ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতু নিয়ে এখনও রাজনীতি চলছে ॥ ও. কাদের

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

পদ্মা সেতু নিয়ে এখনও রাজনীতি চলছে ॥ ও. কাদের

স্টাফ রিপোর্টার, মুন্সীগঞ্জ ॥ সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পদ্মা সেতু নিয়ে এখনও রাজনীতি চলছে। কমিশন খাওয়ার অভ্যাস আমাদের নেই। যাদের আছে তারা কমিশনের কথা বলে পদ্মা সেতুকে আবারও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতে যাচ্ছে। পদ্মা সেতু নিয়ে রাজনীতি না করে এখানে এসে দেখে যান কি কাজ হচ্ছে। রবিবার দুপুরে তিনি মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার দোগাছির পদ্মা সেতু সার্ভিস এরিয়া ওয়ান-এ এক সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন। সেতুমন্ত্রী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশে বলেন, তিনি বলেছেন আমরা কমিশন অন্তর্ভুক্ত হয়েছি। তাই পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বেড়েছে। আসলে আমাদের কমিশন খাওয়ার অভ্যাস নেই। কমিশন খাওয়ার অভ্যাস আপনাদেরই ছিল। কমিশনের কথা বলে পদ্মা সেতুর কাজকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে না দিয়ে আপনার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে পদ্মা পাড়ে এসে দেখে যান এখানে কি হচ্ছে। ১২০ মিটার গভীরে এখন পাইল বসানো হচ্ছে। দেখে যান এখানকার বিশাল কর্মযজ্ঞ। কিভাবে কাজ হচ্ছে। কোথায় অতিরিক্ত কাজ হচ্ছে। কোথায় কমিশন নিচ্ছি। কমিশনের অপবাদ দিবেন না। রাজনীতির উদ্দেশ্যে পদ্মা সেতুর অতিরিক্ত নির্মাণ ব্যয় নিয়ে অন্ধকারে ঢিল ছোড়বেন না। সততা ও স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলবেন না। নিজস্ব অর্থায়নের কাজে আপনাদের কেন জ্বালাপোড়া। বিশ্বব্যাংক চলে গেলেও আমাদের দেশে অনেকেই চায়নি আওয়ামী লীগ পদ্মা সেতু করুক। তারা বাধা দিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে কাজ বন্ধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু বন্ধ করতে পারেনি। এখন এখানে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার মতো অতিরিক্ত ব্যয় বৃদ্ধি পাস হয়েছে। মিডিয়া এটাকে ভাল চোখে দেখছে। তারপরও তারা নোংরা রাজনীতি টেনে আনছে, যা ভাবলে অবাক লাগে। পদ্মা সেতু কোন দলের সম্পদ নয়, এটা দেশের সম্পদ। কিন্তু আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করে বীরত্বে কাজ প্রমাণ করেছি। বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট বলে গেছেন পদ্মা সেতু থেকে সরে যাওয়া তাদের ভুল ছিল। বিশ্বব্যাংক চুরির অভিযোগ করলেও তা প্রমাণ করতে পারেনি। শতভাগ স্বচ্ছতা নিয়েই পদ্মা সেতুর কাজ হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে বিশ্বের ১৭তম বৃহত্তম সেতু। ডলারের দাম ৬৯ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৭৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০১০ সালে ডিপিপি করার সময় পুরোপুরি করা হয়নি। ২০১০ সালের পর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড করতে ৪ বছর লেগেছে। ৫শ’ একর অতিরিক্ত জমি অধিগ্রহণ করতে হয়েছে। মাওয়ায় ১.৩ কিমি নদী শাসনের জন্য ও জাজিরায় ২ কিমি কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে জন্য অতিক্তি জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। উভয় পাড়ে সড়ক নির্মাণ দীর্ঘ ও প্রশস্ত করা হয়েছে। ফলে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, জাইকা মেট্রোরেলের কাজ করছি আমরা। তিন বছর আগে তা পাস হয়েছে। আগামী মাসে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। বর্তমানে রাস্তা খারাপ নেই। রাস্তা খারাপের জন্য দেশে কোন সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে না। বরং চালকদের বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলেই দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। এমনকি কুয়াশার মধ্যেও চালকরা বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। ফলে বঙ্গবন্ধু সেতুতে গত শনিবার দুর্ঘনায় ভূমিমন্ত্রীর ছেলেসহ কয়েকজন মারা গেছে। সেতুমন্ত্রী বলেন, জনকল্যাণ সমিতি নামে একটি ভুয়া সংগঠন গত বছর সড়ক দুর্ঘটনার মারা যাওয়া লোকের যে সংখ্যা দিয়েছে তা সবই ভুয়া। পুলিশের সিহাব অনুযায়ী গত ১১ মাসে ২ হাজার ১শ’৭৭ জন মারা গেছে সড়ক দুর্ঘটনায়। পুলিশের হিসাব যদি ঠিকও না হয়ে থাকে তাতে বড়জোর দ্বিগুণই হবে। কিন্তু ৮ হাজার ৩শ’ লোক কোথায় মারা গেলে তা বোধগম্য নয়। সেতুমন্ত্রী, মোটরযান অধ্যাদেশকে শীঘ্রই আইনে পরিণত করা হবে। বিল আকারে আগামী সংসদ অধিবেশনে তা পাস করা হবে। সে আইনে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হবে। এ সময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (নদী শাসন) সারফুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী (পুনর্বাসন) তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
×