ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

উন্নয়নের ধারায় সব সূচকেই অগ্রগতি;###;সর্বাধিক আলোচ্য বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধের বিচার, ছিট বিনিময়, পদ্মা সেতু নির্মাণ উদ্বোধন, একাধিক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পুরস্কার

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অগ্রগতির সড়কে সরকার ॥ দ্বিতীয় টার্মে দু’বছরে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ১২ জানুয়ারি ২০১৬

চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অগ্রগতির সড়কে সরকার ॥ দ্বিতীয় টার্মে দু’বছরে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব

উত্তম চক্রবর্তী ॥ বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে সব সূচকে অগ্রগতি, সাফল্যে আর উন্নয়নের পতাকা উড়িয়েই আজ মঙ্গলবার টানা দ্বিতীয় মেয়াদের ক্ষমতার দুই বছর পূর্ণ করল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। সরকারের দ্বিতীয় বর্ষের সরকার পরিচালনার সফলতা-ব্যর্থতার খেরোখাতায় যে লাইনটি সর্বাগ্রে উঠে এসেছে তা হচ্ছেÑ প্রথম বছরের ন্যায় দ্বিতীয় বছরেও দেশের রাজনীতিসহ সবকিছুর নিয়ন্ত্রণই ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে। নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সামনের দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে শেখ হাসিনার সরকার। ভয়াল সহিংসতা ও শ্বাসরুদ্ধকর রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করে দেশকে অগ্রগতির মিছিলে শামিল করার পাশাপাশি সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই ক্ষমতার তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করল আওয়ামী লীগ সরকার। সাফল্যে-ব্যর্থতার বিচারে টানা দ্বিতীয় মেয়াদের এই দুটি বছর বেশি সময় না হলেও পার্থক্য হচ্ছে অতীত কোন সরকারকে ক্ষমতা গ্রহণের পর দুটি বছর এমন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে হয়নি। তবে এই দুই বছরে সাফল্য-ব্যর্থতার পরিমাপে সরকারের ঝুলিতে সাফল্যের পরিমাণ যে কয়েকগুণ বেশি, তা চরম সমালোচকও মানতে বাধ্য হচ্ছেন। মাত্র দুই বছরেই বন্ধুর পথ পাড়ি দিয়ে দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে স্থাপিত করেছে শেখ হাসিনার সরকার। ঠিক দুই বছর আগে ২০১৪ সালের এই দিনে তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার সময় দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না, বরং ছিল অত্যন্ত ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ সরকারকে বছরের শুরুতে বিএনপি-জামায়াত সৃষ্ট দুর্যোগের ঝড়ের মুখেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সেই দুর্যোগ মোকাবেলা করার পর গত বছরের ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে আবারও ভয়াল সহিংসতা মোকাবেলা করতে হয়েছে বর্তমান সরকারকে। বিএনপি-জামায়াতের টানা ৯২ দিনব্যাপী ভয়াবহ দানবীয় সন্ত্রাস-সহিংসতা ও অগ্নিসন্ত্রাসে পুড়েছে গোটা দেশ। দেশের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে ওই রাজনৈতিক সন্ত্রাসে। তিনটি মাস ধরে দেশের মানুষ ছিল অগ্নিসন্ত্রাসের কাছে কার্যত অবরুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দৃঢ়, সাহসী ও বুদ্ধিদীপ্ত নেতৃত্ব দিয়ে দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনার বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার অগ্নিপরীক্ষায় শুধু উত্তীর্ণই হননি, দেশের মানুষকে শান্তি-স্বস্তি প্রদানের পাশাপাশি গত এক বছরেই দেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে দেশকে টেনে তুলে প্রগতি ও অগ্রগতির মিছিলে শামিল করতে সক্ষম হয়েছে। গণতন্ত্র ধ্বংসের সকল ষড়যন্ত্র-বেড়াজাল ছিন্ন করে দেশকে স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ রেখেই বর্তমান সরকার মেয়াদের তৃতীয় বর্ষে পদার্পণ করল। অতীত সরকারগুলোর এক বছর পূর্তিতে ব্যর্থতা ও অভিযোগের ঝাঁপি খুলে বিরোধী পক্ষ দেশব্যাপী ঝড় তুললেও এবারের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। দ্বিতীয় মেয়াদের বর্তমান সরকারের প্রথম দুই বছরের হিসাব মেলাতে গিয়ে চরম বৈরী বিরোধী পক্ষও বড় ধরনের ব্যর্থতার দালিলিক প্রমাণ জাতির করতে পারেনি দেশবাসীর সামনে। বরং অধিকাংশ মানুষের মূল্যায়নে বেরিয়ে এসেছে, ক্ষমতার দুই বছরে বর্তমান সরকার প্রথম থেকেই সঠিক পথেই এগোচ্ছে। দুই বছরে ব্যর্থতার চেয়ে সরকারের সাফল্যের পাল্লা অনেকগুণ ভারি। জনগণের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির