ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যয় হবে ৮০৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা

হরিপুর বিদ্যুত কেন্দ্রে সহায়তা দিচ্ছে জাপান

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

হরিপুর বিদ্যুত কেন্দ্রে সহায়তা দিচ্ছে জাপান

হামিদ-উজ-জামান মামুন ॥ বিদ্যুত কেন্দ্র তত্ত্বাবধান, সংরক্ষণ, কারিগরি বিষয় নিশ্চিত করা ও পরিচালন প্রক্রিয়ায় সহায়তা দিচ্ছে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা)। এ জন্য নিউ হরিপুর পাওয়ার প্লান্ট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে বিদ্যুত বিভাগ। এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে মোট ৮০৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ২৩৯ কোটি ৫৪ লাখ এক টাকা, জাইকার ঋণ থেকে ৫৬৫ কোটি ৬৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দুই কোটি ৩২ লাখ ১৫ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) জাপান ডেস্কের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, জাইকার সহায়তায় স্থাপিত ৪১২ মেগাওয়াটের এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়। ফলে এটির পরবর্তী কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ঋণ দেয়ার বিষয়টি জাইকা ইতোমধ্যেই নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিকল্পনা কমিশনের শিল্প ও শক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সদস্য আহমদ হোসেন খান পরিকল্পনা কমিশনের মতামত দিতে গিয়ে বলেন, প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় জাইকার সহায়তায় হরিপুরে স্থাপিত ৪১২ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টটির তত্ত্বাবধান, কারিগরি বিষয় নিশ্চিত, বিদ্যুত কেন্দ্রের পরিচালন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে ঢাকা ও পার্শ¦বর্তী অঞ্চলের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুত চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করেছে। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার বিদ্যুত চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কনস্ট্রাকশন অব হরিপুর কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটেড সাবস্টেশন নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০০৭ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন মেয়াদে তিন হাজার ৫০৭ কোটি ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে একনেকে অনুমোদন লাভ করে। মূল অনুমোদিত মেয়াদকালে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শেষ না হওয়ায় প্রকল্পের কাজ চলমান রাখার স্বার্থে বিদ্যুত বিভাগ ২০১২ সালের আট মে প্রকল্পটির মেয়াদ ’১৩ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। বর্ধিত সময়ের মধ্যেও প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় প্রকল্পটির উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রথম সংশোধনীর সময় এর মেয়াদ ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। পরবর্তীতে আবারও ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়াই প্রকল্পের মেয়াদ গত বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এরই মধ্যে ২০১৪ সালের দুই মার্চ বিদ্যুত কেন্দ্রটি ইপিসি ঠিকাদার ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি) কাছে হস্তান্তর করে। ওই বছরই কেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু করে। পরবর্তীতে বিদ্যুত সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রকল্পের মূল ডিপিপি পৃথক করে দুটি অংশে বিভক্ত করার প্রস্তাব করা হয়। ওই প্রস্তাবের ধারাবাহিকতায় কনস্ট্রাকশন অব হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটেড সাবস্টেশন নির্মাণ প্রকল্প (দ্বিতীয় সংশোধনী) শীর্ষক প্রকল্পের ডিপিপির প্রথম অংশটি দ্বিতীয় সংশোধনী হিসেবে গত বছরে ১৪ জুলাই পরিকল্পনামন্ত্রী অনুমোদন দেন। অন্যদিকে প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বিদ্যুত কেন্দ্রের ইপিসি ঠিকাদারের অসমাপ্ত কাজ ওয়ারেন্টি পিরিয়ডে ইপিসির কার্যক্রম তদারকি করা, বিদ্যুত কেন্দ্রের পরিচালন ও সংরক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সহায়তা করাসহ চূড়ান্ত সমাপ্তি সনদ ইস্যুসহ কার্যক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য মূল ডিপিপির দ্বিতীয় অংশ হিসেবে নিউ হরিপুর পাওয়ার প্লান্ট ডেভেলপমেন্ট শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হচ্ছে পরিকল্পনা কমিশনে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে, আধুনিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি ক্রয়, হাইড্রোজেন কমপ্রেসার এবং ফিলিং সিস্টেম ক্রয়, থার্ড পার্টি ইন্সপেক্টর (টিপিআই) স্টেজ-এক, স্টেজ-দুই এবং স্টেজ তিন। এছাড়া আনুষঙ্গিক কার্যক্রম করা হবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্র জানায়, বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পাওয়ার পর গত বছরের ১৯ অক্টোবর পরিকল্পনা কমিশনে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিট্রি (পিইসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশ দেয়া হয়েছিল। সেসব সুপারিশ প্রতিপালন করায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) আগামী সভায় প্রস্তাবিত এ প্রকল্পটি অনুমোদনের সুপারিশ করা হয়। বর্তমানে যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। অনুমোদন পেলে আগামী দুই বছরে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শেষ করবে ইলেকট্রিসিটি জেনারেশন কোম্পানি অব বাংলাদেশের (ইজিসিবি)।
×