ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

যুব বিশ্বকাপ খেলতেও আসছে না অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৫:২২, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

যুব বিশ্বকাপ খেলতেও আসছে না অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নিরাপত্তার অযুহাত দেখিয়ে অক্টোবরে সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসেনি অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দল। এবার একই কারণে বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় অনুর্ধ ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলতেও আসবে না অস্ট্রেলিয়া যুবদল। মঙ্গলবার ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জেমস সাদারল্যান্ড যুব বিশ্বকাপ থেকে অস্ট্রেলিয়ার নাম প্রত্যাহার করার বিষয়টি জানিয়ে দেন। জেমস সাদারল্যান্ড বলেন, ‘আমরা সবসময়ই ক্রিকেটারদের নিরাপদ রাখতে চাই। সেই সঙ্গে দলের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তা বিধানও আমাদের কাছে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপত্তার বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেই। আমাদের তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আমাদের বয়সভিত্তিক যে প্রোগ্রাম আছে, তাতে যুব বিশ্বকাপ সামনে এগিয়ে যাওয়ার টুর্নামেন্ট। সামনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য গড়ে ওঠার টুর্নামেন্ট। কিন্তু টুর্নামেন্টটি না খেলতে পারা তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য সত্যিই হতাশাজনক।’ অস্ট্রেলিয়া না খেলার সিদ্ধান্ত নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়ারল্যান্ডকে অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপে যুক্ত করে নিয়েছে ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। যুব বিশ্বকাপ শুরু হবে ২৭ জানুয়ারি। শেষ হবে ১৪ ফেব্রুয়ারি। অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ ‘ডি’তে ছিল। যে গ্রুপে ভারত, নেপাল ও নিউজিল্যান্ড আছে। এখন অস্ট্রেলিয়ার স্থানে খেলবে আয়ারল্যান্ড। এ টুর্নামেন্টে খেলবে ১৬ দল। মোট ৪৮ ম্যাচ হবে। ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ‘বি’ গ্রুপে থাকা চীন, কানাডা, কুয়েত, ভুটান, ‘সি’ গ্রুপে থাকা ইংল্যান্ড, ফিজি, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুইয়ে ও ‘ডি’ গ্রুপে থাকা ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে ১৪ দলই বাংলাদেশে আসবে। শুধু আসবে না অস্ট্রেলিয়া। তাতে করে বিশেষ কোন ক্ষতি হবে না। তবে টুর্নামেন্টে ‘ডি’ গ্রুপের উত্তেজনা একটু কমবে। অসিদের পরিবর্তে যে আয়ারল্যান্ড যুক্ত হয়েছে। এখন আইরিশরাই আসবে বাংলাদেশে। ‘ডি’ গ্রুপে অস্ট্রেলিয়ার স্থানেই তাদের অবস্থান হবে। নিরাপত্তার বিষয়টি বিপিএল দিয়েই প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ। বিদেশী ক্রিকেটাররা অনায়াসে বিপিএল খেলে গেছে। কোন সমস্যা হয়নি। এজন্য নিরাপত্তা নিয়ে আর কোন দলই কিছু বলেনি। অথচ অস্ট্রেলিয়া আগের মতোই আছে। অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও আইসিসি। আসর শুরুর ২২ দিন আগে আইসিসিকে এটা জানিয়ে দিয়েছে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া। বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন এ বিষয়ে বলছেন, ‘অবশ্যই এটা খুব হতাশাজনক। তারা অংশগ্রহণ না করার বিষয়ে জানিয়েছে। এখনও আমরা আশাবাদী, ইভেন্টটা নিয়ে আমরা আগোচ্ছি এবং সফলভাবে শেষ করতে পারব।’ সঙ্গে দুই দেশের মধ্যকার ক্রিকেট সম্পর্ক নিয়ে যোগ করেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সার্বিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে এ মুহূর্তে কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। আমরা মনে করি যে, প্রত্যেকটা দেশের সঙ্গে যে সম্পর্ক আছে সেটা অক্ষুণœœ থাকবে।’ অস্ট্রেলিয়ার এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে আইসিসিও। তবে এটা অস্ট্রেলিয়া সরকারের সিদ্ধান্ত বলে বিষয়টির প্রতি সম্মানও দেখাচ্ছে তারা। এ বিষয়ে আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন বলেছেন, ‘আইসিসি বিষয়টা দেখছে এবং ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার অবস্থানের প্রতি সম্মানও দেখাচ্ছে। আমরা বুঝতে পারি সিদ্ধান্তটা অস্ট্রেলিয়া সরকারের পরামর্শক্রমেই হয়েছে। তবে এমন সিদ্ধান্তে অবশ্যই আমরা হতাশ।’ একইসঙ্গে বিষয়টি আইসিসি নিজেদের দায়িত্ব মনে করছে বলে জানিয়েছেন রিচার্ডসন। বিসিবির ওপর ভরসা রেখে আসর সুষ্ঠুভাবে শেষ করার কথা বলছেন তিনি, ‘অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট। এখান থেকে আন্তর্জাতিক তারকা বেরিয়ে আসে। আমরা আশাবাদী যে বিসিবির সঙ্গে মিলে আসরটি খুব ভালভাবে বাংলাদেশে আয়োজন করতে পারব।’ ভালভাবে আয়োজন করে এখন অস্ট্রেলিয়াকে দেখিয়ে দেয়ার চ্যালেঞ্জও যুক্ত হয়ে গেল।
×