ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সোহরাওয়ার্দীতে ২৬ মার্চ ১৯৫ পাকি সেনার প্রতীকী বিচার

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ৪ জানুয়ারি ২০১৬

সোহরাওয়ার্দীতে ২৬ মার্চ ১৯৫ পাকি সেনার প্রতীকী  বিচার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পাকিস্তান বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে। দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানী দূতাবাসেও বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। তাই শুধু দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নয়, চিহ্নিত ১৯৫ জন পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে বিশ্বব্যাপী জনমত গড়ে তোলা হচ্ছে। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চিহ্নিত ওই যুদ্ধাপরাধীদের প্রতীকী গণবিচার সম্পন্ন হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ক্ষয়ক্ষতির জন্য জাপান যেমন ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয়েছে, ’৭১’র জন্য পাকিস্তানকেও ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা হবে। রবিবার রাজধানীর মতিঝিল শাপলা চত্বরে ’৭১’র চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী এবং ১৯৫ পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তার ‘গণবিচারের দাবিতে সমাবেশ’-এ বক্তারা এসব কথা বলেন। ১৯৫ জন পাকি যুদ্ধাপরাধীর প্রতীকী বিচারের দাবিতে গঠিত ‘আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার’ ওই সমাবেশের আয়োজন করে। এছাড়া আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে সমাবেশ শেষে শাপলা চত্বর থেকে একটি মিছিল বের করে সংগঠনটি। বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে তা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় ইতিহাস বিকৃতকারী খালেদা ও পাকিস্তান বিরোধী নানা সেøাগান দিতে থাকেন তারা। যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতেও উত্তাল ছিল মিছিলটি। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খান বলেন, পাকিস্তানকে রক্ষা করার জন্য যারা গণহত্যায় অংশ নিয়েছিল তাদের দ- কার্যকর হওয়ামাত্র পাকিস্তানের পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব উত্থাপিত হয়। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানা নেতিবাচক মন্তব্য করছে তারা। দেশের অভ্যন্তরে পাকিস্তানের দূতাবাসেও বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র চলছে। পাকিস্তান এ দেশে জঙ্গীবাদ ছড়িয়ে দিচ্ছে। ঠিক এই মুহূর্তে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি বসে থাকতে পারে না। আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার এটি কোন সংগঠন নয়, এটি একটি আন্দোলন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে চিহ্নিত ওই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পাকিস্তানকে বাধ্য করা হবে। বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ায় প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি আরও বলেন, আর একটি মানুষ যদি বিএনপির আন্দোলনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর একটি মানুষ যদি পেট্রোলবোমার আগুনে ঝলসে যায়, পাকিস্তানের খালেদাকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে দেব। ধৈর্যের সীমার বাঁধ ভেঙে গেলে আমরা বসে থাকব না। অন্দোলনের নামে দেশ বিন্দুমাত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোনক্রমেই ছাড় নয়। বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান বলেন, আমরা একটি নতুন লড়াই শুরু করেছি। সরকার এ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে, দ- কার্যকর হচ্ছে। তাই সরকার ও ট্রাইব্যুনালের সঙ্গে জড়িত সকলকে আন্তরিক অভিনন্দন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করলে শুধু দেশের যুদ্ধাপরাধীদেরই নয়, পাকিস্তানী যুদ্ধাপরাধীদেরও বিচার সম্পন্ন হবে। যারা আমাদের পতাকা যুদ্ধাপরাধীদের হাতে তুলে দিয়েছিল তাদেরও বিচার হবে। নারীনেত্রী শিরীন আখতার এমপি বলেন, বিএনপি কর্তৃক আগুন সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করেও শেখ হাসিনার পতন ঘটানোর চেষ্টা সফল হয়নি। তাই বর্তমানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্যে খালেদা জিয়া ইতিহাস বিকৃত করছে। ৩০ লাখ শহীদ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কথা বলার মতো ধৃষ্টতা দেখিয়েছে। দেশের মানুষ যেকোন মূল্যে খালেদা জিয়া ও পাকিস্তানী দালালকে উৎখাত করবে। অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের চেতনার মানুষ একত্র হয়েছি। যারা আমাদের চেতনার বিরুদ্ধাচরণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম কণ্ঠযোদ্ধা মনোরঞ্জন ঘোষাল, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাংবাদিক অঞ্জন রায়, গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক কামাল পাশা চৌধুরী, এফএম শাহীন প্রমুখ। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, শ্রমিক সংগঠন, বিভিন্ন ব্যাংকের সিবিএ নেতৃবৃন্দ সমাবেশ ও মিছিলে অংশ নেন।
×