ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান গণজাগরণ মঞ্চের

প্রকাশিত: ০৬:০১, ৮ জানুয়ারি ২০১৬

পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে সংসদে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান গণজাগরণ মঞ্চের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলতি সংসদ অধিবেশনে পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডাঃ ইমরান এইচ সরকার। যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করে বৃহস্পতিবার শাহবাগে সকাল ১০টা থেকে অবস্থান নেয় মঞ্চের কর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ থেকে হরতালবিরোধী মিছিল বের হয়। মিছিলটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার শাহবাগে ফিরে আসে। ইসলামাবাদে বাংলাদেশের কূটনীতিক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে আজ শুক্রবার প্রজন্ম চত্বরে গণসমাবেশ করবে গণজাগরণ মঞ্চ। অবস্থান কর্মসূচীতে ইমরান এইচ সরকার বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের ধারাবাহিক বিচারে দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। তবে এ বিচারে যেন কোনভাবেই দীর্ঘসূত্রতা সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার প্রক্রিয়া চলমান আছে সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। যাদের রায় হয়েছে সেসব রায় দ্রুত কার্যকর করে যুদ্ধাপরাধীমুক্ত মুক্তিযুদ্ধের আকাক্সক্ষার বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার যত বিলম্ব হবে, যুদ্ধাপরাধীরা এবং তাদের সহযোগীরা দেশে খুন, সহিংসতা করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা করে যাবে। তাই আর কোন কালক্ষেপণ না করে দ্রুত যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াত নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান তিনি। কুখ্যাত দুই যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদ- কার্যকরের পর তাদের সন্তানদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা এদেশের মানুষের ওপর নির্মম অত্যাচার করেছে, হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণের মতো অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হওয়ায় সারাদেশের মানুষ ন্যায়বিচার পেয়েছে। রাজাকারদের আস্ফালনের উপযুক্ত জবাব বাংলাদেশের মানুষ দিয়েছে। রাজাকারের সন্তানদের এই ঔদ্ধত্ব্যের জবাবও সময় মতো দেয়া হবে। সাকা-মুজাহিদের মৃত্যুদ- কার্যকরের পর পাকিস্তানের বিবৃতির প্রতিবাদ জানিয়ে ইমরান এইচ সরকার বলেন, পাকিস্তান তার দালালদের রক্ষা করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। যুদ্ধাপরাধীদের রায় কার্যকর হলেই পাকিস্তানের বক্তব্য-বিবৃতি থেকে বোঝা যায়, এই যুদ্ধাপরাধীরা মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে আজীবন পাকিস্তানের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে গেছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে পাকিস্তান নাক গলানো বন্ধ না করলে কাদের মোল্লার রায়ের পর যেভাবে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে হাইকমিশন ঘেরাও করতে রাজপথে নেমে এসেছিল, প্রয়োজনে আবারও জনগণ পাকিস্তানের ধৃষ্টতার জবাব দেবে। সংসদের চলমান অধিবেশনে পাকিস্তানের বিবৃতির বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানিয়ে ইমরান বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষাবলম্বন করে পাকিস্তান যে বিবৃতি দিয়েছে, তা প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত দেশটির সঙ্গে সব কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করতে হবে। জামায়াতের ডাকা হরতাল প্রতিহতের দায়িত্ব সাধারণ জনগণ নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে বলে জানান ইমরান এইচ সরকার। তিনি বলেন, দেশের সর্বস্তরের মানুষ যার যার কাজে যোগদান করে, রাস্তায় বেরিয়ে জামায়াতের হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ততার কারণে হরতাল প্রতিহত করতে কোন সংগঠিত শক্তির প্রয়োজন পড়েনি। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াফত করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীরা এদেশের মানুষকে শোষণ করে তৈরি করা তাদের অঢেল সম্পদ এদেশের মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বিঘিœত করতে কাজে লাগাচ্ছে। তাদের মদদে এদেশে জঙ্গীবাদী গোষ্ঠী বেঁচে আছে। যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াফত করে শহীদ পরিবার এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যয় করতে হবে। গান, কবিতা ও সেøাগানের মাধ্যমে হরতালবিরোধী অবস্থান চালিয়ে যান গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা। আজ গণসমাবেশ ॥ রাজধানীর শাহবাগে আজ বিকেলে গণসমাবেশের ডাক দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। ইসলামাবাদে বাংলাদেশের কূটনীতিক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে এ কর্মসূচী ডাকা হয়েছে। বৃহস্পতিবার মঞ্চের মুখপাত্র ডাঃ ইমরান এইচ সরকার এ কর্মসূচীর কথা জানান। বার্তায় বলা হয়, বাংলাদেশের কূটনীতিক প্রত্যাহারের প্রতিবাদে ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্র’ পাকিস্তানের সঙ্গে সব কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে শুক্রবার বিকেল ৪টায় শাহবাগে গণসমাবেশ করা হবে। এতে সবার যোগ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
×