ব্যবধানও কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এদেশে সাধ ও সাধ্যে, চাওয়া ও পাওয়ার মধ্যে সেতুবন্ধন রচনা খুব সহজ নয়। তবে দেশবাসী খোলা মনে প্রথম দুই বছরের ভাল কাজের প্রশংসা এবং মন্দ কাজের সমালোচনা করলেও সরকারের ওপর তাদের আস্থা এতটুকুও কমেনি, বরং বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসম সাহস, দক্ষতা, দুরদৃষ্টি ও অসীম ধৈর্যের সঙ্গে দেশ পরিচালনার প্রতিটি পদক্ষেপকে যেমন দেশের মানুষ এখনও অধিকমাত্রায় সমর্থন করছেন, ঠিক তেমনি দুই বছরে দেশী-বিদেশী সকল রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার সম্পন্ন হওয়া, একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীসহ সকল রাজনৈতিক হত্যাকা-ের বিচার ও রায় কার্যকরের দৃঢ় ও সাহসী পদক্ষেপকেও নিরঙ্কুশভাবেই অনুমোদন দিয়েছেন। প্রথম থেকেই সঠিক পথে চলায় বর্তমান সরকারের কাছ থেকে মানুষের প্রত্যাশা বেড়েছে কয়েকগুণ। বাকি তিন বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে দেয়া সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে দেশকে বিশ্বসভায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিময় দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেনÑ এমন আশায় বুক বেঁধেছেন দেশের মানুষ। সম্প্রতি মার্কিন জরিপ রিপোর্টেও বতমান সরকার ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা যে অতীতের চেয়েও বৃদ্ধি পেয়েছে তা উঠে এসেছে, যার বাস্তব প্রমাণ মেলে বছরের শেষে পৌর নির্বাচনের ফলাফলে। দেশের ইতিহাসে প্রথম দলীয় নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষকে ভরাডুবি ঘটিয়ে সারাদেশে মহাবিজয় আনতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। সরকারের দ্বিতীয় বছরটি ছিল বেশ ঘটনাবহুল। বছরটিতে অনেক ভাল খবর যেমন ছিল, তেমনি মন খারাপ করে দেয়ার মতো খবরও কম ছিল না। নানা কারণেই তাই সরকারের দ্বিতীয় বর্ষটি দেশের মানুষের কাছে আলোচিত ও কিছু সমালোচিতও ছিল। তবে প্রথম বছরপূর্তির দিনকে সামনে রেখে গত বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে সরকার পতনের ‘অলীক স্বপ্নে’ যে প্রতিহিংসার দ্রোহের আগুন দিয়ে দেশবাসীকে পুড়িয়ে হত্যার মাধ্যমে বছরটা শুরু করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট, মাত্র তিন মাসেই তাদের আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়েছে। এরপর বাকি ৯টি মাস স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ আর সব সূচকে দেশকে এগিয়ে নেয়ার মিছিল আর থামেনি, বরং তা আরও এগিয়ে যাচ্ছে। কেমন গেল এই দুই বছর? অনেক বিচক্ষণ ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠী বলেছিল, নির্বাচন হলে কী হবে, শেখ হাসিনার সরকার এ দফায় এক বছরও টিকবে না। সৌভাগ্য শেখ হাসিনার, সৌভাগ্য দেশের মানুষের। শত বাধা-বিপত্তি ও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শেখ হাসিনার সরকার শুধু টিকেই যায়নি, এই দুই বছরে দেশকে অগ্রগতির পথে অনেক দূর নিয়ে গেছেন। শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে শেখ হাসিনার বৃহস্পতি গত একবছরও ছিল তুঙ্গে। শুধু বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নন, শেখ হাসিনাকে অনেকেই উন্নয়নশীল দেশের রোল মডেল নেতা হিসেবে মনে করেন। তার সরকারের অর্জনের কথা এখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও নিজ বক্তৃতায় নিয়মিত তুলে ধরেন। বর্তমান সরকারের দুই বছর পূর্তির সাফল্যে-ব্যর্থতার খেরোখাতায় এসেছেÑ বছরটি ছিল বাংলাদেশের সাফল্যের বছর। সরকারের গৃহীত উন্নয়ন পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়নের ফলে গত মেয়াদের পাঁচ বছর এবং এই মেয়াদের দুই বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে বিশ্বের সামনে রোল মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমান বিশ্বের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়া পাঁচটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। দেশের গড় প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের ওপরে, মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩শ’ ১৪ ডলারে। ৫ কোটি মানুষ নিম্ন আয়ের স্তর থেকে মধ্য আয়ের স্তরে উন্নীত হয়েছে। ছয়গুণ রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়ে ২৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সবশেষ জাতিসংঘও বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। বর্তমান সরকার দ্বিতীয় বছরেও দেশের জন্য অনেক অর্জন