ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

এখনও ওরা বাঁশ-বেতের নিপুণ কারিগর

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১৬ জানুয়ারি ২০১৬

এখনও ওরা  বাঁশ-বেতের নিপুণ কারিগর

এ যেন এক শিল্প পল্লী। কেউ বাঁশ কাটছে। কেউ বেত তুলছে। কেউ বানাচ্ছে কুলা, ডালা, ঢাকি, ডোল, ধারি, চাটি, চোকরা, পাল্লা, কাডা, খুচি, চালনি, ঠুয়া, মোড়া, পলো, পাখাসহ বাঁশ-বেতের নানা সামগ্রী। ছেলেমেয়ে, নারী-পুরুষ প্রত্যেকে ব্যস্ত কাজ নিয়ে। এদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় অসাধারণ হয়ে ফুটে উঠছে একেকটি শিল্পকর্ম। নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার কাশতলা গ্রামের চিত্র এটি। ওই গ্রামের হদিপাড়ায় গেলে দিনের যে কোন সময় মিলবে এ দৃশ্য। বাঁশ-বেতের কাজ করেই বংশ পরম্পরায় জীবিকা নির্বাহ করে এরা। ‘হদি’ বিপন্ন প্রায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নাম। সংখ্যায় নিতান্ত কম। বারহাট্টার কাশতলা, সাধুহাটি, ডেমুরা ও রামভদ্রপুর গ্রামে ৭০টি পরিবার আছে হদি সম্প্রদায়ের। জনসংখ্যা পাঁচ শ’। শিশুরা ছাড়া এদের প্রত্যেকে বাঁশ-বেতের কাজ করে সংসার চালায়। এ কাজে তারা পারদর্শীও। বারহাট্টা ছাড়াও নেত্রকোনা জেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ হয় তাদের পণ্য। কাশতলা গ্রামের বাসন্তী ক্ষত্রিয় ও হেনা ক্ষত্রিয় জানান, ২শ’ টাকার এক বাঁশ দিয়ে তারা তিন দিনে ১০/১২টি ঢাকি (পাইলা) বানাতে পারেন- যা বিক্রি হয় চারশ’ টাকায়। এ টাকায় সংসার চলে না। আগের মতো লাভ না হওয়ায় অনেকে পেশা ছেড়ে দিচ্ছে। বাঁশ-বেতের তৈরি কুটির শিল্পের চাহিদা দিন দিনই কমছে। প্লাস্টিক পণ্য দখল করছে বাজার। বেত এখন পাওয়াই যায় না। দু®প্রাপ্য হয়ে যাচ্ছে বাঁশ। ফলে বাড়ছে উৎপাদন খরচ। অন্যদিকে প্রায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে পুঁজি সঙ্কট। এরপরও সহজ শর্তে ঋণ সুবিধা পেলে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তারাÑ এমনটাই জানিয়েছে নিভৃত পল্লীর এই কুটির শিল্পীরা। -সঞ্জয় সরকার, নেত্রকোনা থেকে
×