ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মুক্তিযোদ্ধা মোশারফের জন্ম নিবন্ধন ও আইডি কার্ডে ভুল সংশোধন

আর কত অপেক্ষা

প্রকাশিত: ০৭:১২, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

আর কত অপেক্ষা

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুলের কারণে সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সুযোগ- সুবিধা থেকে বঞ্চিত একাত্তরের রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা মোশারফ হোসেন। তিনি ফেনী জেলার সোনাগাজী থানার চর চান্দিয়া গ্রামের আবদুল হক ও হালিমা খাতুনের পুত্র। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দু’দফায় অস্ত্রোপচারে তার ডান পায়ের দুটি আঙুলসহ আংশিক কেটে ফেলা হয়েছে। ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার ভার বহনে তার পরিবারকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোশারফ হোসেন আক্ষেপের সঙ্গে জানান, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রত্যয়নপত্র রয়েছে আমার। শুধু তাই নয়, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দলিল মুক্তিবার্তায়ও আমার নামটি তালিকাভুক্ত আছে। কিন্তু শুধু জন্ম নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্ম তারিখ ভুল মুদ্রিত হওয়ায় আমি সব ধরনের সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত। মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন সোনাগাজী থানা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের যুদ্ধকালীন কমান্ডার ও সংসদের বর্তমান কমান্ডার থেকে সনদপ্রাপ্ত। মুক্তিবার্তায় সোনাগাজী থানার মুক্তিযোদ্ধাদের নামের যে তালিকা রয়েছে সেখানে তার নামটি আছে ৬৪ নম্বরে। কিন্তু বিপত্তি ঘটেছে পরবর্তী সময়ে জন্ম নিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল মুদ্রিত হওয়ায়। তার প্রকৃত জন্মতারিখ ১৫ অক্টোবর ১৯৫২ কিন্তু ভুলবশত মুদ্রিত হয়েছে ১৫ অক্টোবর ১৯৬২। সামান্য ভুলের কারণে তার বয়স ১০ বছর কমে যায়। এ অবস্থায় তিনি সংশোধনীর জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছেন। ফেনীর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ খায়রুল আমিনের আদালতে ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি এফিডেভিটও করিয়েছেন। ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই মোশারফ হোসেনের সহযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে তার আবেদন সত্যায়নও করেছেন। মুক্তিযোদ্ধা হয়েও সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত মোশারফ হোসেনের দিন যাচ্ছে টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে। একটি সিকিউরিটি কোম্পানির কর্মী হিসেবে স্বল্প বেতনে কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু গত ২৩ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরীর সিটি গেট এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন তিনি। সে থেকে রয়েছেন হাসপাতালে। দু’দফায় তার পায়ে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। সর্বশেষ গত রবিবার তার ডান পায়ের দুটি আঙুল ও তালুসহ কিছু অংশ কেটে ফেলতে হয়। নিদারুণ যন্ত্রণার পাশাপাশি চরম অর্থ সঙ্কটের মধ্যে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। পরিবারের এমন কোন আয় রোজগার কিংবা সম্পদ নেই। যে চাকরিটি করতেন সেটিও আর চালিয়ে নিতে পারছেন না। ব্যয়বহুল এ চিকিৎসার ভার বহন করা তার পক্ষে অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।
×