ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেএমবি জঙ্গীরাই বানাচ্ছে ॥ শক্তিশালী হ্যান্ডগ্রেনেড

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

জেএমবি জঙ্গীরাই বানাচ্ছে ॥ শক্তিশালী হ্যান্ডগ্রেনেড

গাফফার খান চৌধুরী ॥ পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক দিয়ে তৈরি হচ্ছে হ্যান্ডগ্রেনেড। এসব হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরি করছে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন জেএমবি। প্রস্তুতকারকরা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। আন্তর্জাতিক জঙ্গী সংগঠন ছাড়াও পাকিস্তানের কতিপয় সংস্থা এবং অস্ত্র গোলাবারুদ চোরাকারবারীদের মাধ্যমে হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরির উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক সংগ্রহ করছে জেএমবি। এছাড়া ম্যাচ ফ্যাক্টরি ও অসাধু বিস্ফোরক ব্যবসায়ী এবং রাসায়নিক পদার্থের কারবারীদের কাছ থেকে জেএমবি বিস্ফোরক তৈরির উপাদান সংগ্রহ করে থাকে। দেশী ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের মাধ্যমে জেএমবি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক যোগাড় করে কিনা সে বিষয়ে নতুন করে অনুসন্ধান চলছে। উচ্চমাত্রার বিস্ফোরকসহ গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ, বিস্ফোরক অধিদফতর ও গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত বছরের ২৩ ডিসেম্বর মিরপুর থেকে ১৬ হ্যান্ডগ্রেনেড ও প্রায় ২শ’ হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরির সরঞ্জাম ও বিস্ফোরকসহ ৫ জেএমবি জঙ্গী গ্রেফতার হয়। বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকের আলামত পাঠানো হয় বিস্ফোরক অধিদফতরে। এসব বিস্ফোরক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে জব্দ বিস্ফোরক কি ধরনের সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞ অভিমত দিয়ে থাকে বিস্ফোরক অধিদফতর। অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এক সময় দেশে নামে বেনামে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক আমদানি হতো। ১৯৮২ সালের পরে সে প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরপরও সারাদেশে অন্তত ৫৯ কোম্পানি বৈধভাবে বিস্ফোরক আমদানি করছিল। এর অধিকাংশ কোম্পানিই কোন প্রকার নিয়ম নীতি না মেনেই বিস্ফোরক বিক্রি করত। যার প্রভাব লক্ষ্য করা যায় নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী গণআন্দোলনে। আন্দোলনে অনেক বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাতে নাশকতার উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত বোমায় টিএসপি সার কারখানা এবং ম্যাচ ফ্যাক্টরির জন্য আমদানিকৃত রাসায়নিক পদার্থ বিস্ফোরক হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার বিষয়টি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই বিস্ফোরকদ্রব্য আমদানি, বিক্রি ও ব্যবহারের উপর আরও কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। বিস্ফোরক অধিদফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনকণ্ঠকে বলেছেন, টিএসপি সার কারখানা এবং ম্যাচ ফ্যাক্টরি থেকে সংগৃহীত বিস্ফোরক তৈরির উপাদান দিয়ে হামবোমা ও ককটেল বানানো সম্ভব। ধারণা করা হয়, এ ধরনের কারখানা থেকে এবং খোলা বাজারে পাওয়া বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি হাতবোমা ও ককটেল বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী অবরোধ হরতালে ব্যবহৃত হয়েছে। রাজধানীর বনানী, হাজারীবাগ ও লালবাগসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় যুবদল ও শিবিরের এ ধরনের বেশ কয়েকটি বোমা তৈরির কারখানা আবিষ্কৃৃত হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে। তবে ম্যাচ ফ্যাক্টরি ও সার কারখানা থেকে সংগৃহীত বিস্ফোরক বা রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে মারাত্মক শক্তিশালী বোমা বা গ্রেনেড বানানো অনেকটাই অসম্ভব। বিস্ফোরকের যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে ব্যক্তির নামে থাকা বিস্ফোরক আমদানির লাইসেন্স বাতিল করা হয়। কোম্পানি পরিদর্শন শেষে লাইসেন্স প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়। বেশিরভাগ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের এবং ব্যক্তির নামে বিস্ফোরক লাইসেন্স বাতিল হয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা বলছেন, ১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে আবার বিস্ফোরকের যত্রতত্র ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। এরপর নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে ধরা পড়ে বেশ কয়েকটি কোম্পানি বিস্ফোরক আমদানি করে তা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ বা নাশকতার সঙ্গে জড়িতদের কাছে বিক্রি করছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বিস্ফোরক আমদানি ও বিক্রির ওপর মারাত্মক কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। যেসব কোম্পানি নামে বেনামে বিস্ফোরক আমদানি ও বিক্রি করে আসছিল তদন্ত শেষে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়। কিন্তু এ ধারা বেশি দিন বহাল থাকেনি। