ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পাঠানকোট বিমানঘাঁটি আক্রমণ

তিন দিনে গড়াল অভিযান, জঙ্গীদের সবাই নিহত

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ৫ জানুয়ারি ২০১৬

তিন দিনে গড়াল অভিযান, জঙ্গীদের সবাই নিহত

পাঠানকোট বিমানঘাঁটিতে আক্রমণকারী ছয় জঙ্গীর সবাই নিহত হয়েছে। এ নিয়ে মোট সাত সৈন্য নিহত ও ছয় হামলাকারী নিহত হলো। পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দূরে পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত ঘাঁটিটিতে শনিবার থেকে শুরু হয়ে রবিবার পর্যন্ত টানা ৬০ ঘণ্টা অভিযান চলে। সেনা সূত্র জানিয়েছে, সশস্ত্র অভিযান বন্ধ হয়েছে, তবে তল্লাশি অভিযান চলছে। খবর এনডিটিভি, দ্য হিন্দু ও এএফপির। এর আগে চার জঙ্গীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছিল। এদের একজনের মৃতদেহ মারাত্মকভাবে পোড়া অবস্থায় পাওয়া যায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিশেষ বাহিনীর এনএসজির একজন শীর্ষ কর্র্মকর্তা বলেছেন, ঘাঁটির সব সেনা সদস্যের পরিবার পরিজন নিরাপদ রয়েছেন এবং সকল সরঞ্জাম অক্ষত রয়েছে। বিমানঘাঁটিতে ১৫শ’ সেনা পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে। সোমবার ওই ঘাঁটিতে তল্লাশি অভিযান চলার সময় সেখান উপস্থিত এএফপির সংবাদদাতা ঘাঁটির ভেতর থেকে গোলাগুলির শব্দ শুনেছেন। সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারগুলো এ সময় ওপর দিয়ে টহল দিচ্ছিল। ভারতীয় গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ধারণা ছিল, হামলাকারীরা পাকিস্তান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে এসেছিল। কিন্তু তাদের পরিচয় এবং তারা কিভাবে ভারতে ঢুকেছিল তা সোমবার পর্যন্ত ঘটনার ৪০ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কোন জঙ্গী গ্রুপ এ পর্যন্ত দায়িত্ব স্বাীকার করেনি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এর আগে বলেছিলেন, জঙ্গীরা পাকিস্তান ভিত্তিক জাইশ-ই-মোহাম্মদ অথবা লস্কর-ই-তৈয়বা গ্রুপের সংশ্লিষ্ট হয়ে থাকতে পারে। তবে সোমবার ভারতের এক জন শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা দ্য হিন্দুকে বলেছেন, ‘জঙ্গীরা কোন গ্রুপের সে সম্পর্কে কিছু বলাটা খুব আগাম মন্তব্য হয়ে যাবে। আমরা এখনও কোন জিপিএস সেট পাইনি যেটি তাদের অবস্থান সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া সম্ভব।’ গোয়েন্দাদের প্রাথমিক ধারণার ভিত্তি ছিল, একটি কাগজ এসপি সালবিন্দর সিংহের ছিনতাই হওয়া মোটরবাইক থেকে পাওয়া যায়। হামলাকারীরা বাইকটি প্রথমে ছিনতাই করেছিল পরে সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ) জম্মু ও কাশ্মীরের সীমান্তে বসানো ভিডিও ফুটেজগুলো পরীক্ষা করে দেখেছে সম্প্রতি তেমন কোন সীমান্ত পারাপারের ঘটনা ঘটেনি। ভারত শাসিত কাশ্মীরের বাইরে দেশের অভ্যন্তরে কোন সেনা ঘাঁটিতে হামলা প্রায় বিরল ঘটনা। বহু সংখ্যক জেট ফাইটার ধারণ করার ক্ষমতা রয়েছে বিমানঘাঁটিটির। বিশ্লেষকদের ধারণা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত সপ্তাহে পাকিস্তান সফরের মাধ্যমে দেশটির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা বানচাল করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব হামলা চালান হয়ে থাকতে পারে। ২০০১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের পার্লামেন্টে হামলা চালানোর জন্য এই গ্রুপটিকে দায়ী করা হয়। গত বছর জুলাই মাসে শিখ সংখ্যাগরিষ্ঠ পাঞ্জাব প্রদেশে লস্কর-ই-তৈয়বা অতর্কিত হামলা চালিয়ে চারজন পুলিশসহ সাত ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল।
×