ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

জুনের মধ্যে সব বেইজ স্টেশনকে থ্রিজি করবে গ্রামীণফোন

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

জুনের মধ্যে সব বেইজ স্টেশনকে থ্রিজি করবে গ্রামীণফোন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আগামী জুনের মধ্যে বিদ্যমান সব বেইজ স্টেশনে থ্রিজি প্রযুক্তি স্থাপন করবে গ্রামীণফোন। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলন করে টেলিনর গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিগভে ব্রেক্কের উপস্থিতিতে গ্রামীণফোনের সিইও রাজিব শেঠী এ ঘোষণা দেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশজুড়ে তাদের ১০ হাজার বেইজ স্টেশনের সবগুলোকে থ্রিজিতে রূপান্তর করা হবে। ২০১৩ সালের শেষের দিকে থ্রিজি সেবা চালু করার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৫৮৩১টি বেইজ স্টেশনকে থ্রিজিতে রূপান্তর করেছে প্রতিষ্ঠানটি। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের ওপর জোর দিয়ে গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, ২০১৫ সালে ৩৪০১টি স্টেশন থ্রিজি সেবাদানের উপযোগী করে তোলা হয়েছে। ফলে বছর শেষে দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের ৫ হাজার ৮৩১টি সাইটের মাধ্যমে থ্রিজি সেবা প্রদানে কাজ করছে। নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে ২০১৫ সালে আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছি। এই ধারা বজায় রাখাই আমাদের উদ্দেশ্য। এ বছরের প্রথম প্রান্তিকে আমরা আরও ১৭শ’ থ্রিজি বেইজ স্টেশন স্থাপন করব। এ সময়ের মধ্যে আমাদের গ্রাহকদের ৯০ শতাংশ থ্রিজি সেবার আওতাধীন হবেন। ১০ হাজার থ্রিজি বেইজ স্টেশন দেশের মোবাইল শিল্পে স্থাপিত মোট বেইজ স্টেশনের শতকরা ৬০ শতাংশ। বাংলাদেশে থ্রিজি সেবা দেয়া শুরু করার পরপরই গ্রামীণফোন, টেলিনর গ্রুপের ডিজিটাল আকাক্সক্ষা ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ এর একাত্মতার ঘোষণা দেয়। তখন থেকেই গ্রামীণফোন ২০১৯ সালের মধ্যে ৫ কোটি ইন্টারনেট গ্রাহক অর্জনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে গ্রামীণফোনের দেড় কোটিরও বেশি ইন্টারনেট গ্রাহক রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে, টেলিনর গ্রুপের সিইও সিগভে ব্রেক্কে বলেন, গ্রামীণফোন ভয়েস কমিউনিকেশনের পাশাপাশি ডিজিটাল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ রূপান্তরের অংশ হিসাবে গ্রামীণফোন শুধু নেটওয়ার্ক ও ডাটা সেবা খাতেই উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেনি। প্রতিষ্ঠানটি টেলিনরের সহায়তায় শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন ডিজিটাল কন্টেন্ট ও সমৃদ্ধ ই-সেবা চালু করেছে। যেসব সেবা ইতোমধ্যে খাতগুলোর কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে ও গ্রাহকদের আস্থা লাভ করেছে। দেশজুড়ে সমভাবে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কথা উল্লেখ করে সম্প্রতি দহগ্রাম ও গড়াতির মতো সাবেক ছিটমহল এবং অন্যান্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে থ্রিজি সেবা দেয়ার কথা বলেন শেঠী। তিনি দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও থ্রিজি সেবা বিস্তারকে প্রতিষ্ঠানটির ‘সবার জন্য ইন্টারনেট’ প্রদানের উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ বলে উল্লেখ করেন। গ্রামীণফোনের সিইও বলেন, শুধু গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানোই গ্রামীণফোনের লক্ষ্য ছিল না, গ্রামীণফোনের উন্নত নেটওয়ার্কে গ্রাহকদের সেরা অভিজ্ঞতা দেয়াই ছিল আমাদের লক্ষ্য। শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য ছিল গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কে গ্রাহকদের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করা। এজন্য আমরা শুরুতেই থ্রিজির জন্য ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনতে উল্লেখযোগ্যভাবে বিনিয়োগ করেছি। এই প্রাথমিক বিনিয়োগ আমাদের এইচডি ভয়েস ও ডিজিটাল ক্ল্যারিটি এবং দ্বিগুণ গতির এইচএসপিএ কথা বলা ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের চমৎকার অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করেছে এবং আমাদের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করেছে। গ্রামীণফোন দ্রুত দেশজুড়ে থ্রিজি বিস্তারের পরিকল্পনা গ্রহণ করে মাত্র ৬ মাসে দেশের ৬৪ জেলা শহরকে থ্রিজি সেবার আওতায় নিয়ে আসা হয়, যা লাইসেন্স চুক্তির শর্ত অনুযায়ী ৩৬ মাসে হবার কথা ছিল। এছাড়াও দেশের ৪৮১টি উপজেলায় গ্রামীণফোনের থ্রিজি নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ ঘটেছে। নতুন এলাকায় থ্রিজি সেবাদান কিংবা ২জি সাইট থ্রিজিতে রূপান্তরের মধ্যেই গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ বিস্তৃত ছিল না, বিদ্যমান ২জি সাইট উন্নতিকরণ ও সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ২জি সেবা বিস্তৃতিতেও কাজ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ বছর গ্রামীণফোন বিনিয়োগের পরিমাণ এখনও জনসমক্ষে প্রকাশের জন্য প্রস্তুতি শেষ করেনি। তবে গ্রামীণফোন থ্রিজি সেবায় ২০১৫ সালের তৃতীয় প্রান্তিক পর্যন্ত ১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এর আগে ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠানটি ১ হাজার ৫২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে। এ বছর বিনিযোগের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে।
×