জা এবি আজিজুল ইসলাম ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (বিইআই) প্রেসিডেন্ট ফারুক সোবহান উপস্থিত ছিলেন।
×