ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চলতি অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ

বিনিয়োগ বাড়াতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ সিপিডির

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

বিনিয়োগ বাড়াতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ সিপিডির

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বিনিয়োগ বাড়াতে জ্বালানি তেলের দাম কমানোর সুপারিশ করেছে বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। সংস্থাটির মতে, জ্বালানি তেলের দাম গড়ে ১০ শতাংশ কমানো হলে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি দশমিক ৩ শতাংশ বাড়বে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম সর্বনিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। তাই আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে দেশে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা উচিত। রবিবার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ উপলক্ষে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। ওই সময় চলতি অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসের অর্থনীতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পাশাপাশি সিপিডি কেরোসিন, ডিজেল ও ফার্নেস অয়েলের দাম কমানোর সুপারিশ করেছে। এছাড়া তেলের পাশাপাশি গ্যাস ও বিদ্যুতের দামও সমন্বয় করার করার কথা বলা হয়েছে। সংস্থাটি মনে করে, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করাই দেশে এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। গত অর্থবছরে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে নতুন অর্থবছর শুরু করেছে সরকার। কিন্তু প্রবৃদ্ধির আকাক্সক্ষা পূরণে বিনিয়োগ আকর্ষণে বড় কোন উদ্যোগ বা সংস্কার করতে দেখা যায়নি। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বস্তিতে থাকলে বিনিয়োগে গতি আসতে পারে বলে মনে করে সিপিডি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে সিপিডির গবেষক ড. তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, জ্বালানি তেলের দাম ১০ শতাংশ কমানো হলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দশমিক ৩ শতাংশ বাড়বে। মূল্যস্ফীতি কমবে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ। তৈরি পোশাকের রফতানি বাড়বে দশমিক ৪ শতাংশ। ভোক্তা চাহিদা বাড়বে দশমিক ৬ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতি কমবে দশমিক ২ শতাংশ। তবে সরকারের সঞ্চয় কমবে দশমিক ৪ শতাংশ। গত ৩০ বছর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি) ব্যাপক লোকসানের মধ্যে ছিল। দীর্ঘদিন লোকসানে থেকে গত বছর তারা ৫ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা লাভ করেছে। এবছর বিপিসির ১১ হাজার কোটি টাকা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। মুনাফার এ অর্থ দিয়ে ঋণ পরিশোধ করা হচ্ছে কি না, তা পরিষ্কার নয়। যদিও সিপিডির ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনায় উঠে আসে, চলতি অর্থবছরে ৪০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতির আশঙ্কা রয়েছে। এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ, আমদানি বাজারে আমদানিকৃত পণ্যের দাম কম। পর্যালোচনা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশে ২৬টি বড় প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি প্রকল্প গত অর্থবছরে (২০১৪-১৫) শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। তাই আগামী ৬ মাসের মধ্যে ৫ থেকে ৬টি প্রকল্প শেষ করার জন্য প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে হলে প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হবে বলে মনে করে সংস্থাটি। প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তৌকিকুল ইসলাম আরও বলেন, গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে তার মাত্র ১৪ শতাংশ এতদিনে সমাপ্ত হয়েছে। এভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হলে ব্যয় অনেক বেড়ে যায়। এজন্য টাস্কফোর্স গঠন করে তা দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে নজর দিতে হবে।
×