ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে খামারের দুধ ব্যবসায়ীর আড়তে

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

রাজশাহীতে খামারের দুধ ব্যবসায়ীর আড়তে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়িহাটে অবস্থিত সরকারী দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারে গাভীর দুধ বাইরের ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন কর্মকর্তারা। সরকারী বিধি অনুযায়ী পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য সাধারণ মানুষের কাছে গাভীর দুধ বিক্রির নিয়ম থাকলেও তা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে সরবরাহের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত দুধের দাম লিটারপ্রতি কম হওয়ায় তা বাইরে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী অঞ্চলে সাধারণ মানুষের পুষ্টির চাহিদা মেটানোর জন্য ১৯৮০ সালে প্রায় তিন শ’ একর জমির ওপর খামারটি চালু হয়। খামারটিতে বর্তমানে গাভীর সংখ্যা ১৪০টি। এর মধ্যে ৭০টি গাভী প্রতিদিন দুই বেলায় (সকাল ও বিকেলে) গড়ে ৫ লিটার দুধ দেয়। ফলে প্রতিদিন প্রায় সাড়ে তিন শ’ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। তবে উৎপাদিত দুধের পরিমাণের ব্যাপারে খামার ব্যবস্থাপক ডাঃ তৌফিকুল ইসলাম গাভীপ্রতি উৎপাদিত দুধের পরিমাণ কম কেন- এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমরা নিয়ম অনুযায়ী খাবার দেই। এর পরেও দুধের পরিমাণ কেন কম হচ্ছে, তা বলতে পারব না। অভিযোগ উঠেছে, খামারের ব্যবস্থাপক ডাঃ তৌফিকুল ইসলাম তার সহকারী ইকবাল হোসেনের সহায়তায় খামারের দুধ উপজেলার আড়ইল এলাকার শাহীন নামের একজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাধারণ মানুষের কাছে বিতরণের জন্য বর্তমানে সরকার নির্ধারিত লিটারপ্রতি দুধের দাম ৩৮ টাকা। কিন্তু ব্যবসায়ী শাহীনের কাছে দুধ বিক্রি করা হচ্ছে ৫০ টাকা লিটারপ্রতি। ফলে প্রতিদিন উৎপাদিত সাড়ে তিন শ’ লিটার দুধের বিপরীতে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে ১২ টাকা করে বেশি নেয়া হচ্ছে। অথচ সরকারী রেজিস্ট্রারে দুধের দাম ৩৮ টাকা লেখা হচ্ছে। শুধু বাইরে দুধ বিক্রি করেই খামার ব্যবস্থাপক ডাঃ তৌফিকুল ইসলাম ও তার সহকারী ইকবাল হোসেন প্রতিমাসে এক লাখ ২০ হাজার টাকার ওপরে হাতিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী শাহীন প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে একটি মিশুকে করে রাজাবাড়ি খামার থেকে দুধ রাজশাহী নগরীতে নিয়ে যান। তিনি রাজশাহীতে প্রতি লিটার দুধ ৬০ টাকা দামে বিক্রি করেন। রাজশাহী শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকানে এসব দুধ বিক্রি হয়। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যবস্থাপক ডাঃ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, খামারের দুধ সরবরাহের গাড়িটি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এছাড়া গাড়ির চালক প্রেষণে অন্য এলাকায় কর্মরত। এ কারণে সাধারণ মানুষকে দুধ বিতরণে সমস্যা হচ্ছে। উৎপাদিত দুধের পরিমাণ কম দেখিয়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাইরে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন, স্থানীয় মানুষ দুধ না কেনার কারণে বাইরের একজন ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করা হয়।
×