আবু জাফর সাবু, গাইবান্ধা ॥ জানুয়ারির শুরুতেই তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনাসহ গাইবান্ধার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সব নদ-নদীর পানি কমে সেগুলো শাখা-প্রশাখায় ভাগ হয়ে এখন শীর্ণকায় রূপ নিয়েছে। হঠাৎ পানি শূন্যতায় প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা নৌঘাটগুলোর অস্তিত্ব এখন বিপন্ন। ইতোমধ্যে অনেক নৌঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব নৌঘাট এখনও কোনরকমে টিকে রয়েছে সেগুলোরও এখন বেহাল। চ্যানেলের অভাবে নৌযান কমে গেছে অর্ধেকেরও বেশি। যে কোন সময় নৌ চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
মূলত পানি সঙ্কটের কারণে নৌ যোগাযোগ এখন হুমকির মুখে। যে সব রুটে এখনও যান্ত্রিক নৌকা চলছে জেগে ওঠা চরের কারণে ঘুরপথে চলাচল করতে হচ্ছে বলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে সময় লাগছে দ্বিগুণেরও বেশি। অপরদিকে ছোট ছোট নদী শুকিয়ে যাওয়ায় ওইসব নদীতে ইতোপূর্বে স্থাপিত সেচ যন্ত্রগুলো এখন পানি সঙ্কটের মুখে পড়েছে।
গত বছর অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনাসহ ছোট বড় সব নদীর পানি দ্রুত কমতে শুরু করে। অব্যাহত পানি হ্রাসের ফলে নদীগুলো নিজেদের অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। এ তিনটি নদীর পানি এখন সর্বনিম্ন পর্যায়ে এবং বিশাল বিশাল চর জেগে উঠেছে এখন নদীর বুকে। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্র্ণ চরাঞ্চলের বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ নদীতে নাব্য থাকার সময় স্বাভাবিকভাবে নৌকায় চলাচল করত। এখন নদী বুকে জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ চর এবং শীর্ণকায় নদীর শাখাগুলো হেঁটে গন্তব্য স্থলে তাদের পৌঁছতে হয় ইতোমধ্যে অনেক চরে ভুট্টা, বাদাম ও মরিচসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করা হয়েছে।
এদিকে নদীগুলো নাব্য হারানোর ফলে নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। অনেক রুটে যান্ত্রিক নৌকা চলাচল করতে পারছে না। ব্রহ্মপুত্রে সবচেয়ে বড় ঘাট হচ্ছে বালাসী নৌঘাট। এরপরও এই ঘাট এলাকায় নদী পার থেকে আগে ৩০টি রুটে এখান থেকে অবাধে যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল করত। এখন যার অধিকাংশই নৌরুট পানি না থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানানো হয়েছে, এ অবস্থা চলতে থাকলে নদীগুলো আরও ভরাট হয়ে যাবে এবং নাব্য সঙ্কটের সৃষ্টি হবে। এ কারণে অবিলম্বে নৌ চ্যানেলগুলো ড্রেজিং না করলে এ জেলার চরাঞ্চলের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
