ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে উড়ন্ত সূচনা বাংলাদেশের

প্রকাশিত: ০৫:০৪, ৯ জানুয়ারি ২০১৬

শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে উড়ন্ত সূচনা বাংলাদেশের

রুমেল খান, যশোর থেকে ॥ লঙ্কান লায়ন্সকে হারিয়ে শুভসূচনা বেঙ্গল টাইগারদের। নতুন বছর মানেই আনন্দ। আর সে আনন্দটা যদি শুরু হয় মধুর জয় দিয়ে, তাহলে তো পোয়াবারো। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল দেশবাসীকে এনে দিয়েছে সেরকমই এক আনন্দের উপলক্ষ। শুক্রবার তারা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে গ্রুপ ‘এ’র খেলায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে ৪-২ গোলে শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে। বাংলাদেশের সাখাওয়াত হোসেন রনি জোড়া গোল করেন। বাকি দুটি গোল করেন জাহিদ হোসেন এবং নাবিব নেওয়াজ জীবন। এ জয়ে শেষ চারে উন্নীত হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল বেঙ্গল টাইগাররা। তাদের পরবর্তী গ্রুপ ম্যাচ আগামী ১২ জানুয়ারি, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়, ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে। প্রতিপক্ষ বর্তমান শিরোপাধারী মালয়েশিয়া। শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গত আসরের ফলের ধারাবাহিকতা বজায় রাখল বাংলাদেশ। সেবার ২ ফেব্রুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ওই ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। ১৭৯ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশ এবং ১৮৮ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী শ্রীলঙ্কা এ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ম্যাচে পরস্পর মুখোমুখি হয়েছে ১৬ বার। বাংলাদেশের জয়ের পাল্লাই ভারী। তারা জিতেছে ১১ বার। শ্রীলঙ্কা জিতেছে ৩ বার। বাকি ২ ম্যাচ ড্র হয়। বাংলাদেশের ২৫ গোলের বিপরীতে শ্রীলঙ্কা করেছে ১২ গোল। ‘সাফে অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আমরা পারিনি। এই টুর্নামেন্টে ছেলেদের মধ্যে জয়ের জন্য কিছু করার একটা মানসিকতা ছিল। প্রথম ম্যাচে জেতা ছিল আমাদের প্রথম লক্ষ্য। সেটি হয়েছে। এখন লক্ষ্য পরবর্তী ম্যাচ জিতে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা।’ শুক্রবার শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে এমনটাই বললেন বাংলাদেশ দলের কোচ মারুফুল হক। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেনÑ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, সহসভাপতি বাদল রায়, তাবিথ আউয়াল, কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ, সদস্য শেখ মোঃ আসলাম, ফজলুর রহমান বাবুল, সামশুল হক চৌধুরী এমপি, যশোর জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব কবির, জেলা ফুটবল এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আসাদুজ্জামান মিঠু, বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমান প্রমুখ। দুই হাজার বেলুন এবং ফেস্টুন একযোগে উড়িয়ে টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করা হয়। যশোরে এ ধরনের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এবারই প্রথম। উৎসাহটা স্বভাবতই বেশি। ধারণা করা হয়েছিল, এবার বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে গ্যালারিতে থাকবে উপচেপড়া দর্শক। কিন্তু শুক্রবার নব্বই শতাংশ আসন পূর্ণ ছিল। এর নেপথ্যে কারণ যশোর জেলা প্রশাসকের টিকেট অব্যবস্থাপনা। এদিন টিকেট কালোবাজারি করার সময় তিনজনকে আটক করে স্থানীয় পুলিশ। প্ল্যাকার্ড, ভুভুজেলা, ঢোল, করতালি, চিৎকার... গ্যালারিতে ছিল সবই। এগিয়ে চলো, বেস্ট অব লাক বাংলাদেশ... কেউবা লিখেছেনÑ যশোরে আরও ফুটবল চাই। ম্যাচের ঘণ্টাখানেক আগে স্টেডিয়ামে মামুনুলরা ঢুকলেন দর্শকদের উষ্ণ অভ্যর্থনা নিয়ে। মাঠ ছাড়লেন তার চেয়েও বেশি ভালবাসা নিয়ে। প্রথম ম্যাচে জয় মানেই আত্মবিশ্বাসের পারদটা উর্ধ্বমুখী হওয়া। টুর্নামেন্টের শিরোপা জয়ে যেটা খুব সম্প্রতি সাফ ব্যর্থতায় মানসিক অবস্থাটা খারাপ ছিল বাংলাদেশ জাতীয় দলের। প্রত্যাশা ছিল শুরুটা অন্তত জয় দিয়ে হোক। দর্শকরাও প্রত্যাশা করেছিলেন প্রিয় দল ঘুরে দাঁড়াবে সাফ ব্যর্থতা ভুলে। দর্শকরা যতটা চেয়েছিলেন তার থেকে বেশিটাই পেলেন। এখন দেখার বিষয়, পরের ম্যাচেই মালয়বাহিনীকে পরাভূত করে শেষ চারে যাওয়াটা নিশ্চিত করে দেশবাসীকে আরও বেশি আনন্দ উপহার দিতে পারে কিনা লাল-সবুজের বাংলাদেশ।
×