ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে প্রযুুক্তিগত দিক- বাধ্যতামূলক হয়েছে মোবাইল ফোনের সিম নিবন্ধন ;###;সিম মনিটরিং হবে অত্যাধুনিক সাইবার ল্যাবে

জঙ্গী নির্মূলে মাস্টারপ্ল্যান ॥ মহাপরিকল্পনার জাল বিস্তৃত হচ্ছে গ্রামেও

প্রকাশিত: ০৫:০২, ৯ জানুয়ারি ২০১৬

জঙ্গী নির্মূলে মাস্টারপ্ল্যান ॥ মহাপরিকল্পনার জাল বিস্তৃত হচ্ছে গ্রামেও

গাফফার খান চৌধুরী ॥ জঙ্গীবাদ নির্মূলে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ চলছে। অজপাড়াগাঁ পর্যন্ত মাস্টারপ্ল্যানের আওতায় থাকছে। এই মহাপরিকল্পনায় বিশেষ প্রাধান্য পাচ্ছে প্রযুক্তিগত দিক। তারই অংশ হিসেবে ব্যক্তির সঠিক পরিচয়ে সিমসহ মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। জঙ্গীবাদ বিশ্লেষকরা বলছেন, বেনামে মোবাইল ফোনের সিম বিক্রি বন্ধ করা সম্ভব হলে জঙ্গীবাদের বিস্তার মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য। আর বৈধ মোবাইল ফোন দিয়ে জঙ্গী কার্যক্রম চালানো অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ বৈধ মোবাইল ফোন মনিটরিং করা হচ্ছে অত্যাধুনিক সাইবার ল্যাব ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে। জঙ্গী অর্থায়ন বন্ধ করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি বিভাগে থাকা বিশেষ সেল তৎপরতা চালাচ্ছে। মাস্টারপ্ল্যানের ৭৫ ভাগ বাস্তবায়নও সম্ভব হলে বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ কোনদিনই মাথাচাড়া দিতে উঠতে পারবে না বলে ইসলামী চিন্তাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। ইতিহাস বলছে, ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের মদদে দেশে জঙ্গীবাদের ব্যাপক বিস্তার ঘটে। জঙ্গী সংগঠনগুলো দেশব্যাপী একের পর এক বোমা হামলা চালাতে থাকে। ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩ জেলায় (মুন্সীগঞ্জ বাদে) যুগপৎ বোমা হামলার পর বিশ্বব্যাপী আলোচনায় আসে জেএমবি। এরপর আওয়ামী লীগ ক্ষমতা লাভের পর হুজি, জেএমবি, শাহাদত-ই-আল হিকমা, হিযবুত তাহরীরসহ বেশ কয়েকটি জঙ্গী সংগঠন নিষিদ্ধ হয়। জঙ্গী সংগঠনগুলো অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মে আসার চেষ্টা করে। তারা আইডিপি (ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি) নাম ধারণ করে। আইডিপি রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদনও জমা দেয়। পরবর্তীতে আইডিপির মূল উদ্দেশ্য প্রকাশিত হলে সে প্রক্রিয়া ভেস্তে যায়। এরপর থেকেই জঙ্গী ও উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলো নামে বেনামে ছোট ছোট দল গঠন করে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে থাকে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে চোরাগোপ্তা হামলার তীব্রতা বাড়ায়। গত বছরের ৫ জানুয়ারি বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী টানা হরতাল অবরোধে তা মারাত্মক আকার ধারণ করে। রাজনৈতিক কর্মসূচীর আড়ালে মারাত্মক নাশকতা চালানোর পাশাপাশি জঙ্গীবাদ আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, বিদেশী হত্যা, মসজিদ, মন্দিরসহ ধর্মীয় উপাসনালয়ে একের পর এক হামলার ঘটনা ঘটে। এসব হামলার পর ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন আইএস ও আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ শাখার (একিউআইএস) নামে দায় স্বীকার করে একের পর এক বিবৃতি আসে। এতে কয়েকটি দেশ বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে। যদিও এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে আইএসের তৎপরতা থাকার কোন তথ্য প্রমাণ মেলেনি। তবে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনগুলোর স্বল্প পরিসরে তৎপরতা থাকার বিষয়টি সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে তা আরও বাড়তে পারে। এজন্য জঙ্গীবাদের তৎপরতা সমূলে উৎপাটন করতে সরকারের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নের কাজ চলছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশে প্রায় ৩ লাখ মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে অন্তত ৫ লাখ ইমাম রয়েছেন। দেশে থাকা কমপক্ষে ২০ হাজার কওমী মাদ্রাসায় অন্তত ১ লাখ শিক্ষক, আর মাদ্রাসা বোর্ডের অধীন থাকা অন্তত ৫ হাজার আলিয়া মাদ্রাসায় অর্ধলাখ শিক্ষক রয়েছে। এরা শিক্ষকতার পাশাপাশি ইসলামী চিন্তাবিদ হিসেবেও স্বীকৃত। দেশে অন্তত ১১ লাখ ইসলামী চিন্তাবিদ রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে অন্তত ৫ লাখই অত্যন্ত উঁচুমানের। এদের মধ্যে অন্তত ১ লাখ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রায় ৩ লাখ মসজিদের সঙ্গেই তাদের কোন না কোনভাবে যোগাযোগ আছে। এসব মসজিদে পবিত্র