ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাহরাইনকে বাগে পেয়েও হারাতে পারল না বাংলাদেশ অলিম্পিক দল (১-১)

গোল মিসে জয় বঞ্চিত যুবারা

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

গোল মিসে জয় বঞ্চিত যুবারা

রুমেল খান, যশোর থেকে ॥ সিনিয়রদের পদাঙ্ক ঠিকমতো অনুসরণ করতে পারলো না জুনিয়ররা। বাগে পেয়েও বাহরাইন ফুটবল দলকে হারাতে পারলো না বাংলাদেশ অলিম্পিক ফুটবল দল। ম্যাচ শেষ হবার চার মিনিট আগে বাহরাইনের একজন খেলোয়াড় লাল কার্ড পেয়ে বহিষ্কার হলে বাংলাদেশ দল প্রচ- আক্রমণ শাণিয়েও আরেকটি গোল পেতে ব্যর্থ হলে হতাশা বাড়ে। রবিবার যশোরের শামস-উল-হুদা স্টেডিয়ামে ‘বি’ গ্রুপের খেলায় উভয় দলের ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। বাংলাদেশ দলের ইউসুফ সিফাত এবং বাহরাইন দলের জসীম আল শেখ নিজ দলের পক্ষে গোলগুলো করেন। বাংলাদেশের মিডফিল্ডার রুবেল মিয়া ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার লাভ করেন। বাংলাদেশ অলিম্পিক দলের পরবর্তী খেলা আগামী ১৩ জানুয়ারি, ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে, মালদ্বীপের বিরুদ্ধে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। আর বাহরাইনের পরের গ্রুপ ম্যাচ একইদিন, একই ভেন্যুতে, বিকেল ৩টায়, কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে এই কদিন অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ ফুটবল দল। দলের প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় না পেলেও টুর্নামেন্টে ভাল ফল আশা করেছিলেন দলের স্প্যানিশ কোচ গঞ্জালো সানচেজ মরেনো। বাহরাইনের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়েই প্রথম পরীক্ষায় অবতীর্ণ হলেন তিনি। সে পরীক্ষায় ফুল মার্কস না পেলেও মোটামুটি ভাল নম্বরই পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশ দলের যুবাদের খেলায় বেশ আনন্দই পেয়েছে দর্শকরা। বেশ গতিশীল ও ক্ষিপ্রগতির ফুটবল খেলেছে তারা। পরিস্থিতি অনুযায়ী কখনও লম্বা পাসে, কখনও ছোট পাসে খেলেছে তারা। একাধিক খেলোয়াড়কে দেখা গেছে একক প্রচেষ্টায় খেলতে। শারীরিক সক্ষমতায় বাহরাইনের ফুটবলারদের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও অনেকটা সময় তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই খেলার চেষ্টা করেছে। বাংলাদেশ জাতীয় দল শ্রীলঙ্কাকে হারানোয় বাংলাদেশ অলিম্পিক দলকে নিয়েও যশোরবাসীর প্রত্যাশা বহুগুণে বেড়েছে। তার প্রতিদান দিতে সচেষ্ট ছিল যুবারা। তবে সেটা পুরোপুরি পারেনি। দুঃস্বপ্নের সাফ ফুটবল শেষ হওয়ার পর দরজায় কড়া নাড়ে ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম বড় আসর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। যাকে ঘিরে এবার দেশের ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশার মাত্রাটা যেন একটু বেশি। কারণ জাতীয় দলের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ ফুটবল দলও। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের পাইপ লাইনের খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণের সুযোগ খুব কমই পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার ঘরের মাঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মতো আন্তর্জাতিক আসর হওয়ায় সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে ফেডারেশন। ভবিষ্যতের কথা ভেবে খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতেই টুর্নামেন্টে দুটি দল খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয় বাফুফে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রায় তিন সপ্তাহের অনুশীলন শেষে ২৫ সদস্যের দল নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন মরেনো। যশোরে আসার আগে জানিয়েছিলেন প্রস্তুতির ঘাটতির কথা। তবে ভাল করার ব্যাপারে দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের তাড়নায় আশাবাদী ছিলেন তিনি। ১৯ মিনিটে রুবেল মিয়ার স্কয়ার পাস থেকে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে রিসিভ করে এগিয়ে আসা বাহরাইন গোলরক্ষক মাহবুব আলদোসেরিকে কাটিয়ে চমৎকার মাপা শটে জালে বল পাঠান এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ইউসুফ সিফাত (১-০)। এটাই তার প্রথম আন্তর্জাতিক গোল। গোল করে আবেগবশত জার্সি খুলে গোল উদযাপন করতে গিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি! তবে গোলের এই লিডের আনন্দ বাংলাদেশের জন্য মাটি হয়ে যায় ২৩ মিনিটে। বাহরাইন কাউন্টার এ্যাটাক করে। প্রতিপক্ষ এক খেলোয়াড়ের নিচু ক্রস বাংলাদেশের ডিফেন্ডার-অধিনায়ক রেজাউল করিমের পায়ে লেগে বলের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বাহরাইনের মিডফিল্ডার জসীম আল শেখের পায়ে গেলে তিনি সেই সুযোগটি কাজে লাগাতে ভুল করেননি (১-১)। ব্যবধানটা বাড়াতে পারতো বাংলাদেশ যুব দল। কিন্তু তাদের একাধিক আক্রমণ প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। একই ঘটনা ঘটে বাহরাইন দলের বেলাতেও। শেষ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় বাহরাইন। বাংলাদেশের নাহিদকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন বাহরাইনের বদলি ফরোয়ার্ড আনোয়ার আলী। খেলা শেষ হতে তখনও চার মিনিট বাকি। কিন্তু এই সময় আক্রমণ করেও জয়সূচক গোলটি আদায় করে নিতে পারেনি স্বাগতিক দল। শেষ পর্যন্ত রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজালে দুদলই পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়ে।
×