ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কলাপাড়ার ২৭ মাদ্রাসা ও ৩৩ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অর্ধেক শিক্ষার্থী এখনও বই হাতে পায়নি

স্কুলে ফি আদায়ের হাতিয়ার নতুন বই

প্রকাশিত: ০৪:০০, ৬ জানুয়ারি ২০১৬

স্কুলে ফি আদায়ের হাতিয়ার নতুন বই

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ৫ জানুয়ারি ॥ মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারের বিনামূলে বিতরণের বই উৎসব ভেস্তে গেছে। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যের বই বিতরণ এখন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তি ফিসহ অন্যান্য ফি আদায়ের হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। ফলে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণœ হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষায় শিশুদের উৎসাহ যোগানোর মহতী উদ্যোগ। উপজেলার ২৭টি মাদ্রাসা এবং ৩৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব ক’টিতে একই চিত্র বিদ্যমান। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা সংশ্লিষ্ট ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে এসব প্রকাশ্যে করছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে সরকারী দলের একশ্রেণীর নেতাকর্মী সভাপতি ও সদস্য হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। অথচ সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় কমিটির সদস্যদের কোন ভূমিকা নেই। আর এসব কারণে অন্তত অর্ধেক শিক্ষার্থী এখন পর্যন্ত বই হাতে পায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব অনিয়ম আর দুর্নীতির নানা তথ্য। একেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একেক ধরনের সেশন ফি আদায় করা হচ্ছে। ৭০০ টাকা থেকে সর্বনি¤œ ৩০০ টাকা পর্যন্ত সেশন ফি নেয়া হচ্ছে শিক্ষার্থী প্রতি। লালুয়ার চান্দুপাড়ার এক অভিভাবক জানালেন, তার মেয়েকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির জন্য এসকেজেবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে গেলে ৫০০ টাকা দিতে হয়েছে। ওই টাকার পরে নতুন বই নিতে হয়েছে। মাটিকাটাসহ নানা ধরনের শ্রমজীবীর কাজ করেন এ মানুষটি। জানালেন, মেয়েকে নতুন বইসহ ভর্তির জন্য পাঁচশ’ টাকা তাকে ২৫০ টাকার সুদে কর্জ করতে হয়েছে। ভয়ে এ মানুষটি তার নাম না প্রকাশ করতে অনুরোধ জানালেন। এ ব্যাপারে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ আলম হাওলাদার জানান, এ বছর তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তিসহ সপ্তম থেকে দশম শ্রেণীতে উন্নীতের জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫৫০ টাকা সেশন ফি দেয়ার সিদ্ধান্ত কমিটির মাধ্যমে গৃহীত হয়েছে। টাকা না দিলে বই দেয়া হয় না এমন অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রায় ৮০ ভাগ বই বিতরণের কথাও জানান। লালুয়ার জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অসংখ্য শিক্ষার্থী একই অভিযোগ করেছে। ভর্তিসহ সেশন ফির টাকা না দেয়া পর্যন্ত বই পায়নি। প্রধান শিক্ষক সালাহউদ্দিনকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। এভাবে মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল মাদ্রাসা এবং স্কুলে বই বিতরণের দৃশ্য এক।
×