ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ১৫ জানুয়ারি ২০১৬

নেপালের মুখোমুখি আজ বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভাগ্যটা ঝুলে আছে জটিল সীমারেখার মাঝ বরাবর। সেটা ‘এ’ গ্রুপের চারটি দলেরই। তবে এদের মধ্যে কিছুটা হলেও সুবিধাজনক অবস্থানে আছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক ফুটবল আসর ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় স্বাগতিক দল মুখোমুখি হবে ‘গুর্খালিস’ খ্যাত নেপালের। এই ম্যাচে ‘বেঙ্গল টাইগার’রা জিতলে তো কোন কথাই নেই, চোখ বুঝে চলে যাবে কাক্সিক্ষত শেষ চার- অর্থাৎ সেমিফাইনালে। ড্র করলেও চলবে। আর হারলে পত্রপাঠ বিদায়। এমন জটিল সমীকরণকে সামনে রেখে নেপালের মুখোমুখি হবে মারুফুল হকের শিষ্যরা। আজ দিনের প্রথম ম্যাচে (গ্রুপ ‘এ’) বিকেল ৩টায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মালয়েশিয়া একাদশ মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। দুই ম্যাচেই হেরে টুর্নামেন্ট থেকে আগেই বিদায় নিয়েছে লঙ্কানরা। মালয়েশিয়ার সংগ্রহ দুই ম্যাচে ২ পয়েন্ট, অবস্থান তৃতীয়। আজ শ্রীলঙ্কাকে হারালে তাদের পয়েন্ট হবে ৫। সেক্ষেত্রে শেষ চারে খেলা নিশ্চিত করতে হলে বাংলাদেশ-নেপাল ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে মালয়েশিয়াকে। বাংলাদেশ যদি নেপালকে হারায় তাহলে মালয়েশিয়া উন্নীত হবে শেষ চারে। গ্রুপ ‘এ’র চ্যাম্পিয়ন হয়ে ৭ পয়েন্ট পেয়ে বাংলাদেশও পৌঁছে যাবে সেমিতে। তবে নেপালের কাছে হারলেই বিপদÑ বিদায় নিতে হবে বাংলাদেশকে! ড্র হলে বাংলাদেশ, নেপাল এবং মালয়েশিয়ার পয়েন্ট হবে সমান ৫। সেক্ষেত্রে প্রথমে গোল ব্যবধান যে দল এগিয়ে থাকবে তারাই ওঠবে শেষ চারে। সেক্ষেত্রে সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে বাংলাদেশ। সেই হিসেবে নেপালের সঙ্গে যে কোন স্কোরলাইনে ড্র করলেই শেষ চারে খেলা নিশ্চিত করবে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেমিফাইনালের অপর দলটি নির্ধারিত হবে নেপাল এবং মালয়েশিয়ার মধ্যে যে দল গোল গড়ে এগিয়ে থাকবে। নেপালের বিপক্ষে সর্বশেষ দ্বৈরথে হেসেছে বাংলাদেশই। গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর এই বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামেই একটি প্রস্তুতি ম্যাচে জিতেছিল বাংলাদেশ দল। স্কোরলাইন ছিল ১-০। ভারতে অনুষ্ঠেয় এসএ গেমসের (সাউথ এশিয়ান গেমস) প্রস্তুতি হিসেবেই এই আসরে যুব দল পাঠিয়েছে নেপাল। তাই আপাত দৃষ্টিতে ফেবারিট দল বাংলাদেশই। তবে উভয় দলের সর্বশেষ লড়াইয়ে পারফর্মেন্সের বিচারে এগিয়ে নেপাল। যশোরে মালয়েশিয়ার সঙ্গে প্রথম ম্যাচে ড্র করা নেপাল বুধবার অনুষ্ঠিত ম্যাচে লঙ্কানদের বিপক্ষে জেতে ১-০ গোলে। তবে যশোরের মতো নৈপুণ্য ঢাকায় প্রদর্শন করতে পারেনি জাতীয় দল। এ নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তায় জাতীয় দলের দ্রোণাচার্য মারুফুল, ‘প্রথম ম্যাচের চেয়ে দ্বিতীয় ম্যাচে উন্নতি করেছে নেপাল। ঠিক এখানেই আমরা পিছিয়ে। সেমিতে যেতে হলে কাল জয়ের কোন বিকল্প নেই।’ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ দল অনুশীলনে ঘাম ঝরায় বুয়েট মাঠে। মুখোমুখি মোকাবেলায় এগিয়ে আছে ১৭৯ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশই। ২০ ম্যাচের মধ্যে ১২ বারই জয়ের হাসি হেসেছে বাংলাদেশ। ৬ বার জিতেছে ১৯৬ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী নেপাল। বাকি ২ ম্যাচে কেউ জেতেনি। বাংলাদেশের ২৬ গোলের বিপরীতে ১৪ গোল করেছে নেপাল। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ম্যাচে ৪-২ গোলে হারায় শ্রীলঙ্কাকে। দ্বিতীয় ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে মালয়েশিয়া একাদশের সঙ্গে। কোন ম্যাচ না হারলেও তাদের খেলায় পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে পারেননি ফুটবলপ্রেমীরা। দলে অন্তর্কোন্দল আছে, তিনটি গ্রুপ আছে, ইয়াসিনের সঙ্গে মাঠে জামাল ভুঁইয়ার মারামারিও হয়েছে... এসব কথা চাউর হয়েছে কদিন আগেই ভারতের কেরলে অনুষ্ঠিত সাফ সুজুকি কাপে। সাফে দল প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সাফ সুজুকি কাপ চলাকালীনই ব্যর্থতার দায়ভার স্বীকার করে পদত্যাগ করার ঘোষণা দেন কোচ মারুফুল হক। অধিনায়ক মামুনুল ইসলামও অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘোষণা দেন। দেশে ফিরলে বাফুফের অনুরোধে এ দুজনই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য তাদের দায়িত্ব আবারও চালিয়ে যেতে রাজি হন। মোট কথা দলের আত্মবিশ্বাস এবং অবস্থা দুটোই ছিল নাজুক। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর ম্যাচে বাংলাদেশ দলের ডিফেন্স, মিডফিল্ড অনেক ভুল করেছে। তাদের খেলায় তেমন গতি বা উদ্যম ছিল না। দ্বিতীয় ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে গোলরক্ষক রানার দৃঢ়তায় এবং বদলি ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরীর গোলে কোনমতে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয় আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ শেষ চারে খেলা নিশ্চিত করতে পারে কি না।
×