ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

দুই দেশের সরকারের সব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই॥ হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

দুই দেশের সরকারের সব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই॥ হর্ষবর্ধন শ্রিংলা

কূটনৈতিক রিপোর্টার ॥ ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের নতুন হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেছেন, ভারতের জন্য বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ দেশ। দুই দেশের সরকারের নেয়া সব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই। বৃহস্পতিবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ব্যাঙ্কক থেকে ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। বিমানবন্দরে নেমে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ভারতীয় হাইকমিশনার। বিমানবন্দরে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বাংলায় বলেন, ভারতের হাইকমিশনার হিসেবে বাংলাদেশে আসতে পেরে আজ আমি খুবই খুশি। দুই প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়াই আমার গুরুদায়িত্ব। এই সুন্দর ও সোনার বাংলাদেশে আমার খুব সুন্দর সময় কাটবে বলে আশা করি। পরে অবশ্য ইংরেজীতেই বক্তব্য দেন তিনি। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, ভারতের জন্য বাংলাদেশ গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আমি দুই দেশের নেতাদের নেয়া গুরুত্বপূর্ণ সকল সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নে কাজ করতে চাই। দিল্লীর হেডকোয়ার্টারে দায়িত্ব পালনকালে বেশ কয়েকবার এদেশে আসার সুযোগ হয়েছে উল্লেখ করে হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বলেন, তবে এবার ভিন্ন অভিজ্ঞতা। এখানে হাইকমিশনারের দায়িত্ব পেয়ে আমি ভীষণ আনন্দিত। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও বেগবান ও বিস্তৃত করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন নতুন ভারতীয় হাইকমিশনার। বিমানবন্দরে পৌঁছালে নতুন হাইকমিশনার শ্রিংলাকে ফুলের তোড়া দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা। এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনের উপ হাইকমিশনার ড. আদর্শ সোয়াইকা, প্রথম সচিব (রাজনৈতিক) রাজেশ উইকি, প্রথম সচিব (তথ্য ও সংস্কৃতি) সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, প্রথম সচিব (শিক্ষা) জিষ্ণু প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, দ্বিতীয় সচিব (রাজনৈতিক ও ভিসা) মনুস্মৃতি, দূতাবাসের তথ্য ও সংস্কৃতি এ্যাটাশে রঞ্জন ম-লসহ অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। ভারতীয় হাইকমিশনের কর্মকর্তারা ছাড়াও তাকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যান ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এরপর স্ত্রী ও একমাত্র পুত্রকে নিয়ে বিমানবন্দর ছেড়ে ভারতীয় হাইকমিশনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। গত দুই বছর থাইল্যান্ডে ভারতীয় দূতাবাসের দায়িত্বে ছিলেন হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। ঢাকায় তিনি পঙ্কজ শরণের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন। কূটনীতিক হিসেবে ত্রিশ বছরের ক্যারিয়ারে বিভিন্ন দূতাবাসে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন শ্রিংলা। ভারতের ফরেন সার্ভিসের উদীয়মান তারকা শ্রিংলা পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিংয়ের সন্তান। ঢাকায় আসার আগে থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাসে এক অনুষ্ঠানে তিনি ঢাকা-দিল্লী সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারের কথা বলেন। শ্রিংলা জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর, ভিয়েতনাম ও দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবানে ভারতের কনসাল জেনারেল ছিলেন। ব্যাঙ্ককে যাওয়ার আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্মসচিব হিসেবে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও মালদ্বীপের বিষয়গুলোর দেখভাল করেছেন তিনি। দিল্লীর সেন্ট স্টিফেনস কলেজের স্নাতক শ্রিংলা যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে বহুপক্ষীয় কূটনীতি ও সংঘাত প্রতিরোধ নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যোগ দেয়ার আগে ভারতের কর্পোরেট ও সেবা খাতেও তিনি কাজ করেছেন। ভারতীয় বিভিন্ন ভাষা ও ইংরেজীর পাশাপাশি ফরাসী, ভিয়েতনামী ও নেপালী ভাষাও তিনি বলতে পারেন। হর্ষবর্ধন শ্রিংলা ১৯৮৪ সালে ভারতের পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগ দেন। কূটনৈতিক জীবনে ব্যাঙ্কক, তেল আবিব, হ্যানয়, প্যারিসে ভারতীয় মিশন এবং নয়াদিল্লীতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পঙ্কজ শরণ রাশিয়ায় দেশটির রাষ্ট্রদূত হিসেবে ইতোমধ্যেই যোগ দিয়েছেন। এরপর থেকে ঢাকায় ভারতীয় উপহাইকমিশনার ড. আদর্শ সোয়াইকা ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন সূত্র জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই শ্রিংলা রাষ্ট্রপতির কাছে তার পরিচয়পত্র পেশ করবেন। এরপর তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন।
×