ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যারা আন্দোলনে হারে তারা নির্বাচনেও হারে ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ জানুয়ারি ২০১৬

যারা আন্দোলনে হারে তারা নির্বাচনেও হারে ॥ তোফায়েল

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, যারা আন্দোলনে হেরে যায়, তারা নির্বাচনেও হারে। তাদের ঘরে বিজয় আসা কঠিন। ছাত্রলীগের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ ও পাঠচক্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, আমাদের জীবনে আমরা আন্দোলনে কোন দিন হারি নাই। যার ফলে ২১ বছর পরে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসতে পেরেছিলাম। তোফায়েল আহমেদ বলেন, বিজয়ের মাসে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, স্বাধীনতার ইতিহাসকে বিকৃত করার জন্য খালেদা জিয়া কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, শহীদের সংখ্যা নিয়ে তার মতানৈক্য আছে। আসলে উনার তো মতানৈক্য থাকবেই। কারণ উনার মতের সঙ্গে ঐক্য আছে পাকিস্তানের। আর পাকিস্তানের সঙ্গে মতের মিল থাকায় খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সংখ্যা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, উনি (খালেদা) আরও বলেছেন বঙ্গবন্ধু নাকি স্বাধীনতা চাননি? তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কথার জবাব দেয়া আমাদের জন্য সমীচীন নয়। আমাদের জন্য বেমানান হয়। বঙ্গবন্ধু যদি চাইতেন তাহলে তখনই প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু তা চাননি, তিনি চেয়েছিলেন বাংলার মানুষের মুক্তি। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘তখন (মুক্তিযুদ্ধকালীন) আপনাদের তো খবরই ছিল না। তখন আমি ছোট একজন রাজনৈতিক কর্মী, আমাকে তাও দু চারজন মানুষ চিনত। কিন্তু আপনার স্বামীকে তো কেউ চিনতই না। আমরাও তো চিনতাম না।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে নিজের দেশ-বিদেশের বিভিন্ন ঘটনার স্মৃতিচারণ করে তোফায়েল আহমেদ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী পড়ার ও তার আদর্শে জীবন গড়ার পরামর্শ দেন। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য একেএম এনামুল হক শামীম, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসাইন প্রমুখ। সংলাপ হওয়ার মতো সঙ্কট নেই : হানিফ ॥ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, দেশে এ মুহূর্তে সংলাপ হওয়ার মতো কোন সঙ্কট নেই। বৃহস্পতিবার ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের এক যৌথসভা শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংলাপ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ও সংলাপে বিশ্বাস করে। কিন্তু এ মুহূর্তে কি দেশে কোন সঙ্কট আছে? দেশে কোন সঙ্কট নেই। আমরা আগেই বলেছি, সঙ্কট আছে খালেদা জিয়ার মনে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার মনের সঙ্কট কাটানোর জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক ইসলামী ঐক্য জোটের জোট ছাড়া নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, ইসলামী ঐক্য জোট কি কারণে জোট ছেড়েছে তা আমরা বলতে পারি না। তবে সম্প্রতি বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটিয়েছে। তারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। হানিফ বলেন, কোন দল যদি অধর্মের কাজের কারণে জোট থেকে বেরিয়ে যায় তা খুবই স্বাভাবিক। এ কারণে আজকে শুধু জোট না, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই দল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আগামী স্বাধীনতা মাসেই জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করা হতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে ক্ষমা চাওয়ার দাবি করেছে ছাত্রলীগ এমনটা জানিয়ে হানিফ বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সবচেয়ে গৌরব উজ্জ্বল ভূমিকা ছিল ছাত্রলীগের। আজকে সেই স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রাজনৈতিক দলের নেত্রী যখন মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের সংখ্যা নিয়ে কটাক্ষ করেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর আঘাত করেন। এ বিষয়টি ছাত্রলীগ তখন মেনে নিতে পারেনি। ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে, যে এ জন্য খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দলের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজিত রায় নন্দী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হায়দার চৌধুরী রোটন, সাবেক সভাপতি এইচএম বদিউজ্জান সোহাগ, ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×