ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

উবাচ

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৮ জানুয়ারি ২০১৬

উবাচ

কেউ ভোট দেয় না! স্টাফ রিপোর্টার ॥ বন্দুকের জোরে ক্ষমতাদখলকারী সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ৩০ মে ১৯৮১ নিহত হওয়ার পর রাজনৈতিক অভিলাষ প্রকাশ পায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের। রাষ্ট্রপতি আব্দুস সাত্তারকে হটিয়ে ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ এরশাদ দেশে পুনরায় সামরিক শাসন জারি করেন। জেনারেল জিয়া হত্যাকা-ের পর ব্যক্তির বদল হলেও শাসনের চরিত্রে জেনারেল এরশাদ ফের এক নায়কতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন। সেই থেকেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক আলোচিত সমালোচিত নাম ‘এরশাদ’। ধাপে ধাপে জনপ্রিয়তা হারানো এরশাদের ৩৩ বছর নয় মাস ১০ দিনের রাজনৈতিক জীবন বিশ্লেষণ করে দেখা যায় একক ক্ষমতার উৎস হিসেবে তার দাপটেই কেটেছে নটি বছর। আর নব্বই পরবর্তী সময়ে নয় বছরের অবরুদ্ধ অবস্থা বাদে খুব সুবিধাজনক অবস্থানেই ছিলেন স্বৈরাচার এরশাদ। এরমধ্যে এক মেয়াদে সরকারের অংশীদার ছিল আর পরবর্তী মেয়াদে বিরোধীদলে থেকে সরকারের অংশীদারিত্ব করছে জাতীয় পার্টি। অথচ দলীয় প্রতীক নিয়ে পৌর নির্বাচন করতে গিয়ে ভ্যাবাচ্যাকা দশা তাদের। ৩৩ বছর কেটে ৩৪ স্পর্শ করার পূর্বমুহূর্তে এরশাদ বলছেন, ইমেজ নেই আর, তাই লোকে ভোট দিচ্ছেন না। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে কোনকালেই কি ইমেজ ছিল তার? বিশ্ববেহায়া থেকে স্বৈরাচার- তার নামের আগে বিশেষণের শেষ নেই। এই তো সেদিনের কথা তিনি পার্টির সকলকে ডেকে বললেন- বলেন, ক্যান এই রকম হচ্ছে, ক্যান মানুষ বিশ্বাস করছে না। দলের সবাই নির্ভয়ে বলা যাবে কী না জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন আমি কি বাঘ না ভাল্লুক, নির্ভয়েই বলেন। সকলে বলল, স্যার আপনার মুখটা সামলান। সকালে ডিম বললে বিকালে বলেন মুরগি, মানুষ তো আর ভরসা পায় না। এরপর যারা মুখের উপর সমালোচনা করেছিলেন তাদের কি অবস্থা হয়েছে তা কেবল তারাই জানেন। পার্টি প্রধানের সমালোচকদের দল থেকে বের করে দিয়ে তিনি জাতীয় পার্টি পরিচ্ছন্ন করেছিলেন। ভোটের রাজনীতিতে এরশাদ একটা ফ্যাক্টর ছিল। এজন্য দুই বড় দলই এরশাদকে নির্বাচনে প্রত্যাশা করত। আর এরশাদ কার সঙ্গে যাবেন আর কার সঙ্গ ছাড়বেন তা নিয়ে বহু টালবাহানা করেছেন। যখন জনগণ তার টালবাহানা বুঝে গেছে তখন এরশাদও বুঝেছেন আসলে এভাবে আর হবে না। পৌর ভোটের পর বলেই ফেলেছেন, ইমেজ সঙ্কটের কারণে আমাদের কেউ ভোট দেয় না। তাই পৌরসভা নির্বাচনে আমরা ভোট পাইনি। যদিও এই সহজ কথা অনেকেই স্বীকার করেন না বা করতে চান না। ভোটে হারলে নিজেদের দুর্বলতা না খুঁজে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করাই প্রধান কাজ হয়ে গেছে এখন। বিশেষ করে বড় দল বিএনপি বুক চাপড়াচ্ছে কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে জোট করে, নির্বিচারে পেট্রোলবোমা মেরে জীবন জ্বালিয়ে দিয়ে সেই মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার সময় ফুরিয়ে গেছে। অনুশোচনা দিবস! স্টাফ রিপোর্টার ॥ কুরসি পাই কি, না পাই গদিতে বসা যাবে কি যাবে না এমন দোলাচলে বিএনপি একেবারে বর্জন করে বসে ৫ জানুয়ারি। প্রথম বছর মনে করেছিল জোরেশোরে ধাক্কা দিলে সরকার ফেলে দেয়া কোন বিষয় না। এজন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া গো-ধরে বসলেন, দলীয় কার্যালয় তিনি ছাড়বেন না তো ছাড়বেনই না। সারাদেশ জ্বালিয়ে দিয়ে তিনি শান্ত হলেন। তবে অজস্র মানুষের জীবন কেড়ে নেয়ার মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের বিপাকে ফেলে দিলেন। যারা প্ররোচনায় সায় দিয়ে পেট্রোলবোমা মেরে মানুষ হত্যা করল তাদের ঠিকানা হলো কারাগারে। মামলা থেকে মামলায় জড়িয়ে তৃণমূলে বিপাকে পড়ে গেল বিএনপি। আন্দোলনের অর্থ সাধারণ মানুষ হত্যা নয়, যখন তিনি বুঝতে পারলেন তখনও কী তার মধ্যে কোন অনুশোচনার সৃষ্টি হয়েছে কেউ তা জানে না। একজন মানুষ হত্যা করলে, হত্যার নির্দেশ দিলেই মৃত্যুদ- হতে পারে। কিন্তু ৯২ দিনের আন্দোলনে ১৫৭ জন অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করলেও সরকার কি ব্যবস্থা নিয়েছে? তখন দ্রুত বিচার, বিশেষ ট্রাইব্যুনাল নানা পদক্ষেপের কথা শোনা গেছে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি। হয়ত আর হবেও না! এভাবে পলিটিক্যাল কিলিং-এর নির্দেশ দাতারা ধরাছোঁয়ার বাইরের থেকে যাবে কী অনন্তকাল। তবে শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে বলতে হবে। গত পাঁচ জানুয়ারি আবারও সহিংসতার পথে পা বাড়ায়নি দলটি। বলতে হবে এক ধরনের অনুশোচনায় পুড়ছে তারা। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী অবশ্য বলেছেন নির্বাচন না করার জন্য ওই দিন অনুশোচনা দিবস পালন করা উচিত বিএনপি নেত্রীর। যদিও বিএনপি নেত্রী সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন আর আন্দোলন নয় নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার হটাবেন তিনি। ইতিহাস খাইছেন গিল্লা স্টাফ রিপোর্টার ॥ বেগম জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে একটি বিতর্ক ছুড়ে দিয়েছেন জাতির সামনে। মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ হারানো আর দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানো নিয়ে তার হৃদয়ে ঘোর সন্দেহ তৈরি হয়েছে। ৭১পরবর্তী সময়ে পাকি বন্ধুরা যে ভাষায় কথা বলছেন দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠেও একই সুরের ঝঙ্কার। জামায়াতে ইসলামীর নড়বড়ে অবস্থানের কারণে পাকিস্তান বাংলাদেশে তাদের বন্ধুদের হারাচ্ছেন। এখন অনেকেই সন্দেহ করছেন বেগম জিয়া সেই আসন অলঙ্কৃত করতে চাইছেন কি না? ভেতরে ভেতরে যেখানে তারাই সমস্ত হৃদয় মন জুড়ে, সেখানে কতক্ষণ আর তা অপ্রকাশ্য থাকে। সম্ভবত এই বক্তব্যর সব থেকে ভাল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, ৭১-এর পাকি বন্দী বেগম জিয়া কি করে শহীদের সংখ্যা জানবেন। এ ধরনের ইতিহাস বিকৃতির ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে গত বছর ২৬ মার্চ মরহুম পিতা জিয়াউর রহমানকে দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি দাবি করে বসেন খালেদা পুত্র তারেক রহমান। সে সময় সকলে বলেছিল তারেকের মাথা গেছে। লন্ডনে না হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে পাবনায় ভর্তি করা হোক। কিন্তু গত বছর মার্চে আর এ বছর ডিসেম্বরে জাতীয় দিবসে দুটি বিতর্কিত বক্তব্য বলে দেয় সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে। এটি একটি কৌশলের অংশ হতে পারে। মা ছেলের কা-ের পর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ম-লীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, “ইতিহাস মানতে হইবো। মায়ে-পুতে মিল্লা ইতিহাস খাইছেন গিল্লা। আপনে তো অনেক কিছু চেষ্টা করছেন। পেট্রোলবোমা মারছেন, অবরোধ করছেন। এখন আবার নির্বাচনেও আইছেন। পৌর নির্বাচনে ২২টা পাইছেন। চেষ্টা করেন আগামীতে ২৩টাও পাইতে পারেন। আর আপনে যে অবরোধ ডাকছিলেন, হেইডার কী হইলো?
×