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট আমলে আবারও যত্রতত্র বিস্ফোরক আমদানি ও বিক্রি শুরু হয়। ওই সময় দেশে ভয়াবহ উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ব্যবহারের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় যশোরে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সমাবেশে বোমা হামলায়। এছাড়া ২০০৪ সালে রমনা বটমূলে, ২০০৫ সালে একুশে আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা, হবিগঞ্জে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যায়, ময়মনসিংহে সিনেমা হলে সিরিজ বোমা হামলায় এবং সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনার বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আনোয়ার চৌধুরীর ওপর, গ্রেনেড হামলাসহ প্রায় প্রতিটি হামলায় উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া যায়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সব মিলিয়ে সারাদেশে ছোট-বড় অন্তত ৯৮ মারাত্মক বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। যার মধ্যে অন্তত ৭৫টিতেই উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল। ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত আলামত পরীক্ষায় ধরা পড়ে বোমায় ব্যবহৃত বিস্ফোরক খুবই উচ্চমাত্রার ছিল। এ ধরনের বিস্ফোরক পাকিস্তান, আফগানিস্তানের বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থা এবং জঙ্গীগোষ্ঠী ব্যবহার করে থাকে। অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে সাতটি ম্যাচ ফ্যাক্টরি ও দেশের সারকারখানাগুলো স্বল্পমাত্রার বিস্ফোরক এবং কয়েকটি দেশী এবং আন্তর্জাতিক কোম্পানি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক আমদানি করে থাকে। ম্যাচ ফ্যাক্টরিগুলোর মধ্যে রয়েছে আকিজ, বায়েজীদ, আবুল খায়ের, ভরসা, নুরুজ্জামান ও বিশ্বাসসহ সাতটি। এরমধ্যে আকিজ, বায়েজীদ, আবুল খায়ের ও ভরসা সচল রয়েছে। অন্য তিনটি অনেকটাই অচল। আর উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক আমদানি করে থাকে দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া মধ্যপাড়া কয়লা খনি, বাপেক্স, শেভরন, হার্ডডগ কোল মাইনিং, গ্রানাইট মাইনিং ইন্টারন্যাশনাল, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিরাশরে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানী লিমিটেড ও অস্ট্রেলিয়ান কোম্পানি তাল্লো (বর্তমানে শেয়ার বিক্রি করে দেয়ায় কার্যক্রম নেই)। অধিদফতর বলছে, প্রতিমাসে এসব কোম্পানির বিস্ফোরক তদারকি করা হয়ে থাকে। কোন কোম্পানি কি পরিমাণ বিস্ফোরক আমদানি করে, কি পরিমাণ ব্যবহার করে আর কি পরিমাণ অব্যবহৃত থাকে তা রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করতে হয়। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজন বেশি দেখিয়ে কোন কোম্পানি চাহিদার চেয়ে বেশি বিস্ফোরক আমদানিক করছে কিনা সে বিষয়টি সূক্ষ্মভাবে মনিটরিং করা হয়। উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক আমদানিকারকদের মধ্যে দু’টি সরকারী প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই বিস্ফোরক বেশি হয়। বিস্ফোরক অতিরিক্ত বা অব্যবহৃত থাকলে তা বিস্ফোরক অধিদফতরকে চিঠি দিয়ে নিষ্ক্রিয় করার জন্য জানানো হয়। বিস্ফোরক অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অতিরিক্ত বিস্ফোরক সিজারলিস্ট করে তা সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করে। সেনাবাহিনী তা নিষ্ক্রিয় করে থাকে। এক সময় সেখানে কোম্পানি তার আশপাশেই নিষ্ক্রিয় করা হতো। কিন্তু ২০০৫ সালে চট্টগ্রামের গহীন পাহাড়ে সেনাবাহিনী বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করতে গেলে মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। যদিও বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এরপর থেকে অব্যবহৃত বিস্ফোরক গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর ক্যান্টনমেন্টে নিষ্ক্রিয় করে সেনাবাহিনী। বিস্ফোরক অধিদফতরের কর্মকর্তাসহ সেনাবাহিনীর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই নিষ্ক্রিয় করা হয়। নিষ্ক্রিয় করার পর এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন তৈরি করে সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হয়। বিস্ফোরক অধিদফতর সূত্র বলছে, এ ধরনের দেশী ও আন্তর্জাতিক কোম্পানির কাছ থেকেও জেএমবির উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক পাওয়ার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায় না। কারণ কোম্পানিতে কর্মরত অনেকেই জেএমবির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বিস্ফোরক সরবরাহ করে থাকতে পারে। টনে টনে বিস্ফোরক আমদানি হয়। আমদানির মধ্যে হাজার হাজার প্যাকেট পাওয়ার জেলও রয়েছে। বিস্ফোরক রক্ষণাবেক্ষণের স্টোরের যিনি দায়িত্বে থাকেন তিনি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে বা আদর্শগত কারণে জেএমবির কাছে ১০/২০ পাওয়ার জেল দিয়ে দিতে পারে। এরপর ভাউচারে তা মিস ফায়ার দেখিয়ে বৈধ করে দিতে পারেন। এছাড়া স্টোরকিপারের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি জেএমবির সদস্য হওয়ায়ও বিচিত্র নয়। এক্ষেত্রে অনায়াসে জেএমবির কাছে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক চলে যেতে পারে। বিস্ফোরক অধিদফতরের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, বাংলাদেশে পাওয়া উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে আসা। এসব বিস্ফোরক দিয়ে হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক দিয়ে হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরির সঙ্গে জড়িত অনেকেই গ্রেফতার হয়েছে। যারা জেএমবির সদস্য। এ ধরনের উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক দিয়ে হ্যান্ডগ্রেনেড বাংলাদেশে একমাত্র জেএমবিই তৈরি করতে পারে। যারা এসব তৈরি করছে হ্যান্ডগ্রেনেডের নির্মাণ কৌশল পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, তারা পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরকের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তিনি আরও জানান, এসব বিস্ফোরক ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত পথে বাংলাদেশের জেএমবির কাছে পৌঁছে। এরসঙ্গে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের জঙ্গী গোষ্ঠী ছাড়াও দেশ দুটিতে জঙ্গী প্রশিক্ষণে থাকা বাংলাদেশী জেএমবি সদস্যরা জড়িত। এছাড়া পুরো প্রক্রিয়াটির সঙ্গে জড়িত ভারতীয় মুজাহিদীনরাও। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানী জঙ্গীরা উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক ভারত-পাকিস্তানের কাশ্মীর সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় মুজাহিদীনদের কাছে পাঠায়। এরা সীমান্তপথে বাংলাদেশের জেএমবির কাছে পাঠিয়ে দেয়। এই কর্মকর্তা বলছেন, পাঠানো অনেকটাই সহজ। কারণ উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক মূলত পাউডারের মতো। এরমধ্যে এক ধরনের বিশেষ জেল মেশানো হয়। জেল মেশানো বিস্ফোরক রুটি বা পরাটা বানানোর আগে যেভাবে মন্ড তৈরি করা হয়, ঠিক সেভাবে মাখানো হয়। এরপর এসব মন্ড বিশেষ পলিথিনে তৈরি ছোট ছোট পাইপের ভেতরে ভরে মুখ আটকে দেয়া হয়। এরপর তা সীমান্তপথে বিভিন্ন বস্তুর মধ্যে পাচার করা হয়ে থাকে। এরসঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গীগোষ্ঠী জড়িত। বাংলাদেশে একমাত্র জেএমবিই এ ধরনের প্রযুক্তিতে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক তৈরি করে থাকে। এ ব্যাপারে বিস্ফোরক অধিদফতরের প্রধান পরিদর্শক সামসুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জনকণ্ঠকে বলেন, গত বছর সারাদেশ থেকে বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার হওয়া হ্যান্ডগ্রেনেড ও বিস্ফোরক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সাতটি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরক খুবই উচ্চমাত্রার বলে পরীক্ষায় ধরা পড়েছে। এ ধরনের বিস্ফোরক বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় সংস্থা ছাড়াও আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠী মধ্যে ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশে একমাত্র জেএমবিরই উচ্চমাত্রার বিম্ফোরক দিয়ে শক্তিশালী হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরি করার প্রমাণ মিলেছে। এসব হ্যান্ডগ্রেনেড তৈরির সঙ্গে জড়িত জেএমবি জঙ্গীদের অধিকাংশই পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের কোন আন্তর্জাতিক জঙ্গীগোষ্ঠী কর্তৃক প্রশিক্ষিত বলে ধারণা করা হচ্ছে। সীমান্তপথ ছাড়াও দেশী বা আন্তর্জাতিক কোন কোম্পানির কাছ থেকেও জেএমবি এ ধরনের উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক সংগ্রহ করে থাকার বিষয়টি উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদিও সে সম্ভাবনা কম। এ জন্য উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কর্মরতদের বিষয়ে নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করা জরুরী। বিস্ফোরক অধিদফতর, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। মিরপুরে জেএমবির কারখানা থেকে উদ্ধারকৃত বিস্ফোরকের উৎস সম্পর্কে ডিবির যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, এসব উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক বিভিন্ন পথে জেএমবির কাছে আসে। সেসব পথ বের করতে অনুসন্ধান অব্যাহত আছে।
×