জুমার নামাজের আগে জঙ্গীবাদ বিরোধী খুতবা দেয়া হয় কিনা তা তদারকি করছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তালিকাভুক্ত ৬০ হাজার শিক্ষক ও প্রায় ৫ হাজার কর্মকর্তা। জঙ্গীবাদ বিস্তার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা দেশের সবচেয়ে বড় শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের ইমাম আল্লামা মাওলানা ফরিদউদ্দীন মাসউদ বলছেন, মূলত পবিত্র ইসলাম ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে জঙ্গীবাদ বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা চলছে। এসব অপব্যাখ্যা আসছে দেশের কতিপয় মসজিদের ইমাম, মাদ্রাসা, বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও আলেমদের কাছ থেকে। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এক লাখ ইসলামী চিন্তাবিদের মধ্যে বিশেষভাবে স্বীকৃত ৮শ’ জনের সহায়তায় ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা সংবলিত ফতোয়ার একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। খসড়া ফতোয়াটি ৫ জন অত্যন্ত উঁচুমানের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ পর্যালোচনা করছেন। চূড়ান্ত অনুমোদনের পর আট পৃষ্ঠার সেই ফতোয়া তৈরি হবে। সেই ফতোয়ায় ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা এবং সেই ব্যাখ্যার পক্ষে পবিত্র কোরান হাদিসের আলোকে ব্যাখ্যা থাকবে। অন্তত একলাখ বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদের যাচাই বাছাই শেষে অনুমোদন দেয়ার পরেই সেটি ছাপার কাজ শুরু হবে। সেই ফতোয়া দেশের প্রতিটি মসজিদ ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানো হলে ইসলামের অপব্যাখ্যা সম্পর্কে মানুষের ভুল ভেঙ্গে যাবে। যা দেশে জঙ্গীবাদ বিস্তাররোধে সহায়ক হবে। ইসলামী এই চিন্তাবিদ আরও বলেছেন, মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে জামায়াত যে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তা আজকের আইএসের চেয়েও ভয়ঙ্কর। যে দেশে জামায়াতে ইসলামীর মতো দল থাকে, সে দেশে আইএস থাকার প্রয়োজন হয় না। জঙ্গীবাদের বিস্তারের পেছনে আর্থিক ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে জামায়াত-শিবির ও তাদের নিয়ন্ত্রণাধীন আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। জামায়াত-শিবিরের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সঠিক জবাবদিহিতার আওতায় আনা সম্ভব না হলে দেশ থেকে জঙ্গীবাদ নির্মূল কঠিন হবে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, দেশের প্রায় সব মসজিদ ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির তালিকা সংগ্রহ করে পর্যালোচনা চলছে। কমিটিতে জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িতদের আলাদা তালিকা তৈরি হচ্ছে। তাদের নাম মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের কমিটি থেকেও বাদ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জিনের মাধ্যমে যারা জঙ্গীবাদ উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, দেশে কোন আইএসের তৎপরতা নেই। তবে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠনগুলো ছোট ছোট দলে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গীবাদ প্রতিহত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বলেছেন, এক লাখ আলেম ওলামা স্বাক্ষরিত ফতোয়াটি বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসায় প্রচারের ক্ষেত্রে পুলিশ সহায়তা করবে। ইসলামী মাহফিলগুলোতে জঙ্গীবাদের কুফল সম্পর্কে আলেম ওলামা ও পুলিশের তরফ থেকে বক্তব্য রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে সংযোজন করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। পুলিশের তরফ থেকে স্থাপন করা হয়েছে সাইবার ল্যাব। এমন প্রযুক্তি রয়েছে র‌্যাবসহ অন্যান্য সকল গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে। জঙ্গীবাদ দমনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কাছে পর্যাপ্ত উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। সেসব প্রযুক্তি পুরোদমে কাজে লাগানো হচ্ছে। জঙ্গীবাদ নির্মূলে পুলিশের এলআইসি (লফোল ইন্টারসেপশন) শাখা কাজ করছে। সম্মিলিত তৎপরতার কারণে একের পর এক জঙ্গীরা গ্রেফতার হচ্ছে। অধিকাংশ ব্লগার হত্যার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। অন্যগুলো উদ্ঘাটনের পথে। হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের বেশিরভাগই গ্রেফতার হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জঙ্গী অর্থায়ন ঠেকাতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিটি সেক্টরে বিশেষ সেল রয়েছে। সেসব সেল দেশের