ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাবিখা, টিআর প্রকল্পে বিতরণের আশঙ্কা

কুড়িগ্রামে গুদাম ভরতে ঠাকুরগাঁও থেকে আনা হচ্ছে দুর্গন্ধ চাল

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

কুড়িগ্রামে গুদাম ভরতে ঠাকুরগাঁও থেকে আনা হচ্ছে দুর্গন্ধ চাল

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম ॥ দুর্গন্ধযুক্ত খাওয়ার অযোগ্য চাল প্রোগ্রাম করে ঠিকাদারের মাধ্যমে ঠাকুরগাঁও সদর খাদ্য গুদাম থেকে এনে কুড়িগ্রাম উলিপুর খাদ্য গুদামে ঢুকানোর সময় জনতার বাধার মুখে পড়ে। এসব চালের ৩০ ভাগ আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলেই আটা হয়ে যায়। এমনকি দুর্গন্ধযুক্ত এসব চালে প্রচুর পরিমাণে বালু, হাতিয়া পোকা ও ময়লা রয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ঠাকুরগাঁও গুদামে দুর্নীতির মাধ্যমে কেনা বিপুল পরিমাণ অতি নিম্নমানের আউশ চাল আমন হিসেবে কুড়িগ্রাম জেলা সদরসহ বিভিন্ন গুদামে স্থানান্তর করা হচ্ছে। কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আশরাফুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমি ইতোমধ্যে জেনে ঠাকুরগাঁও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অবহিত করেছি। যেহেতু এসব চাল আমাদের এখানে কেনা নয় সেহেতু নিম্ন মানের সমস্ত চাল ফেরত দিতে সংশ্লিষ্ট গুদাম রক্ষকদের নির্দেশ দিয়েছি। জানা গেছে, ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চাল স্থানান্তরের জন্য প্রোগ্রাম সিডিউল তৈরি করে। সে অনুযায়ী পরিবহন ঠিকাদার এস রহমান এ্যান্ড সন্স ৫ জানুয়ারি ৬৬ দশমিক ৭০ মেট্রিক টন চাল ঠাকুরগাঁও সদর খাদ্য গুদাম থেকে ট্রাকযোগে কুড়িগ্রামের উলিপুর সরকারী খাদ্য গুদামে নিয়ে আসে। চাল গুদামে ঢোকানোর সময় দুর্গন্ধ পেয়ে লেবারসহ স্থানীয় লোকজন বুঝতে পারে এসব খাওয়ার অযোগ্য। এ পরিস্থিতিতে গুদাম রক্ষক একাধিক বস্তা থেকে চাল বের করে নিম্নমানের দুর্গন্ধযুক্ত চাল নিশ্চিত হয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি জানান। তাৎক্ষণিকভাবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, গুদাম রক্ষক মিজানুর রহমানকে ভাল চাল গ্রহণ করে সমস্ত নিম্নমানের চাল ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঐসব নিম্নমানের চাল ফেরত না পাঠাতেই শনিবার আবারও ৩টি ট্রাকে করে প্রায় ৫০ মেট্রিক টন নিম্নমানের চাল উলিপুর খাদ্য গুদামে নিয়ে এলে খাদ্য ব্যবসায়ীদের মাঝে উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে এসব দুর্গন্ধযুক্ত চাল গুদামে ঢোকাতে পারেনি গুদাম রক্ষক। খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, একই রকম দুর্গন্ধযুক্ত চাল কুড়িগ্রামের বিভিন্ন খাদ্য গুদামে ঢোকানো হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে ভিজিডি, টিআর ও কাবিখা প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্নমানের এসব চাল এ অঞ্চলে বিতরণ করা হবে। এসব খাওয়ার অযোগ্য চাল মানুষ খেলে ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণহানির আশঙ্কা করা হয়েছে। উপজেলা মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাজা জানান, আমরা যেসব ভাল চাল এখানে দিয়ে থাকি সেসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে এখন নিম্নমানের চাল আমাদের এখানে নিয়ে আসা হচ্ছে। এটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বরং এসব চাল এলাকায় বিতরণ করা হলে কিংবা কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তাতে স্থানীয় মিল মালিকদেরই সুনাম ক্ষুণœ হবে।
×