ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

১২৬ জিম্মি উদ্ধার ॥ তিন হামলাকারী নিহত

বুরকিনা ফাসোতে জঙ্গী হামলায় ১৮ দেশের ২৩ নাগরিক নিহত

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

বুরকিনা ফাসোতে জঙ্গী হামলায় ১৮ দেশের ২৩ নাগরিক নিহত

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোর রাজধানী ওয়াগাদুগুর একটি হোটেলে শুক্রবার বন্দুকধারীদের চালানো হামলায় কমপক্ষে ১৮ দেশের ২৩ জন নিহত হয়েছে। হোটেলের ভেতর হামলাকারীদের হাতে জিম্মি ১২৬ জনকে শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জন আহত এবং তিন হামলাকারীও নিহত হয়েছে। খবর এএফপি ও বিবিসির। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও পশ্চিমা বিশ্বের নাগরিকদের কাছে জনপ্রিয় চারতলা স্পেøন্ডিড হোটেলের বাইরে বন্দুকধারীরা প্রথমে দুটি গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তিন-চারজন হামলাকারী হোটেলের ভেতরে ঢুকে গুলি চালায় ও হোটেল অতিথিদের জিম্মি করে। হোটেলের উল্টো দিকে অবস্থিত একটি রেস্তরাঁ ক্যাপাচিনোতেও হামলা চালানো হয়। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিমন কমপাওরে বলেছেন, স্পেøন্ডিড হোটেল ও ক্যাপাচিনোতে অভিযান শেষ হয়েছে। আহত ৩৩ জনসহ মোট ১২৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত তিন হামলাকারীর মধ্যে একজন আরব ও দুইজন কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান। দেশটির যোগাযোগমন্ত্রী রেমি দান্দিজনো বলেন, হোটেলের ভেতরে কয়েকজন মারা গেছে। তবে তারা ঠিক কতজন, তা জানা যায়নি। ফ্রান্সের বিশেষ বাহিনীর সঙ্গে বুরকিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার অভিযান চালায়। যৃক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পর্যবেক্ষক দল সাইট জানিয়েছে, সন্ত্রাসী সংগঠন আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেব (একিউআইএম) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ব্যাপারে কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সাইট জানায়, একিউআইএম আরবি ভাষায় বলেছে, আল-কায়েদা ইন ইসলামিক মাগরেবের মুজাহিদিন ভাইরা বুরকিনা ফাসোর রাজধানীর অন্যতম বড় একটি হোটেলে প্রবেশ করেছে এবং তারা সেখানে অবস্থান নিয়েছে এবং ধর্মের শত্রুদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় সময় শুক্রবার সন্ধ্যায় এ হামলা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, কয়েকজন মুখোশ পরা বন্দুকধারী স্পেøন্ডিড হোটেলে আচমকা হামলা চালায়। এর আগে হামলাকারীরা হোটেলের বাইরে গাড়িবোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। হোটেলের একটি অংশে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ওয়াগাদুগুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অদূরে অবস্থিত হোটেলটির কাছের রাস্তার প্রায় ১০টি গাড়িতে আগুন ধরে গেছে। নগরীর প্রধান হাসপাতালের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে, এ হামলায় অন্তত ২০ জন নিহত ও ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে একজন ইউরোপীয় নারী আছেন। যিনি জানিয়েছেন, হামলাকারীরা শ্বেতাঙ্গদের ‘টার্গেট’ করছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হামলাকারীরা হোটেলের ১৪৭ নম্বর কক্ষটি দখল করে রাখে। যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ফরাসি কর্তৃপক্ষের সাহায্যের আবেদনে তারা তাৎক্ষণিকভাবে ‘গোয়েন্দা নজরদারি ও পরিদর্শন’ কাজ শুরু করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ৭৫ সদস্য বুরকিনা ফাসোতে নিয়োজিত। বুরকিনা ফাসোতে নিয়োজিত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জিল চিবোঁ বলেন, স্থানীয় সময় শনিবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত সেখানে কারফিউ জারি করা হয়। গত নবেম্বর মাসে মালির রাজধানী বামাকোতে যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন এক অভিজাত হোটেল রেডিসন ব্লুতে বিদেশীসহ ১৭০ জনকে জিম্মি করে বন্দুকধারীরা। নয় ঘণ্টা পর এ জিম্মিদশার অবসান ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত ২৭ জন নিহত হয়। এ হামলার দায়িত্ব স্বীকার করে একিউআইএম।
×