প্রায় সকল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে তদারকি করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মানিলন্ডারিং ও জঙ্গী অর্থায়ন বিষয়ক সেল এ ক্ষেত্রে বিশেষ তদারকি করছে। জঙ্গী অর্থায়ন তদারকি করা একটি বিস্তর বিষয়। অনেক সময় বহু মাধ্যম ঘুরে জঙ্গী অর্থায়ন হয়, যা সহজেই প্রমাণ করা সম্ভব হয় না। তবে মোটাদাগে রাষ্ট্রীয়ভাবে বাংলাদেশে জঙ্গী অর্থায়নের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। ব্যাংকিং চ্যানেলে জঙ্গী অর্থায়ন ঠেকাতে এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করা হয়েছে। ব্যাংকগুলোর ওপর নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। যদি কোন ব্যাংক জঙ্গী অর্থায়নে জড়িত থাকে, সেসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। জঙ্গী অর্থায়নের দায়ে বিশেষ একটি ইসলামী ব্যাংককে ১০ কোটি টাকা জরিমানা গুনতে হয়েছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির লেনদেনের ওপর আরোপ করা হয়েছে নানা কঠিন শর্ত। জঙ্গীবাদ নির্মূলের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেছেন, জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্যপুস্তকে ইতিহাস ও সংস্কৃতি তুলে ধরার মাধ্যমে জঙ্গীবাদবিরোধী মানসিকতা গড়ে তোলা দরকার। এজন্য দরকার জনগণের ঐক্য। বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের জঙ্গী গোষ্ঠীগুলোর যোগাযোগ আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অর্থের যোগানও আসছে। অর্থ যোগানের এসব পথ বন্ধ করতে হবে। সম্প্রতি ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী তারানা হালিম জঙ্গীবাদসহ সকল ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে এবং অপরাধীদের শনাক্ত করতে মোবাইল ফোনসহ সিম রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দিয়েছেন। ঘোষণাটি বাস্তবায়ন সম্ভব হলে দেশে অপরাধ ও জঙ্গীবাদ মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর বৈধ মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে জঙ্গীবাদের বিস্তার ঘটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। কারণ এসব প্রযুক্তির নিয়মিত মনিটরিং চলছে। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ নির্মূলের বিষয়ে বিশিষ্ট নিরাপত্তা বিশ্লেষক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুর রশীদ বলছেন, যেসব আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জঙ্গী অর্থায়ন হয়ে থাকে, সেগুলো নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার। এসব আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই জামায়াতে ইসলামী ও বিভিন্ন উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলো দ্বারা পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত। এছাড়া পবিত্র ইসলাম ধর্মের খ-িত ব্যাখ্যা দিয়ে যেভাবে জঙ্গীবাদ বিস্তার ঘটানোর চেষ্টা চলছে, তা প্রতিহত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য ইসলামী চিন্তাবিদদের দিয়ে ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা দেয়া জরুরী। বিশ্বের যেসব দেশ বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ বিস্তার ঘটাতে সহায়তা করছে, তাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখার বিষয়ে সরকারের আরও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ বিস্তারে পাকিস্তানের সহযোগিতা করার বিষয়টি নানাভাবেই উঠে এসেছে। সরকারের উচিত এখনই এ বিষয়ে সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেয়া। জঙ্গীবাদ বিস্তাররোধে শিক্ষা খাতকে অধিক গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করার কথা বলেন তিনি। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা লাভের পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন জঙ্গীবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ক একটি বিশেষ সেল গঠন করে। সরকারের প্রতিটি মন্ত্রণালয়কে সেলের সদস্য করা হয়। সেলের অন্যতম সদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জঙ্গীবাদ বিরোধী প্রচার চালানোর বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। এমনকি নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি, স্বীকৃতি নবায়ন ও শাখা অনুমোদনের ক্ষেত্রে জঙ্গীবাদ বিরোধী কার্যক্রম চালানো বাধ্যতামূলক করা হয়। কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জঙ্গীবাদ বিরোধী কার্যক্রম না চালালে ওসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করার নির্দেশ রয়েছে। দেশের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসব কার্যক্রম পুরোপুরি পালিত হচ্ছে না।
×