ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ৩৬ রানে হার শ্রীলঙ্কার

ওয়ানডে সিরিজও নিউজিল্যান্ডের

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

ওয়ানডে সিরিজও নিউজিল্যান্ডের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিউজিল্যান্ড সফরে দুই টেস্টের সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হওয়ার পর এবার পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডেতেও হারল শ্রীলঙ্কা। পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে ৩৬ রানের জয়ে পঞ্চাশ ওভারের সিরিজটা ৩-১এ জিতে নিল স্বাগতিক কিউইরা। প্রথম দুই ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করে হারতে হয়েছিল লঙ্কানদের, তৃতীয় ম্যাচে সফরের একমাত্র জয়টা আসে রান তাড়া করে। সংস্কার মেনেই হয়ত এদিন টস জিতে ফিল্ডিং নেন অতিথি সেনাপতি এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস; তাতে অবশ্য ভাগ্য বদলায়নি! মার্টিন গাপটিলের দারুণ এক সেঞ্চুরির ওপর ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ২৯৪ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর গড়ে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৫ উইকেট নিয়ে ‘নায়ক’ বনে যাওয়া ম্যাট হেনরির পেস-তোপে ৪৭.১ ওভারে ২৫৮ রানে অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা। টানা দুই জয়ে প্রথমেই সিরিজে এগিয়ে যায় কিউইরা, তৃতীয়টি জিতে ২-১ ব্যবধান কমায় লঙ্কানরা। আর বৃষ্টিতে ভেস্তে যায় চতুর্থ ওয়ানডে। সিরিজ বাঁচাতে বে ওভালে জিততেই হতো ম্যাথুসদের, সেখানে হার মানল অতিথিরা। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুই ম্যাচের টি২০তে যদি কিছু করতে পারে, নইলে খালি হাতেই বাড়ি ফিরতে হবে লঙ্কানদের। অথচ নির্ধারক হয়ে ওঠা ম্যাচটিতে জিততে পারত শ্রীলঙ্কাও। ২৯৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শেষ ৪০ বলে তাদের প্রয়োজন ছিল ৫৮ রান, হাতে চার উইকেট, তার চেয়েও বড় ব্যাপার তখনও ৯০ রানে অপরাজিত অধিনায়ক ম্যাথুস। কিন্তু মাত্র ১০ বলের এক ঝড়ে দ্বীপদেশ লঙ্কান ব্যাটিং ল-ভ- করে দেন হেনরি। ৪৪তম ওভারে চামারা কাপুগেদারাকে (১০) ফিরিয়ে দেন এই নিউজিল্যান্ড পেসার। সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা দেন পরের ওভারেই, হেনরি নিকোলসের হাতে ক্যাচ বানিয়ে সাজঘরে ফেরান সেঞ্চুরি থেকে ৫ রান দূরে থাকা ম্যাথুসকে (৯৫)। লঙ্কানদের সব ভরসা কার্যত সেখানেই শেষ। নিজের দশম ওভারের শেষ বলে দুশমান্ত চামিরাকে (০) পরিষ্কার বোল্ড আউট করে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো ৫ উইকেট তুলে নেন হেনরি। এ নিয়ে ২০তম ওয়ানডের ১৮ ইনিংসে ৬ বার চার বা ততোধিক উইকেট নেয়ার দারুণ কৃতিত্ব দেখালেন ২৪ বছরের ডানহাতি মিডিয়াম পেসার। রঙিন পোশাকে নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল হাতে এমন দারুণ শুরুর নজির আছে কেবল মিচেল ম্যাকক্লেনঘানের, তিনি ৬ বার চার উইকেট নিয়েছিলেন ১৯ ইনিংসে। লঙ্কানদের স্কোর কাছাকাছি নিয়ে যেতে দিনেশ চান্দিমালের হাফ সেঞ্চুরির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ৬৫ বলে ৫০ রান করে আউট হন তিনি। এ ছাড়া মিলিন্দা শ্রীবর্ধনের ৩৯, থিসিরা পেরেরার ১৫ উল্লেখ্য। শেষটা যদি হয় হেনরির তবে ম্যাচের শুরুটা অবশ্যই গাপটিলের। ১০৯ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় ১০২ রানের ক্ল্যাসিক্যাল ইনিংস উপহার দেন কিউই ওপেনার। এটি তার ক্যারিয়ারের দশম ওয়ানডে সেঞ্চুরি, যা নিউজিল্যান্ড ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তৃতীয় সর্বাধিক। ব্ল্যাক-ক্যাপসদের হয়ে গাপটিলের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে কেবল নাথান এ্যাস্টল (১৬) ও রস টেইলরের (১৫)। ২০১৫ সালে ওয়ানডেতে দেশটির হয়ে সবচেয়ে বেশি রান ছিল তারই, নতুন বছরের শুরুতেও সেই ধারা ধরে রাখলেন গাপটিল। এই সিরিজে ১৩৯.৬৬ স্ট্রাইক রেটে তার মোট রান ৩৩১- কোন দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজে তিন শ’র ওপরে রান করেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে যা সর্বোচ্চ স্ট্রাইক রেটের নতুন রেকর্ড। গাপটিলের সেঞ্চুরির সঙ্গে কেন উইলিামসনের ৭২ বলে ৬১ এবং রস টেইলরের ৬৭ বলে ৬১ রানের চমৎকার দুটি হাফ সেঞ্চুরি নিউজিল্যান্ডকে তিন শ’র কাছাকাছি স্কোর এনে দেয়। এমন স্কোর কিউইদের জন্য নিরাপদই বলা যায়, অন্তত তাদের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানের বিচারে। ২৭০-এর ওপরে রান করা শেষ ১৩ ওয়ানডের ১২টিতেই জিতেছে ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম-কেন উইলিয়ামসনরা। হেরেছে কেবল বিশ্বকাপের ফাইনালে! টেস্টের পর ওয়ানডে ভরাডুবি, ম্যাথুস পারলেন না, চান্দিমাল কি পারবেন? লাসিথ মালিঙ্গার ইনজুরিতে তার নেতৃত্বেই দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলবে লঙ্কানরা।
×