ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় কাবাডি দলের খেলোয়াড় কোহিনূর

‘দেশের জন্য সর্বস্ব নিংড়ে দেব’

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

‘দেশের জন্য সর্বস্ব নিংড়ে দেব’

রুমেল খান ২০১০ এসএ গেমসে আমি জাতীয় দলে ছিলাম না। জাতীয় দলে প্রথমবার খেলার সুযোগ পাই ২০১৩ সালে। তবে কখনও বিদেশে গিয়ে খেলার সুযোগ হয়নি। সামনের মাসে অনুষ্ঠিতব্য এসএ গেমসে জাতীয় দলের হয়ে ভারত খেলতে যাব। প্রথম বিদেশ সফর, তাই দারুণ রোমাঞ্চিত। দেশের জন্য সাফল্য বয়ে আনতে সর্বস্ব নিংড়ে দেব।’ কথাগুলো কোহিনূর আক্তারের। জাতীয় মহিলা কাবাডি দলের এই সুদর্শনা খেলোয়াড়ের কাবাডি নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনাটা আরও বড়, ‘নিজে তো ভাল খেলোয়াড় হবই, সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশকে অনেক শিরোপা জেতাতে পালন করতে চাই মুখ্য ভূমিকা। ২০১৩ সাল থেকে বাংলাদেশ আনসারের হয়ে খেলেন কোহিনূর। দশম শ্রেণীতে পড়ুয়া কোহিনূরের জন্ম পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায়। তিন বোনের মধ্যে মেজো তিনি। শৈশব থেকেই এ খেলাটির প্রতি অনুরাগ জন্মে তার। ‘যখন ক্লাস সিক্সে পড়ি, তখন থেকেই খেলাটি খেলতে শুরু করি। যদিও স্কুলে হ্যান্ডবল আর ভলিবলও খেলতাম, তারপরও বেছে নেই কাবাডিকেই।’ জাতীয় দলের অধিনায়ক শাহনাজ পারভীনকেই আদর্শ খেলোয়াড় মানেন কোহিনূর। মজার ব্যাপার হচ্ছেÑ শাহনাজ তার আপন খালাত বোন। ‘আপুকে দেখেই আসরে খেলাটি খেলতে উদ্বুদ্ধ হই।’ শাহনাজ পারভীন কী বলেন, ‘কোহিনূর অনেক ভাল খেলে। আশা করি এসএ গেমসে সে ভাল খেলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গত ৮ আগস্ট থেকে আমাদের অনুশীলন শুরু হয়েছে। দলে আছে ১৪ জনের মতো। চূড়ান্ত দলে হয়ত ১২ জন থাকবে। আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ ভারত। তারা খুব শক্তিশালী দল। বিশ্বকাপ কাবাডিতেও তারা খেলে। তাদের সঙ্গে পারা কঠিন। তবুও আমরা চেষ্টার ত্রুটি করব না। এবার আমাদের প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। আশা করি অন্তত আমরা গতবারের মতো এবারও রৌপ্যপদক ধরে রাখতে পারব।’ শাহনাজ আরও যোগ করেন অনুশীলন শুরু হওয়ার পর এখন পর্যন্ত দলের কেউ আহত হয়নি। অসুস্থও হয়নি। অনুশীলনও চমৎকার চলছে কোচ আব্দুল জলিলের অধীনে। বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি। তবে ক্রিকেট-ফুটবলের ভিড়ে প্রায় হারিয়েই গেছে ঐতিহ্যবাহী এ খেলাটি। তারপরও নানা প্রতিকূলতা ঠেলে এসএ গেমসে অংশ নিতে অনুশীলন করছে বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা কাবাডি দল। স্বর্ণ না জিতলেও কোনভাবেই রৌপ্য হাতছাড়া করতে রাজি নয় দলের সদস্যরা। মহিলা দলের কোচ আবদুল জলিল বলেন, ‘আমাদের মেয়েরা আগের আসরে রুপা জিতলেও এবার স্বর্ণজয়ের জন্য লড়াই করবে। সেভাবেই তাদের অনুশীলন করানো হচ্ছে। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করছি। গেমসে আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ ভারত ও দ্বিতীয় দলটি হলো শ্রীলঙ্কা। ফাইনাল খেলতে হলে লঙ্কানদের হারাতেই হবে আমাদের। এটাই হবে আমাদের লক্ষ্য।’ এসএ গেমসের কাবাডিতে বাংলাদেশের মেয়েদের যাত্রা শুরু ২০০৬’এ। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে একেবারে আনকোরা দলটি সেবার তেমন সুবিধা করতে পারেনি। তবে পরের আসরে নেপাল ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে রুপা জেতে বাংলাদেশের মেয়েরা। এরপর সাউথ এশিয়ান বিচ কাবাডিতে ব্রোঞ্জ জয় এবং এশিয়ান গেমসে ২০১০ ও ২০১৪ সালে ব্রোঞ্জ জেতে বাংলাদেশের নারী কাবাডি দল। এছাড়া ২০১২ বিশ্বকাপে অংশ নিয়ে পঞ্চম স্থান পায় বাংলার নারীরা। এবারে তাদের সামনে মিশন ভারতে অনুষ্ঠেয় ২০১৬ এসএ গেমস। সেখানে কেমন করবে তারা?
×