ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ প্রস্তুতি শুরু বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের

মারুফুলের শিষ্যদের ঘাম ঝরানো অনুশীলন

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৫ জানুয়ারি ২০১৬

মারুফুলের শিষ্যদের ঘাম ঝরানো অনুশীলন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ঘনিয়ে আসছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের চতুর্থ আসর। আট দলের এই টুর্নামেন্টে স্বাগতিক বাংলাদেশ থেকে অংশ নিচ্ছে দুটি দল। যেখানে লক্ষ্যটাও ভিন্ন দল দুটির। এই আসরের মধ্য দিয়ে এসএ গেমসের প্রস্তুতিটা সেরে নিতে চাইলেও অনুর্ধ ২৩ দলের ফুটবলাররা চান বাহরাইন, কম্বোডিয়ার আর মালদ্বীপের মতো দলগুলোর বাধা টপকে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলতে। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে সাফ ব্যর্থতা ঘোচানোর মিশন হিসেবে দেখছে জাতীয় দল। এ লক্ষ্যে সোমবার থেকে অনুশীলন শুরু করেছে জাতীয় ফুটবল দল। খেলোয়াড়দের নিয়ে বেলা ১১টায় অনুশীলন অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এবং অনুশীলন শেষে বিকেলে যশোরের উদ্দেশে ইউএস বাংলা এয়ারযোগে ঢাকা ত্যাগ করে। কেননা বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে বাংলাদেশ জাতীয় দলের গ্রুপ পর্বের খেলা হবে যশোরে। যাওয়ার আগে জাতীয় দলের খেলোয়াড়রা এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। কোচ মারুফুল হক জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের মানসিকতা নিয়েই বেশি কাজ করবেন এ ক’দিনে। প্রত্যাশার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রাপ্তির সীমারেখা টানতে গেলে হয় তো গত বছর ফলের খাতায় জাতীয় ফুটবল দলের জন্য যোগ হয়নি কিছুই। বছর জুড়ে খেলা প্রীতি ম্যাচ থেকে শুরু করে বিশ্বকাপ বাছাইসহ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপেও বাংলাদেশের ফুটবলারদের পারফর্মেন্স ছিল ম্রিয়মাণ। পরিস্থিতি যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার মতো, তখন বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপই হতে পারে দেশের ফুটবলকে জাগিয়ে তোলার শেষ উপায়। গত বছরের শুরুতেও যখন সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে ছিল দেশের ফুটবল, সেখানে প্রাণের সঞ্চার করেছিল বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। দুর্ভাগ্যের শিকার হয়ে শেষ মিনিটের গোলে মালয়েশিয়া যুবদলের কাছে শিরোপা খোয়ালেও মামুনুল-হেমন্তরা ছিলেন স্বমহিমায় ভাস্বর। ঘুরে দাঁড়াতে এবারও একই প্লাটফর্মকে বেছে নিতে চান ফুটবলাররা। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপকে জাতীয় দল বাঁচা-মড়ার লড়াই হিসেবে নিলেও অনুর্ধ ২৩ দলের জন্য তা কেবলই এসএ গেমসের প্রস্তুতি। তবে এই টুর্নামেন্টটিকে অনেকেই দেখছেন জাতীয় দলে জায়গা করে নেয়ার সুযোগ হিসেবে। আগামী ৮ জানুয়ারি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ মিশন শুরু করবে মারুফুল হকের দল। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে যশোরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে। এর দুইদিন পর ১০ জানুয়ারি বাহরাইনের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ যুবদল। ভারতের কেরলায় হতাশায় ভরা সাফ মিশন শেষে আগেই ফিরেছেন দলের এক অংশ। শুক্রবার ফেরেন আরও ১৪ জন। বাকিদের কাতারে ছিলেন রায়হান, হেমন্ত, রনিরা; তাদের সঙ্গে ছিলেন সহকারী কোচ জুলফিকার মাহমুদ মিন্টু। সাফের ব্যর্থতা ভুলে ফুটবলারদের এবার লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে ভাল কিছু করা। এমনটাই জানিয়েছেন ৬ বছর পর বাংলাদেশকে সাফে ম্যাচ জেতানো ফরোয়ার্ড সাখাওয়াত হোসেন রনি। সাফের ব্যর্থতা ভুলে রনির ভাবনার পুরোটা জুড়ে মিশন গোল্ডকাপ। সেই সঙ্গে উড়িয়ে দিলেন দলের ভেতর কোন্দলের সম্ভাবনাও। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে গত আসরে রানার্সআপ হয়েছিল বাংলাদেশ। প্রত্যাশাটা এবারও থাকবে আকাশচুম্বী। এখন দেখার অপেক্ষা সাফ ব্যর্থতা ভুলে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে কেমন করে বেঙ্গল টাইগাররা। মামুনুল ইসলামসহ জাতীয় দলের সিংহভাগ ফুটবলারের বিপক্ষে ‘খ্যাপ’ খেলার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের একটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে মামুনুল, গোলরক্ষক সোহেল, রানা, ইয়াসিন, ইয়ামিন মুন্না, সোহেল রানা, রনি, এমিলি, হেমন্ত, ওয়ালী ফয়সালসহ প্রায় সবাই খেলেছেন। যদিও মামুনুল নিজের খেলার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। কোচ মারুফুল হকেরও কানে গেছে বিষয়টি। শুনে স্বভাবতই তিনি বজ্রাহত। দলের প্রস্তুতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজ থেকে আমার অনুশীলন শুরু হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের জন্য। কেরলে আমি যেটি দেখেছি। সমস্যাটা খেলোয়াড়দের মানসিকতায়। তাই এটি নিয়েই বেশি কাজ করব। আমার কাছে মনে হয় যে বেশি রক্ষণাত্মক খেলতে খেলতে আক্রমণাত্মক ফুটবলের যে ধারা, সেটি থেকে সরে এসেছে বাংলাদেশের ফুটবলাররা। ফিটনেস নিয়ে খুব বেশি কাজ করার প্রয়োজন নেই। বেশি প্রয়োজন মানসিকতা নিয়ে কাজ করা।’ দলে নতুনভাবে যারা ঢুকলেন, তাদের নিয়ে মারুফুলের ভাষ্য, ‘এমিলি তার পজিশনেই খেলবে। মিঠুনকে নেয়া হয়েছে মাঝমাঠ থেকে ফাইনাল পাসগুলো দেয়ার জন্য। তাকে আজকের এক সেশন দেখে মনে হয়েছে সে মোটামুটি ফিট। তবে তাকে আরও দু’-একদিন না দেখে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। আরও দু’-একদিন দেখে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ দলে আরেক নবাগত আলমগীর কবির রানা। যিনি দীর্ঘদিন মাঠের বাইরে ছিলেন। সোহেল রানাকে মাঠে যে দায়িত্বগুলো দেয়া হয় তা সে পূর্ণ করতে পারে না। তাই তার স্থানে আলমগীর কবির রানা হতে পারেন বিকল্প জানালেন কোচ। সবশেষে মারুফুল বলেন, ‘যদি একটা ইউনিট হিসেবে খেলে, তাহলেই বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে সাফল্য আসা সম্ভব।’
×