ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নিজামীর নিজ এলাকা পাবনায় খুশির বন্যা, মিষ্টি বিতরণ

প্রকাশিত: ০৫:১৫, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

নিজামীর নিজ এলাকা পাবনায় খুশির বন্যা, মিষ্টি বিতরণ

নিজস্ব সংবাদদাতা, পাবনা, ৬ জানুয়ারি ॥ আলবদর বাহিনীপ্রধান জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির আদেশ বহাল থাকায় পাবনা সদর, সাঁথিয়া, কাশিনাথপুর, ঈশ্বরদী শহরে আনন্দ মিছিল করেছে আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধাসহ ছাত্র-জনতা। নিজামীর নিজ এলাকা সাঁথিয়া সদরে ফাঁসির রায় বহালের সংবাদ শুনে মুক্তিযোদ্ধা, জনতা বাঁধভাঙ্গা আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাঁথিয়া আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও কৃষক লীগ, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ আনন্দ মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে অবিলম্বে নিজামীর ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগ নেতা হাসান আলী খান, রবিউল করিম হিরু, আবুল কাশেম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আঃ লতিফ, মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হোসেন, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জহুরুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা নিজামীর লাশ সাঁথিয়ার মাটিতে যাতে না ঢুকতে পারে সেজন্য সবাইকে তৎপর থাকার অহ্বান জানান। যে মামলায় নিজামীর ফাঁসির আদেশ হয় সেসব এলাকায়ও আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়। বাউশগাড়ি, ডেমড়া, ধুলাউড়ি এবং করমজা গ্রামের জনতা একে অপরকে মিষ্টিমুখ করে আনন্দ উল্লাস করে। অনেক শহীদ পরিবার আনন্দে কেঁদে ফেলে। সাঁথিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল লতিফ মামলার রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় জানান, দীর্ঘদিন পরে হলেও নিজামীর বিচার হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা এবং জনগণ খুশি। ধুলাউড়ি গ্রামের শহীদ ডাঃ আব্দুল আউয়ালের পুত্র লিয়াকত আলী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান, আমার বাবার হত্যার সঠিক বিচার পেয়েছি। দেশবাসী একজন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের রায় পেয়েছে এতে আমরা আনন্দিত। ধুলাউড়ির হত্যাকা-ে শহীদ আবুল কাশেমের পুত্র আব্দুর রউফ মন্টু জানিয়েছেন, নিজামীর ফাঁসির রায় কার্যকর হলে সেই দিন আমরা আরও খুশি হব। বাউশগাড়ি গ্রামের কয়েকজন শহীদ পরিবারের সদস্য প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছেন, নরপশু নিজামীদের ফাঁসি আরও দ্রুত কার্যকর হওয়া দরকার। ডেমড়া গ্রামের রণজিৎ কুমার পাল জানিয়েছেন, আমার ঠাকুরদাদা, বাবা, কাকাসহ পরিবারের ৭ জনকে হত্যা করেছিল পাকিস্তানী হানাদার সৈন্যরা এবং তাদের এদেশীয় দোসররা। তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে জানান, নিজামীর ফাঁসি কার্যকর দেখে মরতে পারলেও শান্তি পেতাম। সাঁথিয়া ডহরজানি গ্রামের নিজামীর মামলার বাদী পক্ষের সাক্ষী জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন, নিজামীসহ সকল যুদ্ধাপরাধীর বিচার চাই। আমরা এই ফাঁসির রায়ে খুশি। এখন চাই রায়ের দ্রুত বাস্তবায়ন। সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন (নিজামীর মামলার বাদীপক্ষের সাক্ষী) জানিয়েছেন, মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকায় আমরা মহাখুশি। এখন বাস্তবায়ন দেখতে চাই। নিজামীর মামলার সাক্ষী সাঁথিয়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার জহুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, নিজামীর মৃত্যুদ-াদেশ প্রদানের রায়ে আমরা পাবনা জেলার জনগণ খুশি।
×