ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দক্ষিণ জনপদে আলম সাধুর বিকল্প নেই

প্রকাশিত: ০৫:২১, ৯ জানুয়ারি ২০১৬

দক্ষিণ জনপদে আলম সাধুর বিকল্প নেই

এক সময় বরযাত্রী, বৌভাত, পিকনিক বা চড়ুইভাতির অনুষ্ঠানে গরু, মোষ ও ঘোড়ারগাড়ি অথবা নৌকায় রং বেরংয়ের কাগজ ও ফুল দিয়ে সাজিয়ে মাইক বাজিয়ে চুয়াডাঙ্গার গ্রামীণ জনপদ মাতানো হয়েছে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে, হাসপাতাল থেকে লাশ নিতে কিংবা মৃত্যু সংবাদ জানাতে গ্রাম থেকে গ্রামে বা গ্রাম থেকে শহরে যেতে এসব যোগাযোগ ব্যবস্থার বিকল্প ছিল না। বউদের বাপের বাড়ি, শিক্ষার্থীদের স্বুল-কলেজ এবং পণ্য পরিবহনেও গ্রামবাংলার মানুষকে এই যোগাযোগ মাধ্যমকেই বেছে নিতে হয়েছে। এখন সে জায়গা দখল করেছে নছিমন, করিমন, অটো ও আলমসাধু। তবে এর মধ্যে পণ্য ও যাত্রী বহনে আলমসাধু অন্যতম। চুয়াডাঙ্গা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত মাথাভাঙ্গা, ভৈরব, কুমার, নবগঙ্গা, ভাইমারা, কপোতাক্ষ ও চিত্রা নদীতে একসময় জাহাজ, ফেরি, নৌকা ও বোট চলেছে। এখন এসব নদী মৃতপ্রায়। বর্ষার সময় মাথাভাঙ্গা ও ভৈরব নদীতে শুধুমাত্র ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মালামাল বহন করতে দেখা যায়। অন্যান্য সময় মাছ ধরা নৌকা ও বোট চলে। অপরদিকে জেলার ১১৪৭ কিলোমিটার স্থলপথে বাস-ট্রাক, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটের পাশাপাশি আলমসাধু অন্যতম যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যার পর যাত্রীবাহী বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামীণ জনপদে আলমসাধুর বিকল্প থাকে না। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১০ হাজার আলমসাধু চলাচল করে। এগুলো জেলার বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়। এরমধ্যে সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ, বদরগঞ্জ ও দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা বাজার অন্যতম। এসব জায়গায় রয়েছে ১০/১২টি কারখানা। যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৭/৮টি আলমসাধু তৈরি হয়। যার প্রতিটির মূল্য ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আলমসাধু চালক হাকিম জানান, বেকার অবস্থায় কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না। পরে আলমসাধু চালানো শিখে ৬০ হাজার টাকায় পুরনো গাড়ি কিনি। মালামাল ও যাত্রী পরিবহন করে এখন প্রতিদিন খরচ বাদ দিয়ে গড়ে ৫/৬শ’ টাকা আয় করি। আলমসাধু চালক মিরাজুল বলেন, এক লাখ টাকায় কুষ্টিয়ার ভাদালী থেকে গাড়িটা কিনি। এরপর থেকে যাত্রী ও পণ্য বহন করে প্রতিদিন ৬/৭শ’ টাকা আয় করি। সংসার ভালভাবে চলে যায়। আলমসাধু যাত্রী স্কুলছাত্রী সাথী, শম্পা ও ইসমতআরা জানায়, প্রতিদিন গ্রাম থেকে শহরের স্কুল ও শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়তে আসি। এ রাস্তায় যাত্রীবাহী বাস চলে না। তাই আমরা আলমসাধুতে যাতায়াত করি। খরচও কম হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলার গ্রামীণ জনপদ এমনকি শহরের রাস্তায়ও আলমসাধু চলে। শ্যালো ইঞ্জিনচালিত এ যানবাহন নিষিদ্ধ হলেও জনমানুষের প্রয়োজনে চলছে। দুর্ঘটনাও ঘটছে। Ñরাজীব হাসান কচি চুয়াডাঙ্গা থেকে
×