ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাংকার্স বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক গবর্নর ড. আতিউর রহমান;###;ব্যাংকগুলোতে পড়ে থাকা অলস তারল্য বিনিয়োগের তাগিদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

শুধু বড় উদ্যোক্তা নয়, ছোট বা ক্ষুদ্রঋণের দিকে ঝুঁকতে হবে

প্রকাশিত: ০৪:১৮, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

শুধু বড় উদ্যোক্তা নয়, ছোট বা ক্ষুদ্রঋণের দিকে ঝুঁকতে হবে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যাংকগুলোতে পড়ে থাকা অলস তারল্য বিনিয়োগে ব্যাংকগুলোকে মাঠে নামতে তাগিদ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, শুধু বড় উদ্যোক্তাকে ঋণ প্রদানের লক্ষ্য হিসেবে না ধরে ছোট বা ক্ষুদ্রঋণের দিকে ঝুঁকতে হবে। এ জন্য ব্যাংকগুলোকে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করে এসব ঋণের চাহিদা তৈরি করতে বলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করছে, অলস টাকার চেয়ে বড় সমস্যা অলস ব্যাংকিং। ঋণের চাহিদা শুধু উদ্যোক্তাদের মধ্য থেকেই আসবে এমনটা নয়। ব্যাংকগুলোকেও চাহিদা সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য মাঠে নামতে হবে। এর ফলে ঋণের ঝুঁকি কমবে, অলস টাকা বিনিয়োগ হবে এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। তবে ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে বিনিয়োগ চাহিদা সৃষ্টির জন্য এর বাধাগুলো দূর করতে বলা হয়। অতিরিক্ত তারল্য কমানোর এটিই এখন প্রধান উপায় হিসেবে বৈঠকে তুলে ধরা। মঙ্গলবার ব্যাংকার্স বৈঠকে এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে আলোচনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গবর্নর এসকে সূর চৌধুরী ও এবিবির সভাপতি আনিস এ খান। বৈঠকটি বিকেল তিনটায় শুরু হয়ে ৫টা পর্যন্ত চলে। বৈঠকে মার্চে ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও একটি ব্যাংকিং মেলা করা, রিক্সমেনেজমেন্ট শক্তিশালী করা, ক্ল্যাসিফাইড লোনের বিপরীতে রাখা প্রভিশনিংয়ের অর্থ সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করা, মুদ্রানীতি কেমন হতে পারে ইত্যাদি বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে গবর্নর বলেন, এখন সময় এসেছে রফতানির পাশাপাশি আরেকটি ‘গ্রোথ ইঞ্জিন’ যুক্ত করার। আর সেটি হচ্ছে আমাদের অভ্যন্তরীণ চাহিদা। সামনের দিনগুলোতে এই দুই ইঞ্জিনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ চাহিদার ইঞ্জিনটিকে আরও শক্তিশালী করাকেই বেশি প্রাধান্য দিতে হবে। সেজন্য আমাদের জাতীয় সঞ্চয়ের হার আরও বাড়াতে হবে এবং সেই সঞ্চয়কে উৎপাদনশীল খাতে বেশি করে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের সময় শুধু যারা বেশি ধনবান তাদের সুযোগ করে দিলেই চলবে না, সুবিধাবঞ্চিতদের জন্যও বাড়তি বিনিয়োগের সুযোগ করে দিতে হবে। সূর চৌধুরী বলেন, হলমার্কের কেলেঙ্কারিতে ফোর্স লোনের সুদ আদায় না করতে বলা হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এছাড়া সম্মানী ভাতার বিপরীতে বাড়ি বানাতে ঋণ পাবেন মুক্তিযোদ্ধারা। সিএসআরের আওতায় স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের সাইকেল কিনতে বলা হয়েছে। বিনিয়োগের বিষয়ে এসকে সূর চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলো বড় বড় বিনিয়োগকারীর প্রতি সব সময় আগ্রহী। বিনিয়োগ খরা কাটাতে হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে ঋণ দিতে হবে। এতে বিনিয়োগ সর্বসাধারণের কাছে পৌঁছবে। আর বিনিয়োগ মন্দাও কাটবে। তিনি বলেন, এলসি চালু ও সেটেলমেন্ট ক্ষেত্রে পার্থক্য খতিয়ে দেখতে ব্যাংকারদের বলা হয়েছে। হলমার্ক ঘটনায় ব্যাংকগুলো সোনালী ব্যাংকের স্বীকৃত বিলের বিপরীতে গ্রাহকের অনুকূলে সৃষ্ট ফোর্সড লোনের সুদ আদায় করা যাবে না। তবে বৈঠকে উপস্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকাররা বিষয়টিতে আপত্তি জানিয়েছেন। অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধোর বয়স ৬০ বছরের ওপরে। ফলে ঋণ দিলে তা ফেরত পাওয়াটা অনেকটা কঠিন হবে। বৈঠকের বিষয়ে এবিবির চেয়ারম্যান ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিস এ খান বলেন, ব্যাংকের বর্তমানে বিপুল পরিমাণ তারল্য রয়েছে। এটি কিভাবে বিনিয়োগ করা যায় সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেজ হতে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যাদি যাচাই করতে চার্জ দুই টাকা থেকে কমিয়ে ৫০ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
×