আনতে সক্ষম হয়। বছরের শেষে নিজস্ব অর্থায়নে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর মূল কাজের উদ্বোধনের মাধ্যমে সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে শেখ হাসিনার সরকার দেখিয়ে দিয়েছেÑ বাঙালী সবই পারে, আমরাও পারি। বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ সেতুটি। অথচ এ সেতুটি নির্মাণ করতে গিয়েও সরকারকে অনেক দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হয়েছে। এছাড়া গত বছরে জিনিসপত্রের দামও ছিল জনগণের নাগালের মধ্যে। তৃতীয় বর্ষে এসেও এ ধারা অব্যাহত আছে। প্রথম বছরের মতো দ্বিতীয় বর্ষেও প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য এনেছেন অনেক আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। গত বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা দুটি বিরল ও সম্মানজনক আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান, যা ছিল আলোচিত ঘটনা। জাতিসংঘ থেকে তিনি পান ‘চ্যাম্পিয়নস অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন আইসিটি পুরস্কার। এছাড়াও ওয়াশিংটনভিত্তিক সাময়িকী ‘ফরেন পলিসি’র বিশ্বের ১০০ চিন্তাবিদের তালিকায় নাম আসে শেখ হাসিনার। ওই তালিকায় ‘সিদ্ধান্ত প্রণেতা’ ক্যাটাগরিতে শীর্ষ ১৩ জনের একজন ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান সরকারে প্রথম বছরের মতো দ্বিতীয় বছরেও অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সাজা কার্যকরের ঘটনা। গত বছরেও সকল আন্তর্জাতিক চাপ উপেক্ষা করে শীর্ষ দুই যুদ্ধাপরাধী জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে একই সঙ্গে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হয়। আরেক রাজাকার শিরোমণি মতিউর রহমান নিজামীরও ফাঁসির রায় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। দ্বিতীয়বর্ষে বর্তমান সরকারের সবচেয়ে কূটনৈতিক সাফল্যে ছিল ঐতিহাসিক ছিটমহল বিনিময়। এটি ছিল সারাবিশ্বেই অন্যতম আলোচনার বিষয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা ভারতের ১১১টি ও ভারতের অভ্যন্তরে থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহল বিনিময় হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় সফরে এলে এ চুক্তি সম্পাদিত হয়। গত ৩১ জুলাই থেকে এ বিনিময় কার্যকর হয়। বাংলাদেশ-ভারত স্থলসীমান্ত চুক্তির আলোকে ভারতের লোকসভায় সর্বসম্মতিক্রমে দেশটির সংবিধান সংশোধন করা হয়। দেশকে উন্নয়নের পথে ধাবিত করলেও গত দুই বছরে অনেক বন্ধুর পথও পাড়ি দিতে হয়েছে বর্তমান সরকারকে। ষড়যন্ত্র-চ্যালেঞ্জ পিছু ছাড়েনি এই দুই বছর। সামনে এসেছে নিত্যনতুন নানা চ্যালেঞ্জ। বিএনপি-জামায়াতের চরম রাজনৈতিক সহিংসতা মোকাবেলা করে দেশ যখন স্থিতিশীল পরিবেশে অর্থনৈতিকসহ নানা ক্ষেত্রে ইতিবাচক ধারায়, ঠিক তখনই আবার নতুন চ্যালেঞ্জ। তবে এসব চ্যালেঞ্জের বেশির ভাগই স্বাভাবিকভাবে সৃষ্ট নয়; বরং ষড়যন্ত্রমূলক। সরকারকে বিপাকে ফেলে চলমান বহুমুখী উন্নয়ন কর্মকা- ও দেশের অগ্রযাত্রা স্তিমিত করে দেয়াই ছিল ষড়যন্ত্রকারীদের উদ্দেশ্য। সর্বশেষ ইতালি ও জাপানী দুই নাগরিককে হত্যা, মসজিদ-মন্দিরে আত্মঘাতী বোমা হামলা, শিয়া মিছিলে বোমা হামলা, তাদের মসজিদে গুলি করে মোয়াজ্জিনকে হত্যা, ব্লগার ও প্রকাশকদের গুপ্তহত্যার ঘটনা সেটিই প্রমাণ করে। তবে সব ষড়যন্ত্র আর চ্যালেঞ্জ প্রজ্ঞার সঙ্গে মোকাবেলা করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এত সাফল্য সত্ত্বেও পুরো দুই বছর বিএনপি-জামায়াত মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারলেও নিজ দলের মধ্যে সৃষ্ট কোন্দল-দ্বন্দ্ব আর সিনিয়র নেতাদের লাগামহীন মন্তব্যে শুধু অস্বস্তিই নয়, প্রায়শই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। দুই দফায় বিএনপি-জামায়াত জোটের নাশকতা-সহিংসতা ছাড়া গত দুই বছরে সরকারবিরোধী জোরালো কোন আন্দোলন ছিল না, ছিল না রাজপথে রাজনৈতিক সংঘাত-সংঘর্ষ। তা সত্ত্বেও সরকার ও তাদের সহযোগী সংগঠনের কিছু মন্ত্রী-নেতার কর্মকা-ে সরকারকে বেকায়দায় পড়তে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে খোদ নিজ দলের ভেতর থেকেই। তাই তৃতীয় বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রধান চ্যালেঞ্জই হচ্ছে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নিজ দলের চেন অব কমান্ড গড়ে তোলা। অতীতের মতো শক্তহাতেই সকল জঙ্গীবাদ, সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র দমন করে সুখী-সমৃদ্ধ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
×