ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসীরা শাস্তি পাবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ১৩ জানুয়ারি ২০১৬

বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাসীরা শাস্তি পাবে ॥ প্রধানমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িতদের বিচারে তাঁর সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেছেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সন্ত্রাসী কর্মকা- জনসমর্থন পায়নি। ব্যর্থতার বোঝা নিয়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে তাঁকে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল। অগ্নিসন্ত্রাসীদের আটক করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে, তাদের বিচার কাজ চলছে। যারা দেশবাসীর আপনজনকে কেড়ে নিয়েছে, জানমালের ক্ষতিসাধন করেছে- সেই অপরাধীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় টানা দ্বিতীয়বারের ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় বছরপূর্তি দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংসতায় যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণের পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানান। একইসঙ্গে আহতদের প্রতি আন্তরিক সহানুভূতিও জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিএনপি-জামায়াত জোট সারাদেশে যে ঘৃণ্য ও পৈশাচিক সন্ত্রাস চালায় তা কোনদিন বিস্মৃত হওয়ার নয়। তাদের এই নৃশংসতা ১৯৭১ সালে পাকিস্তানী হায়েনা ও তাদের দোসরদের নির্মমতার সঙ্গেই কেবল তুলনা করা যায়। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ ও পেট্রোলবোমার শিকার হয়ে নিরীহ বাসড্রাইভার, বাস-টেম্পো-সিএনজি যাত্রী, প্রিসাইডিং অফিসার, পুলিশ-বিজিবি-আনসার, সেনাবাহিনীর সদস্য, এমনকি স্কুলের শিক্ষক ও শিশুও নিহত হয়েছেন। অনেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছেন, জীবনের তরে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। মানবেতর জীবনযাপন করতে বাধ্য হয়েছেন। দেশবাসীকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সন্ত্রাস বোমাবাজি উপেক্ষা করে সেদিন আপনারা (দেশবাসী) গণতন্ত্রকে বিজয়ী করেছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্র ও উন্নয়ন বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্ব সহ্য করতে পারে না। মানুষ শান্তিতে থাকবে, হাসিমুখে জীবনযাপন করবে তা ওদের সহ্য হয় না। তিনি বলেন, সারাবিশ্বে বাংলাদেশ যখন উন্নয়নের রোলমডেল, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা যখন বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুশাসন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ডিজিটাইজেশন, এমডিজির লক্ষ্যসমূহ অর্জন, জলবায়ুর প্রতিকূল প্রভাব মোকাবেলাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি ও পুরস্কারে ভূষিত করছে, তখনই ২০১৫ সালের ৪ জানুয়ারি থেকে বিএনপি-জামায়াত আবারও দেশে সন্ত্রাস, সহিংসতা শুরু করে। কিন্তু দেশবাসী তাদের অগ্নিসন্ত্রাস ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করে বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা এবং বিএনপি নেত্রী আদালত হাজিরায় অনুপস্থিত থাকার উদ্দেশ্যে বিএনপি-জামায়াত অনির্দিষ্টকালের অবরোধ শুরু করে সারাদেশে তা-ব ও হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। পেট্রোলবোমায় ২৩১ জন নিরীহ মানুষ নিহত এবং ১ হাজার ১৮০ জন আহত হয়। ২ হাজার ৯০৩টি গাড়ি, ১৮টি রেলগাড়ি ও ৮টি লঞ্চে আগুন দেয়। পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করে ৭০টি সরকারী অফিস ও স্থাপনা ভাংচুর এবং ৬টি ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেয়া হয়। বিএনপি-জামায়াতের অনৈতিক অবরোধ কর্মসূচীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ করায় দেশবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণকে ভোগান্তিতে রেখে, অমানবিক কষ্ট দিয়ে তাদের জীবন বিপন্ন করে বিএনপি নেত্রী নাটক করে ৬৮ জনকে নিয়ে আরাম-আয়েশে ৯২ দিন অফিসে থাকেন। হত্যাযজ্ঞ ও তা-বের হুকুম দেন। তাঁর এই সন্ত্রাসী কর্মকা- জনসমর্থন পায়নি। ব্যর্থতার বোঝা নিয়ে আদালতে হাজিরা দিয়ে নাকে খত দিয়ে উনি (খালেদা জিয়া) বাড়ি ফিরে যান। তিনি বলেন, অগ্নিসন্ত্রাসীদের আটক করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। তাদের বিচার কাজ চলছে। যারা আপনাদের আপনজনকে কেড়ে নিয়েছে, জানমালের ক্ষতিসাধন করেছে সেই অপরাধীরা অবশ্যই শাস্তি পাবে।
×