ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ যুব দলের মুখোমুখি আজ বাহরাইন

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ যুব দলের মুখোমুখি আজ বাহরাইন

রুমেল খান, যশোর থেকে ॥ বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ টুর্নামেন্টকে সামনে রেখে এই ক’দিন অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-২৩ ফুটবল দল। দলের প্রস্তুতির জন্য খুব বেশি সময় না পেলেও টুর্নামেন্টে ভাল ফল আশা করছেন দলের স্প্যানিশ কোচ গঞ্জালো সানচেজ মরেনো। খেলোয়াড়রা বলেছেন, এই টুর্নামেন্টে ভাল ফল অর্জনের মাধ্যমে সিনিয়র দলের সাফে ব্যর্থতার দুঃখ কিছুটা হলেও দূর করতে চান তারা। ‘আমার দল খেলতে তৈরি আছে। খেলতে তারা মুখিয়ে আছে। নতুন দল। তাই বলে কোন চাপ অনুভব করছি না। আমাদের ভাবনায় শুধুই খেলা এবং জয়।’ মরেনোর ভাষ্য। দলের সহকারী কোচ সৈয়দ গোলাম জিলানী বলেন, ‘এই দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই আমার হাতে গড়া। আসন্ন এসএ গেমসের জন্য এই টুর্নামেন্ট আমাদের জন্য প্রস্তুতির আদর্শ মঞ্চ। এসএ গেমসে যেহেতু তিনজন সিনিয়র খেলোয়াড়কে খেলানো যাবে, তাই এই দলেও তিন-চারজন সিনিয়র খেলোয়াড় নেয়া হয়েছে। আশাকরি এ আসরে আমরা হতাশ করবো না।’ দলের ম্যানেজার সত্যজিৎ দাস রূপু বলেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয় দল শ্রীলঙ্কাকে হারানোয় আমাদের এই দলকে নিয়েও যশোরবাসীর প্রত্যাশা বহুগুণে বেড়েছে। আমরা তার প্রতিদান দিতে সচেষ্ট থাকবো। যদিও প্রতিপক্ষ বাহরাইন সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণা নেই। তারপরও আমরা জেতার চেষ্টা করবো এবং ধাপে ধাপে এগুনোর লক্ষ্য পূরণ করবো।’ দলের অধিনায়ক রেজাউল করিম রেজা বলেন, ‘সেমিতে যেতে হলে প্রথম ম্যাচে জেতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দলটি ভারসাম্যপূর্ণ। দলের সবাই ফিট এবং সুস্থ আছে।’ বাহরাইন দলের কোচ মারজান ইদ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি হয়েছে স্বল্প সময়ের জন্য। এটা অনুর্ধ-২৩ দল হলেও দলের খেলোয়াড়দের বয়স আসলে ২০-২১। কেননা তাদের জন্ম ১৯৯৫-৯৬ সালে। এই দলে জাতীয় দলের কোন খেলোয়াড় নেই। কোন সিনিয়র খেলোয়াড়ও নেই। গত আসরে আমরা গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিলাম। এবার আমরা অন্তত সেমিফাইনাল পর্যন্ত খেলতে চাই। এ জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবো।’ দুঃস্বপ্নের সাফ ফুটবল শেষ হওয়ার পর দরজায় কড়া নাড়ে ঘরোয়া ফুটবলের অন্যতম বড় আসর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। যাকে ঘিরে এবার দেশের ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশার মাত্রাটা যেন একটু বেশি। কারণ জাতীয় দলের পাশাপাশি টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ অনুর্ধ ২৩ ফুটবল দলও। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে জাতীয় দলের পাইপলাইনের খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণের সুযোগ খুব কমই পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার ঘরের মাঠে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের মতো আন্তর্জাতিক আসর হওয়ায় সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে ফেডারেশন। ভবিষ্যতের কথা ভেবে খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে খেলার অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতেই টুর্নামেন্টে দু’টি দল খেলানোর সিদ্ধান্ত নেয়ছে বাফুফে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রায় তিন সপ্তাহের অনুশীলন শেষে ২৫ সদস্যের দল নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন মরেনো। যশোরে আসার আগে জানিয়েছিলেন প্রস্তুতির ঘাটতির কথা। তবে ভাল করার ব্যাপারে দলের প্রতিটি খেলোয়াড়ের তাড়নায় আশাবাদী ছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সাফ ফুটবলে জাতীয় দল ভাল না করার আক্ষেপ ঘোচানোর মঞ্চ হিসেবে দেখছেন দলের খেলোয়াড়রা। তাদের মতে এসএ গেমসের আগে দলের খেলোয়াড়দের সক্ষমতা যাচাই করার সুযোগ করে দেবে এই টুর্নামেন্ট। শনিবার বাংলাদেশ যুব দল অনুশীলন করে বিজিবি গ্রাউন্ডে, আর বাহরাইন পুলিশ লাইন মাঠে। তবে প্রশ্ন উঠেছে ম্যাচ খেলার মাত্র ৩০ ঘণ্টা আগে বাংলাদেশ যুব দলকে বিমানযোগে যশোরে পাঠনো হয়। এতে ক্লান্তির একটা ব্যাপার আছে। তবে এটাকে তেমন বড় করে দেখতে রাজি নন মরেনো। বাংলাদেশ যুব দল তাদের সর্বশেষ ম্যাচ খেলেছে গত বছরের ৩১ মার্চে ঢাকায় এএফসি অনুর্ধ-২৩ চ্যাম্পিয়নশিপে। ভারতের সঙ্গে সে ম্যাচটি তারা শেষ করেছিল ০-০ স্কোরলাইন দিয়ে। এখন দেখার বিষয় আজ বাহরাইনকে হারিয়ে তারা শুভসূচনা করতে পারে কি না বাংলাদেশ জাতীয় দলের মতো।
×