ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জামুকার বাড়তি জনবল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ অধিদফতর পুনর্গঠনের প্রস্তাব

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ১০ জানুয়ারি ২০১৬

জামুকার বাড়তি জনবল দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ অধিদফতর পুনর্গঠনের প্রস্তাব

নাজনীন আখতার ॥ জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে (জামুকা) অতিরিক্ত ৩৪৫ জনবল কাঠামো নিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদফতরে পুনর্গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবে প্রতিটি জেলা-উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হলে ভবনের একাংশকে অধিদফতরের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। এদিকে জামুকাকে অধিদফতরে পুনর্গঠনের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন দিয়ে তা পাঠানোর সুপারিশ জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে জামুকাকে অধিদফতরে উন্নীত করার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে জামুকার মহাপরিচালক মাহফুজার রহমান সরকার জানান, জামুকাকে অধিদফতরে উন্নীতকরণ আইনের খসড়া ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদফতর আইন, ২০১৫’ গত ৯ আগস্ট কাউন্সিলের ৩১তম সভায় অনুমোদিত হয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি কমিটির সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। সংসদীয় কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম ওই সময় জামুকাকে অধিদফতরে উন্নীতকরণের প্রস্তাব পাঠানোর আহ্বান জানান। সংশ্লিষ্টরা জানান, বতর্মানে জামুকার অনুমোদিত জনবল রয়েছে ৪৩ জন। এর মধ্যে ২২ জন কর্মরত আর ২১টি পদশূন্য রয়েছে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে সেক্ষেত্রে অধিদফতরের অর্গানোগ্রাম, পদসংখ্যা, পদের কার্যাবলী, পদ সৃজনের যৌক্তিকতা, নিয়োগ বিধি ইত্যাদি প্রণয়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে। অধিদফতর পুনর্গঠনের জন্য প্রস্তাবিত জনবল কাঠামোর সার-সংক্ষেপ থেকে জানা যায়, অধিদফতরের সদর দফতরের জন্য মোট ৬৮ জনবলের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর মধ্যে ১১ জন প্রথম শ্রেণী, ৭ জন দ্বিতীয় শ্রেণী, ২৭ জন তৃতীয় শ্রেণী এবং ২৩ জন চতুর্থ শ্রেণীর। এতে মহাপরিচালক পদে প্রেষণে একজন অতিরিক্ত সচিব বা যুগ্মসচিব পদমর্যাদার ব্যক্তিকে নিয়োগ করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি যুগ্মসচিব বা উপসচিব পদমর্যাদার ২ জনকে পরিচালক, উপসচিব পদমর্যাদার ২ জনকে উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক পদে ৫ জনকে এবং সহকারী প্রকৌশলী পদে ১ জনকে নিয়োগ দেয়ার উল্লেখ রয়েছে প্রস্তাবিত জনবল কাঠামোতে। এছাড়া জেলা পর্যায়ে আরও ৩২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ জন প্রথম শ্রেণী, ৬৪ জন দ্বিতীয় শ্রেণী, ৬৪ জন তৃতীয় শ্রেণী এবং ১২৮ জন চতুর্থ শ্রেণীর। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রতিটি জেলা-উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের প্রকল্প চলমান আছে। ওইসব ভবনের একাংশকে প্রস্তাবিত মুক্তিযোদ্ধা অধিদফতরের কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। জানা গেছে, জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল ২০০২ সালের ৭ এপ্রিল ৮ নং আইন বলে প্রতিষ্ঠিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কিত বিষয়ে কাজ করে থাকে কাউন্সিল। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রণয়ন, সনদপত্র ও প্রত্যয়নপত্র প্রদানে এবং জাল ও ভুয়া সনদপত্র ও প্রত্যয়নপত্র বাতিলের জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করে। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নিবন্ধীকরণ, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণসহ মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচী নিয়ে থাকে কাউন্সিল। সংসদীয় কমিটির কাছে দেয়া প্রতিবেদনে জামুকা উল্লেখ করেছে, কাউন্সিলের বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, তা সুষ্ঠু ও সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য এবং জামুকা আইন ২০০২ এ বর্ণিত যে ১০টি কাজ উল্লেখ রয়েছে তার প্রতিটি কার্যক্রম পুর্ণোদ্যমে শুরু করার জন্য জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলকে অধিদফতরে রূপান্তর করা প্রয়োজন।
×