ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সেমির স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল মামুনুলরা, বাংলাদেশ ১-১ মালয়েশিয়া

মিঠুনের গোলে সমতা

প্রকাশিত: ০৬:৫৬, ১৪ জানুয়ারি ২০১৬

মিঠুনের গোলে সমতা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মিশন ছিল দুটি। প্রতিশোধ নেয়া এবং শেষ চার নিশ্চিত করার। কিন্তু দুটির একটি করা গেছে, আরেকটি যায়নি। পর্যবসিত হতে হয়েছে আংশিক ব্যর্থতায়। বুধবার ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’-এ ‘এ’ গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান শিরোপাধারী মালয়েশিয়া একাদশের সঙ্গে পিছিয়ে পড়েও ১-১ গোলে ড্র করে গত আসরের রানার্সআপধারী এবং স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে খেলা গোলশূন্য ছিল। ম্যাচসেরা বাংলাদেশের গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। ২ খেলায় ১ জয়, ১ ড্রতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে শীর্ষ অবস্থানে আছে বাংলাদেশ। সমান ম্যাচে নেপালেরও ৪ পয়েন্ট। কিন্তু গোলগড়ে এগিয়ে বাংলাদেশই। পক্ষান্তরে ২ ম্যাচের প্রতিটিতেই ড্র করে ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা মালয়েশিয়া আছে কিঞ্চি বেকায়দায় অবস্থায়। বাংলাদেশের তৃতীয় ও শেষ গ্রুপ ম্যাচ আগামী শুক্রবার, নেপালের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে কমপক্ষে ড্র করলেই সেমিফাইনালে যাওয়া নিশ্চিত হবে স্বাগতিক দলের। তবে এখানে গোল ব্যবধানের জটিল কিছু হিসেব-নিকেশ আছে। শেষ চারে যেতে হলে এই ম্যাচে জেতাটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ছিল বাংলাদেশের জন্য। গত আসরে বাংলাদেশ দল মালয়েশিয়ার কাছেই হেরে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল। সেবার গ্রুপ ম্যাচে মালয়েশিয়ার কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ (১-০)। এবার অবশ্য তার ব্যত্যয় হলো। ১৭১ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘হারিমাও মালায়া’ খ্যাত মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে একদিন বেশি সময় পাওয়াতে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার সুযোগ পেয়েছিল ১৭৯ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ‘বেঙ্গল টাইগার্স’ খ্যাত বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। কেননা হঠাৎ সূচী বদল হয় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে। তাই ঢাকা পর্ব শুরু হয় এক দিন পরে। তবু বিশ্রামে ছিলেন না মামুনুলরা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর আরও চনমনে অনুশীলন করেন সবাই। সেমিফাইনালে যাওয়া বলে কথা। কিন্তু বুধবারের ম্যাচে ড্র করে সেমিতে ওঠাটা নিশ্চিত করা গেল না পুরোপুরি! বাবার ওপেন হার্ট সার্জারির কারণে ম্যাচে খেলেননি সোহেল রানা। তার পজিশনে নামা হেমন্ত ভিনসেন্ট বিশ্বাসও দিতে পারেননি কোচের আস্থার প্রতিদান। তবে হেমন্তর বদলি হিসেবে যিনি নামেন, সেই ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী দেন আস্থার প্রতিদান। দল যখন পিছিয়ে পড়ে হারের আশঙ্কায় কাঁপছে, তখনই গোল করে দলকে সমতায় ফেরান তিনি। গোল করে আনন্দের আতিশয্যে জার্সি খুলে ফেলে হলুদ কার্ডও দেখেছেন অবশ্য। ৬ মিনিটে মিডফিল্ডার সিয়ামিমকে নিজেদের বক্সের বাইরে ফাউল করেন মামুনুল। সিয়াহিদের ফ্রি কিক লাফিয়ে উঠে দুর্দান্তভাবে ফিস্ট করে দলকে বাঁচান বাংলাদেশ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। ৮ মিনিটে সিয়ামিমের দুর্দান্ত শট আবারও আটকে দেন গোলরক্ষক রানা। ১৩, ১৮ ও ১৯ মিনিটে বাংলাদেশের টানা তিনটি আক্রমণ ব্যর্থ হয়। কিন্তু বাংলাদেশী ফুটবলাররা বল পাবার আগেই ডিফেন্ডার নূর ফজলে বল ক্লিয়ার করেন। ২১ মিনিটে ইয়াসিন খানের ক্রসে বক্সে হেড করেন জাহিদ। কিন্তু অল্পের জন্য বল জালে জড়ায়নি। ২৪ মিনিটে জাহিদের পাসে ডিফেন্ডার নাসিরের শট ফিরিয়ে দেন মালয়-গোলরক্ষক। ৩৪ মিনিটে মালয়েশিয়াকে নিশ্চিত গোল থেকে আবারও বঞ্চিত করেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক রানা। বক্সে ঢুকে জোরালো হেড নেন মালয়-অধিনায়ক শুকুর আদান। গোলরক্ষক রানা ফিস্ট করে বল বাইরে পাঠিয়ে নিশ্চিত গোল হজমের হাত থেকে বাঁচিয়েছেন বাংলাদেশকে। ৩৮ মিনিটে জাহিদের ফ্রি কিক ফিস্ট করে দলকে বাঁচান গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে গোলশূন্য ড্র স্কোরেই বিরতিতে যায় দুই দল। ৪৯ মিনিটে মামুনুলের বাড়ানো বলে বক্সে পেয়ে জাহিদ শট নিলে ফিরিয়ে দেন মালয় গোলরক্ষক। একইভাবে পরের মিনিটেও বলের যোগান দেন মামনুল। কিন্তু বল পোস্টের বাইরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন জাহিদ। ৫৫ মিনিটে মালয়েশিয়া ডিফেন্ডার জামিয়ানের উড়ন্ত ক্রসে বল রিসিভ করে মাপা শটে বাংলাদেশের জালে পাঠান মিডফিল্ডার মোহাম্মদ হাডিন (১-০)। ৭০ মিনিটে পোস্টের খুব কাছে থেকে জটলা থেকে বদলি ফরোয়ার্ড মিঠুন চৌধুরী শট নিলেও অল্পের জন্য গোল হয়নি। ৭৭ মিনিটে সমতায় ফেরে বাংলাদেশ। জাহিদের ক্রস থেকে তীব্র শট নেন মিঠুন। গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে পড়ে বলে হাত লাগান। কিন্তু হাত ফস্কে ধীরে ধীরে বল জালে প্রবেশ করে (১-১)। গোল পেয়ে আরও উজ্জীবিত হযে খেলে বাংলাদেশ। একাধিক আক্রমণও করে। কিন্তু সফলতা মেলেনি। শেষ পর্যন্ত কোন দলই আর গোল না পেলে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে উভয় দল। এখন দেখার বিষয়, শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ কি করে।
×