ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পিয়ংইয়ংয়ের হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার পর দক্ষিণ কোরিয়ার দক্ষিণে বি-৫২ বোমারু বিমানের টহল

কোরিয়ায় মার্কিন শক্তি প্রদর্শন

প্রকাশিত: ০৩:২৮, ১১ জানুয়ারি ২০১৬

কোরিয়ায় মার্কিন শক্তি প্রদর্শন

গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু পরীক্ষার পর শক্তি দেখাতে যুক্তরাষ্ট্র এর মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশে নিচু দিয়ে বি-৫২ বোমারু বিমান ওড়ায়। আর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন যে, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের পরমাণু যুদ্ধের হুমকির বিরুদ্ধে এক আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বুধবার হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা চালায়। খবর ইয়াহু নিউজের। উত্তর কোরিয়ার এ চতুর্থ পরমাণু পরীক্ষা যুক্তরাষ্ট্র ও চীন উভয়কেই ক্ষুব্ধ করে তোলে। চীনকে এ বিষয়ে আগেভাগে জানানো হয়নি। তবে বিস্ফোরিত বোমাটি এক হাইড্রোজেন বোমা ছিল বলে উত্তর কোরিয়ার দাবি নিয়ে মার্কিন সরকার ও অস্ত্র বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ পোষণ করছে। মার্কিন সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, গুয়ামভিত্তিক ও পরমাণু অস্ত্র বহনে সমর্থ বি-৫২ বিমানটি ওসান এয়ার বেজের ওপর দিয়ে নিচু দিয়ে উড়ে গিয়ে গুয়ামে ফিরে আসে। একটি মার্কিন এফ-১৬ জঙ্গী বিমান ও এক দক্ষিণ কোরীয় এফ-১৫ জঙ্গী বিমান বি-৫২ বিমানটিকে টহল দেয়। ওসান সিউলের দক্ষিণে এবং উত্তর কোরীয় সীমান্ত থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দূরে অবস্থিত। উত্তর কোরিয়ার সাম্প্রতিক উস্কানিমূলক তৎপরতার জবাবে ওই বিমান ওড়ানো হয় বলে মার্কিন সেনাবাহিনী জানায়। মার্কিন লে. জে. টেরেন্স ও শাফনেসি বলেন, দক্ষিণ কোরিয়াকে রক্ষা করা এবং কোরীয় উপদ্বীপে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতিতে যুক্তরাষ্ট্র অবিচল রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, উত্তর কোরিয়া চলতি বছরের শেষ দিকে এর ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির এক সাধারণ সভার ক্ষেত্র প্রস্তুত করার লক্ষ্যে পরমাণু পরীক্ষাটি চালায়। ১৯৮০ সালের পর এ প্রথম এরূপ সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরমাণু পরীক্ষার ফলে সৃষ্ট ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ১ ডিগ্রী। কোন সঠিক হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা হওয়ার পক্ষে ভূকম্পনের এরূপ মাত্রা খুবই অল্প। কিম বলেন যে, তার দেশের হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদীদের সৃষ্ট পরমাণু যুদ্ধের বিপদ থেকে কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতভাবে রক্ষা করার লক্ষ্যে এক আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ এ কথা জানায়। তিনি বলেন, এটি কোন সার্বভৌম দেশের বৈধ অধিকার। এটি এক ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ যার সমালোচনা কেউ করতে পারেন না। কিমের মন্তব্য উত্তর কোরিয়ার পরমাণু কর্মসূচী যুক্তিসঙ্গত প্রতিপন্ন করতে কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের দায়ে যুক্তরাষ্ট্রকে দোষারোপ করার উত্তর কোরীয় সরকারী প্রচারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, কিন্তু বুধবারের বিস্ফোরণের পর দেশটির নেতা এই প্রথম এরূপ দোষারোপ করলেন। যুক্তরাষ্ট্র জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় কোন মার্কিন পরমাণু অস্ত্র মোতায়েন নেই। কিন্তু ওই পরীক্ষার পর যুক্তরাষ্ট্র কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু অস্ত্র মোতায়েনের বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম বি-২ ও বি-৫২ বোমারু বিমান এবং পরমাণু শক্তিচালিত সাবমেরিনও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে বলে মিডিয়ার খবরে জানানো হয়। দু’কোরিয়ার ১৯৫০-৫৩ সালের যুদ্ধ এর অস্ত্রবিরতির মধ্যে দিয়ে শেষ হওয়ার পর দুটি দেশ আইনত যুদ্ধাবস্থার মধ্যে রয়েছে। কারণ এদের মধ্যে কোন শান্তি চুক্তি হয়নি। দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ২৮ হাজার ৫শ’ সৈন্য রয়েছে।
×