ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে ও অপর জনকে পিটিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:১১, ১২ জানুয়ারি ২০১৬

রাজধানীতে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাতে ও অপর জনকে পিটিয়ে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর পল্লবীতে সোমবার পৃথক দুই ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম ভুট্টো নামে উর্দুভাষী এক বিহারীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে এবং মহিউদ্দিন হাওলাদার নামে এক রাজমিস্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুইটি হত্যাকা-ের ঘটনায়ই জড়িত সন্দেহে নিহতদের দুই স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পারিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে ঘটনা দুইটি ঘটে থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। লাশ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। সোমবার ভোর ৫টার দিকে পল্লবী থানাধীন ১১ নম্বর সেকশনের ডি ব্লকে অবস্থিত উর্দুভাষী বিহারীদের বসবাসের মিল্লাত ক্যাম্পের নিজ বাসা থেকে সিরাজুল ইসলামের (৪৫) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত সিরাজুল স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ও এক ছেলে এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলেন। ক্যাম্পের বাসিন্দারা বলছেন, ভোরে স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাথরুমে যান। এরপর ঘরে চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ শোনা যায়। স্বামীর স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক দ্বন্দ্ব থাকায় বিষয়টি কেউ আর আমলে নেননি। চিৎকার শুনে স্ত্রী ঘরে ঢুকে স্বামীকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দেখেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকেই মৃত অবস্থায় সিরাজুল ইসলামকে উদ্ধার করে। পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুকুজ্জামান জানান, নিহতের ঘাড় ও কানে ধারালো অস্ত্রের গভীর ক্ষত রয়েছে। খুনী শনাক্ত করতে ঘটনাস্থল থেকে নানা আলাম সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ জানায়, সিরাজুল ইসলামের নির্দিষ্ট কোন পেশা ছিল না। মাঝে মধ্যে তিনি চা বিক্রি করতেন। আবার বেনারসি শাড়ির কাজও করতেন। নিহত সিরাজুল ইসলাম মদ্যপ ছিলেন। সিরাজুলের একভাই বর্তমানে কারাগারে। ছেলে মেয়েরা পিতামাতার সঙ্গে থাকেন না। তবে ঠিক স্ত্রী বাথরুমে যাওয়ার পরপরই স্বামীকে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যার বিষয়টি চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এদিকে বেলা এগারোটার দিকে ১২ নম্বর সেকশনের জসীম মোল্লার বস্তির বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী মহিউদ্দিন হাওলাদারের (৪০) লাশ মিরপুর বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত মীম জেনারেল হাসপাতাল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পল্লবী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল ইসলাম জানান, নিহতের শরীরে জখমের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের দুই স্ত্রী। ছোট স্ত্রী হনুফা বেগমকে নিয়ে মহিউদ্দিন বস্তিতে থাকতেন। দুই স্ত্রীর মধ্যে ঝামেলা চলছিল। শুক্রবার ছোট স্ত্রী হনুফা বেগম স্থানীয় সাত্তার নামের এক মাস্তানের কাছে স্বামী ঠিকমত ভরণপোষণ দেন না বলে অভিযোগ করেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওইদিনই মহিউদ্দিনকে পিটিয়ে আহত করে সাত্তার ও তার সহযোগীরা। আহত মহিউদ্দিন বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। রবিবার রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন নিহতের পরিবার। হাসপাতালেই সোমবার তার মৃত্যু হয়। পল্লবী থানার ওসি দাদন ফকির জানান, পারিবারিক দ্বন্দ্বের সূত্র ধরে পৃথক ঘটনা দুইটি ঘটতে পারে। ভুট্টু হত্যাকা-ের শিকার। তবে মহিউদ্দিন হত্যাকা-ের শিকার কিনা তা স্পষ্ট নয়। পারিবারিক বিষয়াদি ছাড়াও নিহত বা নিহতের স্ত্রীর কোন পরকীয়ার সূত্র ধরে ভুট্টু হত্যাকা-ের ঘটনাটি ঘটেছে কি না সে বিষয়ে গভীর তদন্ত চলছে। ভুট্টুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। অন্যদিকে মহিউদ্দিন নিহতের ঘটনায় তার ছোট স্ত্রী হনুফা বেগমকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
×