ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যশোর পর্ব শেষ, এবার ঢাকায়

প্রকাশিত: ০৫:২১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬

যশোর পর্ব শেষ, এবার ঢাকায়

রুমেল খান, যশোর থেকে ॥ গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠেছিল। সোমবার মালদ্বীপ বনাম কম্বোডিয়া ম্যাচের মধ্য দিয়ে পর্দা নামল বহুল আলোচিত ফুটবল আসরের ‘বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ’ যশোর পর্বের খেলা। একদিন বিরতি দিয়ে বুধবার থেকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরু হবে টুর্নামেন্টের বাকি পর্বের খেলাগুলো। সোমবারের তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় মালদ্বীপ ৩-২ গোলে হারায় কম্বোডিয়াকে। এদিন খেলা দেখতে মাঠে উপস্থিত ছিল উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শক। তার অবশ্য কারণও আছে, প্রথম ম্যাচের পর দর্শকখরা দেখা যাওয়ায় আয়োজক কর্র্তৃপক্ষ ঘোষণা দেন সোমবার এই মাঠে মালদ্বীপ-কম্বোডিয়া ম্যাচ দেখতে দর্শকদের টিকেট কিনতে হবে না। তাদের জন্য গ্যালারি উন্মুক্তই থাকবে। সে সুযোগটা হাতছাড়া করেননি অনেকেই। ফলে স্বাগতিক দলের ম্যাচ না হওয়া সত্ত্বেও এদিন গ্যালারিতে নেমেছিল দর্শকের ঢল। গত বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রথম পর্যায়ের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছিল সিলেটে। এবারও সেখানেই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে এবার আইসিসি টি২০ যুব বিশ্বকাপের খেলা হবে বলে ভেন্যু পরিবর্তন করে যশোরে নেয়া হয়। যশোরে প্রথম ম্যাচে গ্রুপ ‘এ’ ম্যাচে বাংলাদেশ জাতীয় দল ৪-২ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুভসূচনা করে। ৯ জানুয়ারি একই গ্রুপে দ্বিতীয় ম্যাচে বর্তমান শিরোপাধারী মালয়েশিয়াকে ১-১ গোলে রুখে দিয়ে চমক দেখায় নেপাল। যদিও গত আসরের চ্যাম্পিয়ন দলের কেউ নেই মালয়েশিয়া দলে। এটি আসলে একটি ক্লাব দল (ফেলদা ইউনাইটেড এফসি)। রবিবার ‘বি’ গ্রুপের ম্যাচে বাংলাদেশ অলিম্পিক দল বাগে পেয়েও হারাতে পারেনি বাহরাইন যুব দলকে। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হয়। ‘বি’ গ্রুপের সর্বশেষ ম্যাচের কথা তো লেখার শুরুতেই বলা হয়েছে। অনেকেই বলেছেন, শেষের ম্যাচটিই (মালদ্বীপ-কম্বোডিয়া) ছিল আসরের এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া সেরা জমজমাট ম্যাচ। বাংলাদেশ জাতীয় দল তাদের গ্রুপে তিন পয়েন্ট নিয়ে আপাতত শীর্ষে অবস্থান করছে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ রবিবার ঘোষণা দেন সোমবার এই মাঠে মালদ্বীপ-কম্বোডিয়া ম্যাচ দেখতে দর্শকদের টিকেট কিনতে হবে না। তাদের জন্য গ্যালারি উন্মুক্তই থাকবে। যশোরের শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের প্রথম ম্যাচে স্টেডিয়ামে দেখা গিয়েছিল দর্শকের ঢল। তবে দ্বিতীয় দিন থেকেই কমতে থাকে দর্শকসংখ্যা। তবে ওইদিন বাংলাদেশের কোন ম্যাচ ছিল না। তবে রবিবার বাংলাদেশ যুবদল-বাহরাইন ম্যাচেও গ্যালারির অনেক আসনই ফাঁকা দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রথম ম্যাচে বাফুফের লোগোবিহীন টিকেট বিক্রি করে তিন কালোবাজারি পুলিশের হাতে আটক হওয়াতে (অভিযোগ আছে, তারা ছিল যশোর ডিএফএ আসাদুজ্জামান মিঠুর লোক) স্থানীয় দর্শকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। তাদের ভয় ছিল, জাল টিকেট কিনে খেলা দেখতে গিয়ে যদি শেষে জেলে যেতে হয়! অনেকের মতেÑ টিকেটের দাম বেশি হওয়ায় গ্যালারিতে বেশি দর্শক হয়নি। ফুটবলপ্রেমীদের অনেকেই জানিয়েছেন, টিকেটের দাম যদি ২৫, ৫০ ও ১০০ টাকা হতো তাহলে স্টেডিয়ামে প্রচুর দর্শক সমাগম হতো। তাছাড়া আন্তর্জাতিক ম্যাচে বেশি কড়াকড়ি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে এবং ভোগান্তির শিকার হওয়ার ভয়েও অনেকে স্টেডিয়ামমুখো হতে অনাগ্রহী ছিলেন। অনেকের আবার যুবদলের ম্যাচ দেখতে অনীহা। যুবদল না হয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ম্যাচ হলে বেশি দর্শক আসত বলে মনে করছেন অনেক স্থানীয় দর্শক। কারও মতে প্রচার সেভাবে হয়নি। আর টিকেট নিয়ে অব্যবস্থাপনা তো ছিলই! টিকেট বিক্রেতাদের অনেকেই জানালেন ঠিক সময়ে টিকেট হাতে পাননি তারা। সব মিলিয়েই ঠিক জমেনি গ্যালারিতে দর্শক জোয়ার। এখন দেখার বিষয়, এ টুর্নামেন্টের বাকি খেলাগুলো দেখতে ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে দর্শকরা ভিড় করেন কি না এবং বাংলাদেশের দুটি দল কেমন খেলে।
×