ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমদানি মূল্য ইউনিটপ্রতি ৬ টাকা ৪৩ পয়সা;###;ওই বিদ্যুত জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে আগামী মাসে

আরও ১০০ মেও বিদ্যুত আসছে ত্রিপুরা থেকে

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

আরও ১০০ মেও বিদ্যুত আসছে ত্রিপুরা থেকে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ত্রিপুরা আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দিতে চায় বাংলাদেশকে। রবিবার অনুষ্ঠেয় সিঙ্গাপুর শেয়ার বাজারে বন্ড ছেড়ে বিদ্যুত প্রকল্পে অর্থ সংগ্রহ সংক্রান্ত সেমিনার শেষে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। শনিবার ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিদ্যুত আমদানির জন্য সাড়ে পাঁচ রুপী (৬ দশমিক ৪৩ টাকা) প্রতি ইউনিটের দর নির্ধারিত হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে ওই বিদ্যুত বাংলাদেশের জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে। প্রতিমন্ত্রী সেমিনার শেষে জানান আরও ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত নেয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। তারা আমাদের প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে এই বিদ্যুত বাংলাদেশে আসবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তবে বাড়তি দামের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, সম্পর্কটাই আসল বিদ্যুতের দাম কোন বিষয় নয়। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ সূত্র জানায়, পলাটানা বিদ্যুত কেন্দ্রের ৭০০ মেগাওয়াটের মধ্যে ত্রিপুরার জন্য ৩০০ মেগাওয়াট দরকার হয়। বাকিটা হয় ত্রিপুরাকে তাদের (ভারতের) জাতীয় গ্রিডে দিতে হবে নয়ত উৎপাদন বন্ধ রাখতে হয়। বাংলাদেশে তারা ১০০ মেগাওয়াট দেয়ার পরও তাদের বাড়তি বিদ্যুত থেকে যাবে। এ অবস্থায় তারাও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুত বিক্রি করতে চায়। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির একজন কর্মকর্তা জানান, ত্রিপুরা বাড়তি বিদ্যুত দিতে চাইলেও এখনই তা আনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে একটি এইচভিডিসি (ব্যাক টু ব্যাক সাবস্টেশন) নির্মাণ করতে হবে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় এ ধরনের সাবস্টেশন নির্মাণ করে ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, যেহেতু ত্রিপুরায় বিদ্যুতের চাহিদা কম সঙ্গত কারণে আমরা মনে করেছিলাম তারা বাড়তি বিদ্যুত আমাদের দিতে চাইবে। যে কারণে আমরা সাবস্টেশনের জমিও দেখে রেখেছি। এদিকে সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশের বিদ্যুত খাতের জন্য ৪০ বিলিয়ন ডলারের বিপুল বিনিয়োগ প্রয়াজন। এই অর্থের কিছুটা সিঙ্গাপুর স্টক মার্কেটে বন্ড ছেড়ে সরকার সংগ্রহ করতে চায়। সেমিনারটি যৌথভাবে বিদ্যুত-জ্বালানি গবেষণা কাউন্সিল এবং ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে আয়োজন করে। সেমিনারে ড্রু এ্যান্ড নেপিয়ার নামে সিঙ্গাপুরের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান তাদের দেশে বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের প্রক্রিয়া তুলে ধরে। সেমিনারে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের আরও ৪০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন কিন্তু এত বিপুল পরিমাণ অর্থ আমাদের অভ্যন্তরীণভাবে সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। এজন্য বিকল্প হতে পারে আন্তর্জাতিক বাজারে বন্ড ছাড়া। এর মাধ্যমে আমাদের দেশেরও ব্রান্ডিং করতে পারি। এই প্রক্রিয়ায় বিদেশী উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাবে। যদিও বাজেটে বিদ্যুত খাতে বরাদ্দ ১৬ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ খরচ করতে পারেনি বিদ্যুত বিভাগ। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর ২৩ প্রকল্পের অগ্রগতি শূন্য আর ১৯টি প্রকল্পর অগ্রগতি ২৫ ভাগের মধ্যে রয়েছে। যেখানে অর্থ খরচ করার সক্ষমতা নেই সেখানে অতিরিক্ত অর্থ যোগাড় কেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সেমিনারে বিদ্যুত সচিব মনোয়ার ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব ড. কায়কাউস আহমেদ, বিদ্যুত বিভাগের বিভিন্ন কোম্পানির প্রধান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. স্বপ্ন কুমার বালা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে ড্রু এ্যান্ড নেপিয়ারের ফারাহানা সিদ্দিকী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
×