জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ভারতের মণিপুর রাজ্যে ৬.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ১১ নিহত ও শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, স্থানীয় সময় ভোর চারটা ৩৫ মিনিটে উত্তর-পূর্ব ভারত ও মিয়ানমার সীমান্তের কাছে এই ভূমিকম্পে মণিপুরের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মণিপুরের ইম্ফল থেকে ২৯ কিলোমিটার পশ্চিম উত্তর-পশ্চিম এবং ঢাকা থেকে ৩৫২ কিলোমিটার পূর্ব উত্তর-পূর্বে ভারত-মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি। শীতের ভোরে বাংলাদেশ, নেপাল, ভারতের ত্রিপুরা, পশ্চিম ঝাড়খ- ও অসম, অরুণাচল, মেঘালয়, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া দফতরের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ইম্ফল থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে মণিপুরের তামেংলঙ এর ননি গ্রাম ছিল এ ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল।
শহরটির ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলোর মধ্যে কয়েকটি হাসপাতালও রয়েছে বলে এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রচণ্ড ঝাঁকুনিতে ইম্ফলের বিভিন্ন ভবনের দেয়াল, সিঁড়ি ও ছাদ ধসে পড়েছে বলে ইম্ফলের পুলিশ ও দুর্যোগ প্রতিরোধ ইউনিট জানিয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুত ও টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো।
ভূমিকম্পে ধসে পড়া একটি নির্মাণাধীন ভবনের নিচে আটকেপড়া কয়েকজন শ্রমিককে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে এনডিটিভি।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ইম্ফলের বিখ্যাত উইমেন মার্কেটের ভবনগুলোও ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত অন্তত ৫০ জনকে ইম্ফলের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
কম্পন অনুভূত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওড়িষাতেও। তবে এসব অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতির কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পের পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অসমের মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। এক টুইটে মোদি জানান, তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ক্ষয়ক্ষতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
রাজনাথ বর্তমানে অসমে অবস্থান করছেন। অসমের রাজধানী গুয়াহাটি থেকে দুর্যোগ প্রতিরোধ ইউনিটের বেশ কয়েকটি দল ইম্ফলের পথে রওনা হয়েছে।
এদিকে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের এক টুইটে জানানো হয়, ভূমিকম্পের পর মোদি অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন।
ইন্ডিয়ান ও ইউরেশিয়ান প্লেটের ঘর্ষণের ফলে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে প্রায়ই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ভারতের ভূকম্পনবিদ পিআর ভেইড বলেছেন, বার্মা প্লেটের ওঠানামার কারণে এই ভূমিকম্প হয়েছে। ওই অঞ্চলকে বিবেচনা করা হয় বিশ্বের ষষ্ঠ ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকা হিসেবে।
২০০৫ সালে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ৭.৬ মাত্রার এক ভূমিকম্পে অন্তত ৭৫ হাজার লোক নিহত হন। গতবছর এপ্রিলে নেপালের ভূমিকম্পে মৃত্যু হয় নয় হাজার মানুষের।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: