ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পুতিনের সই করা দলিলে এই প্রথম দেশটির নাম এলো

যুক্তরাষ্ট্র বড় হুমকি

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

যুক্তরাষ্ট্র বড় হুমকি

রাশিয়ায় নতুন নিরাপত্তা কৌশলপত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি অন্যতম হুমকি হিসেবে প্রথমবারের মতো বর্ণনা করা হয়েছে। এটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাশ্চাত্যের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের যে কতখানি অবনতি ঘটেছে, তারই আভাস। খবর এয়াহুনিউজ ও স্পুটনিক নিউজের। নিউইয়ারস ইভে ফেডারেশনের ভøাদিমির পুতিন রুশ ফেডারেশনের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রসঙ্গে শীর্ষক ঐ মূল্যায়নপত্রে সই করেন। এ দলিলটি ২০০৯ সালের এক সংস্করণের স্থলাভিষিক্ত হচ্ছে। তৎকালীন প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দিমিত্রি মেদভেফেভের অনুমোদিত আগের দলিলটিতে যুক্তরাষ্ট্র বা ন্যাটো কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। নয়া দলিলে বলা হয়, রাশিয়া বৈশ্বিক সমস্যা ও আন্তর্জাতিক সংঘাতের সমাধানে এর ভূমিকা সম্প্রসারিত করতে সমর্থ হয়েছে। এ সম্প্রসারিত ভূমিকা পাশ্চাত্যে প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। দলিলে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি নতুন নতুন হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার শক্তি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তার প্রকৃতি জটিল। জাতীয় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এক স্বাধীন নীতি অনুসরণের ফলে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্ররা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, কারণ তারা বৈশ্বিক বিষয়াদিতে তাদের প্রাধান্য বজায় রাখার চেষ্টা করছে। এর ফলে রাশিয়ার ওপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামরিক ও আন্তর্জাতিক চাপ আসতে পারে বলে দলিলে উল্লেখ করা হয়। ২০১৪-এর মার্চে রুশ বাহিনী ইউক্রেনের কাছ থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নিলে রাশিয়া ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এর আগে ইউক্রেনে গণবিক্ষোভের মুখে দেশটির মস্কোপন্থী প্রেসিডেন্ট রাশিয়ায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। তখন থেকে পাশ্চাত্যে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের সহায়তা দেয়ার দায়ে রাশিয়াকে অভিযুক্ত করে এসেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন তখন থেকে রুশ নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এসেছে। মস্কো এর জবাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য আমদানি সীমিত করে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ ইউক্রেনের সংবিধানবিরোধী অভ্যুত্থান সমর্থন করেছে বলে দলিলটিতে মন্তব্য করা হয়। এ অভ্যুত্থানের ফলে ইউক্রেনীয় সমাজে গভীর বিভাজন এবং এক সামরিক সংঘাত দেখা দেয়। নয়া কৌশলপত্রে ন্যাটোর সম্প্রসারণকে রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি অন্যতম হুমকি বলে বর্ণনা করা হয়। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এর সামরিক জৈবিক গবেষণাগারগুলোর নেটওয়ার্ক রাশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলোতে সম্প্রসারিত করেছে। তবে এতে সিরিয়ার কোন উল্লেখ নেই। ৩০ সেপ্টেম্বর রাশিয়া এর মিত্র সিরীয় প্রেসিডেন্ট। বাশার আল-আসাদের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের ওপর বিমান হামলা শুরু করে। দলিলটি ভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত কৌশলের পরিকল্পনা করার কাজের ভিত্তি হিসেবে করে। ঐ কৌশলপত্রে বলা হয়, রাশিয়া পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি। এতে বিশ্বে রুশ-মার্কিন অংশীদারির প্রধান প্রধান ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হয়, যথাÑ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির উন্নতি সাধন, পারস্পরিক আস্থা গড়ে তোলার উপায়গুলোকে শক্তিশালী করা, ব্যাপক ধ্বংসাত্মক অস্ত্রের বিস্তার রোধে যৌথ প্রচেষ্টা চালানো, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এবং আঞ্চলিক সংঘাত নিরসনে সহযোগিতা সম্প্রসারিত করা। দলিলে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট আইনগত চুক্তির ভিত্তিতে ইউরো-আটলান্টিক অঞ্চলে যৌথ নিরাপত্তার এক স্বাচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাশিয়া ইউরোপীয় দেশসমূহ, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে পারস্পরিক সুবিধা সহযোগিতা জোরদারকরণ সমর্থন করে।
×