ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্যচিত্র প্রদর্শনীতে এইচটি ইমাম

’৭১ থেকে ’১৫ পর্যন্ত সব হত্যাকা-ের উদ্দেশ্য একই

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

’৭১ থেকে ’১৫ পর্যন্ত সব হত্যাকা-ের উদ্দেশ্য একই

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বলেছেন, ১৯৭১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সকল হত্যাকা-ের উদ্দেশ্য ছিল একই। এই ঘাতকচক্র ও ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী চায় না দেশ এগিয়ে যাক, দেশের মানুষ ভাল থাক। দেশ অনেকে এগিয়ে গেছে এটাই বিএনপির গাত্রদাহ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশই যেন না থাকতে পারে সেজন্য বিএনপি-জামায়াত জোট ষড়যন্ত্র করছে। বুধবার জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালায় ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে বিএনপি-জামায়াতের দেশজুড়ে বর্বরোচিত তা-ব, অগ্নিসন্ত্রাস ও পুড়িয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যার তথ্য চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। চিত্র প্রদর্শনীতে ২০১৩ সাল থেকে ২০১৫ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত জোটের বিভিন্ন নাশকতা-সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ওপর ভিডিও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-পরিষদ আয়োজিত এ প্রদর্শনী আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত জনগণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে বুধবার তাঁর সকল কর্মসূচী বাতিল করা হয়েছে বলে আয়োজকরা জানান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে এইচ টি ইমাম প্রশ্ন রেখে বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন না মানলে স্থানীয় নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিল কেন? বিএনপি গণতন্ত্র হত্যা দিবস বললেও ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে। গণতান্ত্রিকভাবেই দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারির পর বিএনপি-জামায়াত দেশজুড়ে পৈশাচিক নির্যাতন শুরু করে। যার বলি হয়েছে নিরীহ জনসাধারণ। তাদের কাছে দেশ নয়, ক্ষমতাই আসল। যার জন্য তারা নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারতেও দ্বিধা করে না। তিনি বলেন, এ আক্রমণ দেশের বিরুদ্ধে, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন শেষ হয়ে গেল। নির্বাচন নিয়ে তাদের আপত্তি ছিল। অনেক দেশই আপত্তি করেছে। তারা বলেছেন নির্বাচন সঠিক হয়নি। যাই হোক তারপরও শতকরা ৪০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছিল। নির্বাচনটি দেশের মানুষ মেনে নিয়েছিল। মেনে নেয়ার পরেই পরবর্তীতে যে সমস্ত স্থানীয় নির্বাচন হয়েছে প্রত্যেকটিতে বিএনপি অংশ নিয়েছে। তাদের বিপুলসংখ্যক প্রার্থী বিজয়ীও হয়েছে। তিনি বলেন, আমি নিজেও ভেবে পাই না। এমন কি সাধারণ মানুষ থেকে সকলের কাছেও এটা বড় প্রশ্ন? তারপরও কেন ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি পৈশাচিক ও বর্বরোচিত নৃত্যে নেমে পড়ল? এ রকম নির্মম অত্যাচার বিএনপি সাধারণ মানুষের ওপরে করতে পারে না। কাজেই আমাদের মেনেই নিতে হবে, তাদের আচরণ হচ্ছে জনগণের বিরুদ্ধে। তাদের আচরণ হচ্ছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে মন্তব্য করে এইচ টি ইমাম বলেন, বিএনপির আক্রোশ বাংলার জনগণ কেন ভাল থাকবে? কেন শিক্ষায় উন্নীত হবে? কেন চিকিৎসায় উন্নত হবে? কেন ভাল পোশাক পরবে? বাংলাদেশ থেকে কেন দারিদ্র্যবিমোচন হবেÑ এগুলো হচ্ছে বিএনপির গাত্রদাহ। তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাত যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন তারা দেশবিরোধী কর্মকা-ে ব্যস্ত। বিশ্বের মানুষ এ সরকারের উন্নতি স্বীকার করলেও বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠী করে না। বিএনপি চায় যেভাবে হোক দেশটাকে ধ্বংস করতে হবে। ফলে কী করতে হবে? ১৯৭১ সালে তারা যেটি ঘটিয়েছিল জনগণের ওপরে, ঠিক একইভাবে তারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে ২০১৫ সালে। মতিউর রহমান নিজামীর রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, আজকে (বুধবার) আদালতের রায় হয়েছে। এ রায়ে প্রমাণ হয়েছে এরা সব একসূত্রে গাঁথা। নিজামীর যে ফাঁসির রায় বহাল সেটি থেকেও প্রমাণ করে তার সাগরেদ এ কাজটা করছে আগাগোড়া। এরা বাংলাদেশের শত্রু, এরা জনগণের শত্রু। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যাতে না থাকতে পারে তার জন্য যত চক্রান্ত। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বলেন, খালেদা জিয়া আমেরিকার একটি পত্রিকায় এক নিবন্ধে বাংলাদেশকে বাণিজ্যিক সুবিধা বন্ধের জন্য বলেছেন। আসলে তাঁর কাছে ক্ষমতাই আসল। দেশের স্বার্থের মূল্য নেই তাঁর কাছে।
×