ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্মেলনের আগেই আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠক হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৮:১৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

সম্মেলনের আগেই আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠক হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের আগে দলটির জাতীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হচ্ছে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি ছয় মাসে একটি জাতীয় কমিটির সভা আহ্বান করার বিধান থাকলেও দীর্ঘদিন পর এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, হিসাবনিকাশ অনুমোদন, কেন্দ্রীয় কমিটির পরিধিবৃদ্ধিসহ নানা সুপারিশ বাস্তবায়নে জাতীয় কমিটির পরামর্শ গ্রহণ করবেন দলটির সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সময়সূচী নির্দিষ্ট না হলেও সহসাই এ বৈঠকটি আহ্বান করা হবে বলে দলটির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের এবারের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে গঠনতন্ত্র বেশকিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। দলীয়ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের বিধান থাকায় এসব নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন কিভাবে হবেÑ তা গঠনতন্ত্রে কোন ব্যাখ্যা ছিল না। এ লক্ষ্যে সংসদীয় বোর্ডের আদলে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও প্রার্থী মনোনয়নে আলাদা একটি মনোনয়ন বোর্ড গঠনের প্রস্তাবনা সংযুক্ত করা হবে গঠনতন্ত্রে। এছাড়া বিভাগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যাও বাড়াতে হবে। সূত্র জানায়, এবারের কাউন্সিলে তিনজন যুগ্মসম্পাদকের স্থলে ৫ জন, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা সাত থেকে ৯ কিংবা ১০ সহ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মোট সদস্য সংখ্যা ৭১ থেকে বাড়িয়ে ১০১ জনে উন্নীত করা হতে পারে। দলের একাধিক নেতার সঙ্গে আলোচনা করে জানা গেছে, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ২৮ মার্চ সকালে আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে। এরপর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই কাউন্সিলরদের ভোটে আওয়ামী লীগের আগামী তিন বছরের জন্য নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। এছাড়া কেন্দ্রীয় সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলের নেতারাসহ ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বন্ধুপ্রতীম দেশগুলোর শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদেরও আমন্ত্রণ জানানো হবে। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ উন্নত বিশ্বের রাজনৈতিক দলগুলোকেও আমন্ত্রণ জানানোর চিন্তাভাবনা রয়েছে দলটির নীতি-নির্ধারকদের। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর প্রস্তুতি কমিটি গঠনের তোড়জোড় শুরু হয়েছে। আগের সম্মেলনে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে কেন্দ্রীয় প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার নতুন কাউকে আহ্বায়ক করা হতে পারে। নতুন কাউকে আহ্বায়ক করা হলে সেক্ষেত্রে অভ্যর্থনা উপকমিটির আহ্বায়ক করা হতে পারে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে। এছাড়া কাজী জাফর উল্যাহকে অর্থ কমিটি, আবদুল মান্নান খানকে গঠনতন্ত্র উপকমিটি, আসাদুজ্জামান নূরকে সাংস্কৃতিক উপকমিটি, আবুল হাসনাত আবদুল্লাহকে স্বেচ্ছাসেবক উপকমিটি এবং ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির আহ্বায়ক করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ ঘোষণা করায় দলটিতে এখন একই আলোচনাÑ কে হচ্ছেন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক। সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম কী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে হ্যাটট্রিক করতে যাচ্ছেন? নাকি এ পদে দেখা যাবে চমক দেয়ার মতো কোন নতুন মুখ। তবে দলটির নানাপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে ধারণা পাওয়া যায়, সাধারণ সম্পাদক পদে দৌড়ে এখনও এগিয়ে রয়েছেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই। তবে নতুন কমিটিতে থাকবেন আর কে থাকবেন নাÑ সবকিছুই নির্ভর করছে দলটির প্রধান শেখ হাসিনার হাতেই। আর সভাপতি পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন বিকল্প নেই আওয়ামী লীগে। তিনি সভাপতি হতে না চাইলেও দলটির কোটি নেতাকর্মী ও সমর্থক অন্য কাউকে যে ওই পদে মেনে নেবেন না, তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। তবে গত সম্মেলনে বাদপড়া ডাকসাইটে অনেক নেতা কি আবারও কেন্দ্রের রাজনীতিতে ফিরে আসবেন? কে কে বাদ পড়ছেন? এ নিয়ে দলটিতে আলোচনার কমতি নেই। সম্মেলনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বর্তমানে কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা অনেক নেতা বাদপড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।
×