ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পারিবারিক সহিংসতা মামলা সাংবাদিক নাজনীন আখতার ২২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন

প্রকাশিত: ০৫:১৯, ১২ জানুয়ারি ২০১৬

পারিবারিক সহিংসতা মামলা সাংবাদিক নাজনীন  আখতার ২২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন

কোর্ট রিপোর্টার ॥ দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নাজনীন আখতার তার সাবেক স্বামী রকিবুল ইসলাম মুকুলের কাছ থেকে ২২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন। সোমবার পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের এক মামলার রায়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হক এই ক্ষতিপূরণ শোধের রায় দেন। একটি বেসরকারী টিভি চ্যানেলের সাবেক বার্তা সম্পাদক রকিবুল ইসলাম মুকুলের নামে নারী নির্যাতন মামলায় নাজনীনের দায়ের করা আরেক মামলা বিচারাধীন রয়েছে। নারী নির্যাতন ও পরনারীর সঙ্গে সম্পর্কের গুরুতর অভিযোগ ওঠার পর ওই টিভি চ্যানেল থেকে মুকুলকে বরখাস্ত করা হয়। বিচারক দুই পক্ষের মানিত সালিশগণের দাখিলকৃত প্রতিবেদন, আবেদনকারী ও প্রতিপক্ষের সামাজিক মর্যাদা এবং মূল মামলার আবেদনসহ সার্বিক পর্যালোচনায় মামলার বাদী নাজনীন আখতারকে এই অর্থ ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য বিবাদী রকিবুল ইসলামকে নির্দেশ দেন। বিবাদী ক্ষতিপূরণের টাকা একবারে বা কিস্তিতে দিতে পারবেন বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এই মামলায় গত ৩০ নবেম্বর বিচারক বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকৃত ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের জন্য উভয়পক্ষকে তিনজন করে মোট ছয়জনের নাম জমাদানের নির্দেশ দেন। এরপর ওইদিনই উভয়পক্ষ তিনজন করে মোট ছয়জনের নাম প্রস্তাব করলেও আদালতে একপক্ষ অপরপক্ষের দুজন করে মোট চারজনের নামে আপত্তি দাখিল করেন। পরে উভয়পক্ষের অনাপত্তিতে বিএফইউজের মহাসচিব ও বাসসের নিউজ এডিটর ওমর ফারুক এবং বিএফইউজের কার্যনির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ৭১ টিভির পরিচালক (বার্তা) সৈয়দ ইশতিয়াক রেজাকে ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের দায়িত্ব দেয়া হয়। ১০ ডিসেম্বর ওই দুই সাংবাদিক সালিশ বৈঠকে বসার জন্য আদালতে সময় প্রার্থনা করলে বিচারক পনের দিন সময় বর্ধিত করেন। এরপর ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে উভয়পক্ষের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন ওই দুই সাংবাদিক নেতা। স্বল্প সময়ের ওই বৈঠকে বিবাদী রকিবুল ইসলাম স্বেচ্ছায় বাদীকে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদানে সম্মত হন। পরে দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই সাংবাদিক নেতা বিবাদীর ক্ষতিপূরণ প্রদানে ওই সম্মতির বিষয়টি বাদীকে জানান এবং তাকে তা মেনে নেয়ার পরামর্শও দেন। এরপর মামলার নির্ধারিত তারিখে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিকগণ আদালতে এসে তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেন। কিন্তু প্রেসক্লাবে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার অঙ্গীকার থেকে সরে আসেন বিবাদী রকিবুল ইসলাম। এমনকি তার আইনজীবী ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়টিই শুধু নয় প্রেসক্লাবে বৈঠকের কথাটিও বেমালুম অস্বীকার করেন। এরপর বিচারক ১১ জানুয়ারি ক্ষতিপূরণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য তারিখ ধার্য করেন। নির্ধারিত তারিখে সোমবারই রায় আসে। দৈনিক জনকণ্ঠের সিনিয়র রিপোর্টার নাজনীন আখতার তার সাবেক স্বামী রকিবুল ইসলামের (মুকুল) বিরুদ্ধে পারিবারিক সহিংসতার অভিযোগে ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও তিনি তার সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আরেকটি পৃথক মামলা দায়ের করেছেন যা বর্তমানে ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।
×