ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চলুন মানুষ হই

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৭ জানুয়ারি ২০১৬

চলুন মানুষ হই

রতন চক্রবর্তী আগে মায়ের হাতে রান্না করা টমেটো দিয়ে মসুরের ডালের যে স্বাদ ছিল, তা এখন কেন যে আর পাই না! ঠিক তেমনি নতুন দিনের স্বাদও যদি বদলে যায় তাহলে সেটা হবে মর্মপীড়ার কারণ। মানুষের সুপ্রবৃত্তিগুলো অনেকটাই নির্বাসনে গেছে। জায়গা দখল করে নিচ্ছে কুপ্রবৃত্তি। একটা মস্তিষ্কের দুটো অংশ, ‘সু’ আর ‘কু’ মস্তিষ্কের সমস্ত জায়গা ‘কু’-য়ের দখলে যাবে- এটা আমরা ভাবতেই পারি না। লজ্জার বিষয়- অনেক শিক্ষক এখন ছাত্রীর মেধার চেয়ে ভিন্ন দিকে নজর দেন বেশি। তাই তারা এখন স্বর্গ থেকে বিতাড়িত হয়ে নরকগামী। আমি চাই নতুন বছরের নতুন দিনে তাদের ভেতর শুভবুদ্ধির উদয় হোক। আমাদের নতুন প্রজন্মের ভেতর ধৈর্য জিনিসটা কমে গেছে। ছাত্ররা এখন অধ্যবসায়ের মতো গুণ অর্জনের চেয়ে ‘শর্টকাট’ রাস্তার অনুসন্ধান করছে কৃতকার্য হওয়ার জন্য। এতে তারা সম্মানিত শিক্ষককেও পেটাতে পিছপা হচ্ছে না। নতুন বছরে তাদের মনেও শুভবুদ্ধির উদয় হোক, এই কামনা করি। মনে বড় আশা জাগে হয়ত এক সকালে দেখব এই দেশটা ইতিবাচকভাবে বদলে গেছে। আমার মা-বোন, স্ত্রী-সন্তানরা নিরাপদে রাস্তায় চলছে। কেউ তাদের মায়ের বয়সী নারীকে চড়থাপ্পড় মেরে গলার হার ছিনিয়ে নিচ্ছে না। যেটা আমার নিজের মায়ের সঙ্গেই হয়েছে। এমন সমাজ চাই যেখানে মুক্তিপণের টাকার কারণে কোন নিষ্পাপ শিশু সুন্দর এই পৃথিবী দেখার আগেই খুন হয়ে যাচ্ছে না। যেখানে পিতৃস্থানীয় কেউ তার কন্যাসম মেয়েকে ধর্ষণ করে হত্যা করছে না। এই যে আমরা আমাদের নিজেদের জন্যই ভীতু, তা দূর হবে কবে? আজ আমরা ঘরে ভয় পাই, রাস্তায় ভয় পাই, অফিসে, বাজারে স্কুল-কলেজে সব জায়গায় ভয় পাই। সন্তান বয়সী কেউ সিগারেট টানছে, দেখেও কিছু বলতে পারছি না। পাছে ভয়, যদি সম্মানহানি ঘটে আমার! রাস্তায় চোখের সামনে একজন লাঞ্ছিত হচ্ছে। দেখেও এগিয়ে যাই না। পাছে ভয়, যদি আমাকেও লাঞ্ছিত করে! আমার মেয়েকে বখাটেরা স্কুলের পথে টিজ করে। প্রতিবাদ করি না। পাছে ভয় যদি আমাকে অপমানিত করে কিংবা আঘাত করে! নতুন বছরের নতুন দিন যেন চিরদিনের জন্য ভয়শূন্য কাল হয়, এই আমার প্রত্যাশা। নরসিংদী থেকে
×