ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট

নিরাপত্তা অজুহাতে অস্ট্রেলিয়ার নাম প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৫:৩৫, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

নিরাপত্তা অজুহাতে অস্ট্রেলিয়ার নাম প্রত্যাহার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গত বছর অক্টোবরে বাংলাদেশ সফর বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল। এর মূল কারণ হিসেবে তারা দেখিয়েছিল নিরাপত্তার শঙ্কা। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) এমন অজুহাত ছিল বাংলাদেশের জন্য বিনা মেঘে বজ্রপাতের মতো। কারণ সে সময়টাতে সব ধরনের রাজনৈতিক অস্থিরতা, জঙ্গী তৎপরতা বাংলাদেশ সরকার দমিয়ে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছিল। পরের মাসেই অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ফুটবল দল আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলে গেছে। আগামী ২৭ জানুয়ারি শুরু হবে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট। এবার সেখানেও খেলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সিএ। দল পাঠাবে না তারা। সে কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) এ আসরে সুযোগ করে দিয়েছে আয়ারল্যান্ডের অনুর্ধ ১৯ দলকে। অস্ট্রেলিয়ার এ সিদ্ধান্তকে হতাশাজনক আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন দাবি করেছেন এরপরও সফলভাবেই যুব বিশ্বকাপ আয়োজন করতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। আগামী ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে শুরু হবে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ১৬ দেশের অংশগ্রহণে দেশের ৮ ভেন্যুতে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আইসিসি এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দল কিছুদিন আগে ভেন্যু পরিদর্শনসহ নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছে। গত অক্টোবের অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দল বাংলাদেশ সফর বাতিল করে নিরাপত্তার শঙ্কা জানিয়ে। কিন্তু তারপর বাংলাদেশ সফর করেছে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় ফুটবল দল, জিম্বাবুইয়ে ক্রিকেট দল এবং ফুটবলের বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ইভেন্টও নির্বিঘেœ শেষ করেছে বাংলাদেশ। এমনকি ডিসেম্বরে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) টি২০ আসরে বিদেশী ক্রিকেটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। এই পর্যায়ে যুব বিশ্বকাপ খেলতে না চাওয়ায় দারুণ হতাশ হয়েছে বিসিবি। এ বিষয়ে সিইও নিজামউদ্দিন বলেন, ‘অবশ্যই এটা খুব হতাশাজনক। একটা অংশগ্রহণকারী দেশ আইসিসির ইভেন্টে অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে জানিয়েছে। এখনও আমরা আশাবাদী যে, যে ইভেন্টটা নিয়ে আমরা এগোচ্ছি সফলভাবে শেষ করতে পারব। অংশগ্রহণকারী দেশ যারা থাকে তাদের কোন কথা থাকলে আইসিসিতে যোগাযোগ করে। এটাই হচ্ছে নিয়ম। এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে থেকে এ টুর্নামেন্টের বিষয়ে সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের দিক থেকে যতটুকু করার করেছি।’ তবে সিএ যুব বিশ্বকাপ না খেললেও দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেটীয় সম্পর্কে কোন প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করেছেন তিনি। নিজামউদ্দিন বলেন, ‘এটা খুব স্পর্শকাতর বিষয়। সম্পর্কের বিষয়। এটা একটা পলিসিগত সিদ্ধান্ত। এ বিষয়ে এই মুহূর্তে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা মনে করি যে, প্রত্যেকটা দেশের সঙ্গে যে সম্পর্ক আছে সেটা অক্ষুণœ থাকবে।’ আর কোন দলই নিরাপত্তা শঙ্কা নিয়ে কোন কিছু জানায়নি বিসিবিকে। সিএ প্রধান নির্বাহী জেমস সাদারল্যান্ড এ বিষয়ে বলেন, ‘আমরা কিছুদিন ধরেই আইসিসির নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছি এবং বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকদের জন্য বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি আছে। আর সেজন্যই আমরা টেস্ট খেলতে যাইনি। এমনকি বাংলাদেশ থেকে এখন সব অস্ট্রেলিয়ান ডিপ্লোম্যাটদের দেশে ফিরে যাওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে সরকার।’ সিএ’র এমন সিদ্ধান্তে দারুণ হতাশা জানিয়েছে আইসিসিও। এ বিষয়ে আইসিসির সিইও ডেভিড রিচার্ডসন বলেন, ‘আইসিসি নিরাপত্তার সব ধরনের দায়িত্ব নিয়েছে। আইসিসির ইভেন্টগুলোতে এটা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়। এ পর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্ত খুবই হতাশাজনক।’ এবার বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আছে ভারত, নেপাল ও নিউজিল্যান্ড। অসিদের পরিবর্তে এখন খেলবে আয়ারল্যান্ড। কুয়ালালামপুরে বাছাই পর্বে আইরিশ যুবারা রানার্সআপ হয়েছিল।
×