ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পরিবেশ নষ্টকারীদের আর ছাড় নয়- মেয়র সাঈদ খোকন ;###;আইন প্রয়োগে মেয়রের সঙ্গে আছি- বেনজীর আহমেদ

পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে জনসচেতনতা কর্মসূচী নিয়েছে র‌্যাব

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

পরিচ্ছন্ন ঢাকা গড়তে জনসচেতনতা কর্মসূচী নিয়েছে র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানী ঢাকাকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে জনসচেতনতামূলক কর্মসূচী হাতে নিয়েছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এরই অংশ হিসেবে রবিবার বেলা ১১টায় র‌্যাবের উদ্যোগে এক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচীর আয়োজন করা হয়। অপরদিকে নগরীকে পরিচ্ছন্ন রাখতে সকল অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে চলা অভিযানে কোন প্রকার ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। রবিবার রাজধানীর টিকাটুলিতে অবস্থিত র‌্যাব কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেন র‌্যাব মহাপরিচালক মোঃ বেনজীর আহমেদ। এ সময় সেখানে ডিএসসিসি মেয়রসহ র‌্যাব ও সিটি কর্পোরেশনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। ডিএসসিসির ২০১৬ সালকে পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে ঘোষণার অংশ হিসেবে ২০ সিক্সটিন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই এ পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করা হয়। সম্প্রতি সংস্থাটির মেয়র নগরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে গৃহীত কার্যক্রম বাস্তবায়নে তাদের সীমানায় থাকা ২৬টি সরকারী, আধা-সরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থাকে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের অনুরোধ করলে প্রথমেই র‌্যাব এগিয়ে আসে। অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, আমরাও চাই ঢাকা শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুক। এজন্য র‌্যাব সদস্যরা সক্রিয় থাকবে। প্রয়োজনীয় সকল প্রকার সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, আমরা ইচ্ছে করলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সব অবৈধ দখলদার ও রাস্তাঘাট পরিষ্কার করে ফেলতে পারি। এবার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সহায়তায় রাস্তার পাশে সব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে। তাছাড়া আমরা যদি প্রত্যেকে নিজ নিজ আঙিনা পরিষ্কার রাখি, তাহলে এই কর্মসূচী দ্রুত সফল হবে। অন্যথায় তা কখনও সফল হবে না। তিনি বলেন, ঢাকার বাড়ি মালিকরা কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাড়ি তৈরি করলেও সময়মতো রং করেন না। ফলে এসব বাড়ি দেখতে খুবই কুৎসিত দেখায়। আশা করি বর্তমান মেয়র এসব বাড়ি মালিকদের তাদের বাড়ি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে বিশেষ উদ্যোগ হাতে নেবেন। সৌন্দর্য রক্ষায় বাড়ি রং করতে মালিকদের বলবেন। এতেও সাড়া না দিলে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিজেরাই এসব বাড়ি রং করে দেবেন। এরপর হোল্ডিং টেক্স বিল পরিশোধের সময় বাড়ি রং করার বিল সংযুক্ত করে দেবেন। এতে করে বাড়ির মালিকরা বাধ্য হয়ে রং করবেন। তাছাড়া নিজ নিজ বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখলেই কেবল শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখা সম্ভব। র‌্যাব মহাপরিচালক বলেন, এ শহরে প্রায় দুই কোটি মানুষ বসবাস করে। ৪০ থেকে ৫০ লাখ মানুষ নিত্যদিনের প্রয়োজনে যাওয়া-আসা করে। হাজার হাজার অট্টালিকা রয়েছে। শত শত কিলোমিটার রাস্তা রয়েছে। কিন্তু এ শহরের পরিবেশ অত্যন্ত নোংরা। এই শীতে প্রতি ঘরেই শর্দি, কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত সদস্য রয়েছে। এখন শর্দি, কাশি ও জ্বর হলে সহজে যায় না। কারণ ঢাকার বাতাস বিষাক্ত। এই বিষাক্ত বাতাসের শহরকে যদি বসবাসযোগ্য রাখতে চাই তাহলে একে পরিচ্ছন্ন রাখা শুধু সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব না। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব এটি। শহরকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না রেখে পরিবেশ দূষণকারীদের প্রতি বেনজীর আহমেদ বলেন, আইন সভ্য মানুষের জন্য। যারা অসভ্য তাদের ওপর আইন প্রয়োগ করতে হবে। আইন প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে মেয়রের সঙ্গে আমরা আছি। যারা মানে না তাদের ওপর আইন প্রয়োগ করতে হবে। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা চাই। আমরা চাইলেই মুহূর্তেই এ শহরের দৃশ্য পাল্টে দিতে পারি। এ জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। অনুষ্ঠানে ডিএসসিসি মেয়র মোঃ সাঈদ খোকন বলেন, যারা রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে রাস্তা দখল করে আছেন। পরিবেশ নষ্ট করে রেখেছেন তাদের আর ছাড় দেয়া হবে না। র‌্যাবের সঙ্গে যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। ২০১৬ সালকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের জন্য পরিচ্ছন্ন বছর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ঢাকার পরিবেশ অনেক বেশি দূষিত হয়ে গেছে। এই শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা সবার দায়িত্ব। এজন্য সবাইকে কাজ করা দরকার। ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধনের লক্ষ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি এলাকায় যেসব বাড়ির রং নষ্ট হয়ে গেছে, সেবব বাড়ির রং করারও আহ্বান জানান তিনি। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, আমরা ২০১৬ সালকে পরিচ্ছন্ন বছর হিসেবে ঘোষণা করেছি। সরকারী সংস্থা হিসেবে র‌্যাবই প্রথম আমাদের এই কাজে সাড়া দিল। আশা করি সরকারের অন্যান্য সংস্থাও আমাদের এই পরিচ্ছন্নতা অভিযানে এগিয়ে আসবে, এছাড়া তিনি পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচীর বাস্তবায়নে নগরবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন। কর্মসূচী উপলক্ষে সিটি কপোরেশন ও র‌্যাবের উদ্যোগে রাজধানী মার্কেট ও এর আশপাশের এলাকায় পরিচ্ছন্নতা অভিযান চলে। টিকাটুলি ও আশপাশের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলররাও অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন রকিব উদ্দিন ভূঁইয়াসহ সিটি কর্পোরেশন ও র‌্যাব-৩ এর উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×