ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল

বাফুফের অনুরোধে মামুনুলই অধিনায়ক

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

বাফুফের অনুরোধে মামুনুলই অধিনায়ক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের কেরলে অনুষ্ঠিত সাফ সুজুকি কাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। নিদারুণ এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে অধিনায়কত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন দলের নির্ভরযোগ্য এ্যাটাকিং মিডফিল্ডার মামুনুল ইসলাম। পরে গ্রুপের শেষ ম্যাচটি (ভুটানের বিরুদ্ধে) খেলে অধিনায়কত্ব ছাড়েন। কিন্তু তাতেও অধিনায়কত্ব থেকে অব্যাহতি পাচ্ছেন না তিনি। কেননা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) অনুরোধে আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে অধিনায়কের দায়িত্ব পালনে রাজি হতে হয়েছে মামুনুলকে। আসলে সাফ ফুটবলের পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ শুরুর সময়টা খুবই কম ছিল। তাই এই অল্প সময়ে নতুন অধিনায়ক ও নতুন কোচ ঠিক করলে সেটা শুভ হতো না। বাফুফে তাই সে পথে যায়নি। তারা বেছে নিয়েছে পুরনোদেরই। আর দেশের স্বার্থে সেটা মেনেও নিয়েছেন মামুনুল এবং মারুফুল। এ প্রসঙ্গে জাতীয় দলের প্রধান কোচ মারুফুল হক বলেন, ‘সোমবার রাতেই মামুনুলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সে আসন্ন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দলকে নেতৃত্ব দিতে রাজি হয়েছে।’ বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘মামুনুল আসলে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগের কোন পত্র বাফুফেকে দেননি। তবে তিনি যেহেতু সংবাদ মাধ্যমে নিজের পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন তাই সংবাদ মাধ্যমেই তার দায়িত্ব নেয়ার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।’ পথ যতই হোক বন্ধুর ও অমসৃণ, লক্ষ্য যতই হোক কঠিনÑ সেটা হাসিল করার জন্য যদি না থাকে প্রয়োজনীয় রসদ, নির্দিষ্ট করে বললে সুদৃঢ় মনোবল, তাহলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবার সম্ভাবনা-আশঙ্কাই বেশি। আর তেমনটাই হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের বেলায়। সাফ ফুটবলে ব্যর্থতার পর ব্যর্থতার দায়ভার নিয়ে এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে দলের প্রধান কোচ মারুফুল হকও পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে দেশে ফিরলে বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনার পর বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ পর্যন্ত আবারও কোচের দায়িত্ব পালন করতে রাজি হন মারুফুল। মারুফুলের মতো একই পথে হাঁটলেন মামুনুলও। ভাল ফুটবলার হবার তার স্বপ্ন ছিল শৈশব থেকেই। বিকেএসপির সাবেক শিক্ষার্থী (হতে চেয়েছিলেন এ্যাথলেট) পরে বনে যান দেশসেরা মিডফিল্ডার। ২০০০ সালে বিকেএসপিতে ভর্তি হন মামুনুল। ২০০৩ সালে অনুর্ধ-১৭, ২০০৫ সালে অনুর্ধ-১৯ ও ২০০৬ সালে অনুর্ধ-২৩ জাতীয় দলের হয়ে অংশগ্রহণ করেন বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়। জাতীয় দলে অভিষেক ২০০৭ সালে। পেশাদার লীগে প্রথম দল ব্রাদার্স ইউনিয়ন। মামুনুল ২০১৪ আইএফএ শিল্ডে খেলে ভারতীয় ফ্যানদের মুগ্ধ করেন, ফলে অনেক ভারতীয় ক্লাব তাকে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এর কিছুদিন পরেই কলকাতার ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল ক্লাব এ্যাথলেটিকো ডি কলকাতায় খেলার জন্য সেখানে উড়ে যান। যদিও কোন ম্যাচেই খেলানো হয়নি তাকে। পেশাদার লীগে তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন, শেখ রাসেল ও শেখ জামালের হয়ে খেলেছেন। ডিসেম্বরে তিনি পান ‘বাংলাদেশ ক্রীড়ালেখক সমিতির বর্ষসেরা ফুটবলার’-এর পুরস্কার। সাফে ভারত যাবার আগে দেশবাসীকে একযুগ পর সাফের ট্রফি এনে দেবার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছিলেন। সেই অঙ্গীকার হয়ে গেছে ছারখার। উজ্জ্বল ক্যারিয়ারে মামুনুলের এই অধিনায়কত্ব ছাড়ার ঘটনাটি নিশ্চয়ই এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে তার জন্য। এখন দেখার বিষয় বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গত আসরে মামুনুলের নেতৃত্বেই রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ দল। এবারও তার নেতৃত্বে খেলবে দল। মামুনুলরা কি পারবেন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে দলকে শিরোপা এনে দিয়ে সাফের কলঙ্ক মোচন করতে?
×